জন্মগতভাবে আমি পিঞ্চ হিটার : মেহেদি

331

চট্টগ্রাম, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : পিঞ্চ হিটার হিসেবে খেলতে নেমে চমক দেখালেন ঢাকা প্লাটুনের স্পিনার মেহেদি হাসান। তার ২৯ বলে ৫৯ রানের সুবাদে আজ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ১৭তম ম্যাচে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা। ব্যাটিং অর্ডারে সাধারনত নিচের দিকেই নেমে থাকেন স্পিনার মেহেদি। কিন্তু আজ কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাটিং অর্ডারে প্রোমোশন পান মেহেদি। আর সেটিই কাজে লাগিয়েছেন তিনি। অবশ্য মেহেদির দাবী, ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ব্যাট হাতে আক্রমনাত্মক খেলে থাকেন তিনি। কিন্তু সুযোগ না পাওয়ায় নিজের লুকিয়ে থাকা প্রতিভা, প্রদর্শন করতে পারেন না। এবার সুযোগ পেয়ে সেটি কাজে লাগিয়েছেন বলে জানালেন মেহেদি।
কুমিল্লার বিপক্ষে ম্যাচ জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে মেহেদি বলেন, ‘বাই বর্ন আমি এভাবেই খেলি। ঘরোয়া ক্রিকেট যদি দেখেন, ফার্স্ট ক্লাস দেখেন আমি পিটাইতে পারি। কিন্তু বিপিএল একটু ভিন্ন জায়গা, সুযোগটা ওভাবে পাই না সত্যি বলতে। আপনি দেখবেন আমার ইনিংসগুলো সব সময় আমি একই জায়গায় ব্যাট করতে পারি না। কখনো দশ নম্বর বা কখনো নয় নম্বর, সেজন্য শেষের দিকে আমার জন্য কঠিন, ওই সময় ভালো বোলার থাকে, ইয়র্কার, বাউন্সার মারে। আমার জন্য কঠিন হয়ে যায়। নতুন বলের জন্য আমি ঠিক আছি। পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারি। কোচেরও সেই পরিকল্পনাই ছিল।’
কুমিল্লার আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমানকে খেলাটা কঠিনই ছিলো বলে জানান মেহেদি। তবে মুজিবকে সামলানোর জন্যই তাকে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি, ‘তাদের মুজিব ছিল। মুজিবকে খেলা একটু মুশকিল। আমি ভ্যালুলেস উইকেট (আমাকে হিসেবে ধরে নাই দল) মুজিবকে হ্যান্ডেল করার জন্য আমাকে পাঠিয়েছে। আমি অফ স্পিনার পেয়ে গেছি, সুযোগ নিয়েছি সাকসেস হয়ে গেছি।’
ক্রিজে তামিমের সাথে তার কি পরিকল্পনা ছিলো সেটিও বলেন মেহেদি, ‘সুযোগ নিতে গেছি। যদি এখান থেকে সাকসেস হই তাহলে আমার জন্য ভালো। আমি সেটাই করছিলাম। দেখেন, আমি একটা বলও আরামে খেলি নাই। এদিক-ওদিক করে খেলেছি যাতে ভালো জায়গায় বল করতে না পারে। আমি আমার স্ট্রং জোনে বল পেয়ে গেছি এবং আমি সাকসেস হয়েছি। আমি হয়ত তখন বাজে সিদ্ধান্তে (বল সিলেকশনে) আউট হয়ে গেছি। আমার ভুল ছিল। আমি আরেকটু সময় টিকতে পারলে সহজেই ম্যাচটা হ্যান্ডেল করতে পারতাম। আমি সুযোগ নিচ্ছি, তামিম ভাই স্ট্রাইক রোটেট করবে এটাই ছিল পরিকল্পনা। সবাই মারতে গেলে কঠিন আসলে। তখন পাওয়ার প্লে’তে মুজিবও বল করছিল। আমি আমার জোনে বলগুলো পেয়ে গেছি এজন্য তামিম ভাইয়ের কষ্ট করা লাগে নাই। তামিম ভাই নিজেও চেয়েছিল আস্তে-আস্তে খেলে শেষ করে আসবে। যেহেতু রান হচ্ছিল। আমাদের এক ওভারে সম্ভবত ২৮ রান হয়েছিল। ওটা অনেক ব্যবধান তৈরি করে দিয়েছে।’
ব্যাটিং অর্ডারে একটা নির্দিষ্ট জায়গা চান মেহেদি। তবে নিজের সেরাটা খেলতে পারবেন বলে ইঙ্গিতও দেন তিনি, ‘আমার একটা ডাউন পজিশন ফিক্সড থাকলে আমার জন্য বেটার হয়। কিন্তু দশ নম্বর, ৯ নম্বর হলে মানসিকভাবে একটু ডাউন থাকি। তবে এটাকে আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছি যে, এখানে সফল হতে পারলে আমার জন্য ভালো।’
ব্যাট হাতেই নয়, বল হাতেও সফল ছিলেন মেহেদি। ঢাকার দ্বিতীয় বোলার হিসেবে আক্রমনে এসে শুরুতেই কুমিল্লাকে জোড়া আঘাত দেন তিনি। সৌম্য সরকারকে ১০ ও সাব্বির রহমানকে শুন্য রানে আউট করেন তিনি। ইনিংস শেষে তার বোলিং ফিগার ঈর্ষনীয়- ৪ ওভার ৯ রান ২ উইকেট। ইকোনমি ২ দশমিক ২৫। তবে এই উইকেটে বোলিং করা বোলারদের জন্য চ্যালেঞ্জিং বলে জানান মেহেদি, ‘আমি বিপিএল খেলছি চার বছর ধরে। আমার কিছু অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু সব সময় একইরকম যাবে না এই উইকেটে। উইকেটটা বেশি ভাল। বোলারদের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং একটা জায়গা। ব্যাটসম্যানদের চ্যালেঞ্জ করে বল করতে হয়। লাকিলি আমি ওদের দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পেয়ে গেছি তাতে হয়ত সফল হয়েছি। কিন্তু ডানহাতি ব্যাটসম্যান থাকলে ভিন্ন কিছু হতে পারত।’
দলের মধ্যে ইনজুরির সমস্যা আছে বলে জানান মেহেদি, ‘আমাদের দলে একটা সমস্যা হচ্ছে, ইনজুরি সমস্যা আছেই। কেউ না কেউ ইনজুরিতে থাকছেই। আজকে আমাদের দুইজন বিদেশি ছিল দুইজনই ইনজুরিতে। সে জন্য আমাদের কম্বিনেশন তৈরি করতে একটু সমস্যাই হয়। আপনি একটা উইনিং কম্বিনেশন যখন খেলাবেন তখন একটা পরিবর্তন আসলে একটু সমস্যা তো হবেই।’