বাসস ক্রীড়া-১৭ : তরুণদের ১৫ বছরের লক্ষ্য সেট করতে হবে : মিনহাজুল

242

বাসস ক্রীড়া-১৭
ক্রিকেট-বঙ্গবন্ধু বিপিএল
তরুণদের ১৫ বছরের লক্ষ্য সেট করতে হবে : মিনহাজুল
চট্টগ্রাম, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : তরুণদের আগামী ১৫ বছরের জন্য লক্ষ্য নির্ধারন করতে বললেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের উপদেষ্টার দায়িত্বেও আছেন তিনি। আগামীকাল বিপিএলের ১৭তম ম্যাচে মুখোমুখি হবে ঢাকা প্লাটুন ও কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। ঐ ম্যাচের আগে এবারের বিপিএল নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে ধরা হয় নান্নুর কাছে। একটি প্রশ্নের উত্তরে নান্নু জানান, এবার তরুন পেসাররা ভালো করছে। তারা নজর কেড়েছে। তাই নিেেজদের ভবিষ্যত তাদেরকেই লক্ষ্য নির্ধারন করতে বললেন নান্নু।
এবারের বিপিএলে তরুণ পেসারদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলেই। মাশরাফি বিন মর্তুজা, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম প্রশংসা করেছেন তরুণ বোলারদের। তবে তাদের নিয়ে সর্তক থাকার পরামর্শও দিয়েছেন তারা। গতকাল খুলনা টাইগার্সের ম্যাচ শেষে তরুণ বোলারদের ব্যাপারে অনুরোধও করেন মুশফিকুর রহিম। তিনি বলেন, ‘বিপিএলে এখন পর্যন্ত খুব কম ম্যাচ শেষ হয়েছে। এখনও অনেক ম্যাচ আছে। তাদেরকে আরেকটু সুযোগ দেন। তাদেরকে এখনই মাথার উপর তুলে ফেলবেন না। এটা আমার অনুরোধ থাকবে। আমার মনে হয় তাদেরকে পরবর্তী দুই তিন বছর স্বাধীনভাবে খেলতে দেয়া উচিত। তাদেরকে সামনে বিশ্বকাপ আছে, না কি আছে, এগুলো বলে চাপ দিবেন না। দুই তিন বছর খেলতে দেন, আপনি এমনিই বুঝতে পারবেন কে আসছে না আসছে। এটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু টি-২০ না, টেস্ট এবং ওয়ানডেতেও। এখন তাদের স্বাধীনভাবে খেলতে দেন। এখন তাদের উঠতি বয়স, খেলাটা উপভোগ করতে দেন। তাদেরকে ব্যক্তি কেন্দ্রি বানাবেন না। তারা দলের জন্য খেলছে, দলের জন্য খেলতে দেন। তারা যেন দেশ নিয়ে চিন্তা করে সেই সুযোগ দেন। যেন পরিপূর্ণ প্যাকেজ হয়ে আসতে পারে। জাতীয় দলে এসে যেন তাঁদেরকে আবার ফিরে যেতে না হয়।’
মুশফিকের এই অনুরোধের কথা জানানো হয় নান্নুকে। এমনটি শুনে নান্নু বলেন, ‘যে কোন তরুণ খেলোয়াড়ের কাজ হচ্ছে চিস্তা-ভাবনা করা যেন পরবর্তী ১৫ বছর ভালো মানের ক্রিকেট খেলতে পারে। একদিনে একটা, দু’টো ম্যাচ দেখে কাউকে বিবেচনা করা যায় না। ১৫ বছরের একটা লক্ষ্য নির্ধারন করতে হবে তাদের। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কমপক্ষে ১০ বছরের একটা লক্ষ্য রাখতে হবে যেন দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। এ ধরনের গোল সেট করতে না পারলে একজন খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্স কখনোই একটা স্ট্যার্ন্ডাডে থাকে না। সুতরাং একটা-দুইটা ম্যাচ একটা আউটস্ট্যান্ডিং বল দেখে কখনো বিবেচনা করা যায় না। তিন ফরম্যাটের জন্য তৈরি হতে হবে। তিন জায়গায় ভালো খেলার পর বলা যাবে এই খেলোয়াড়টা কতদূর যাবে।’
আগামী মাসে পাকিস্তান সফর রয়েছে বাংলাদেশের। ঐ সফরের জন্য কি বিপিএলের পারফরমেন্স প্রাধান্য পাবে কি-না, জানতে চাওয়া হলে নান্নু বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যাপারে অনেক কিছু বিবেচনায় আনতে হয়। একটা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা এবং অন্য দেশের সঙ্গে খেলা অন্য ব্যাপার। আপনি দেখবেন যে ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেকের পারফরম্যান্স অনেক উঁচুতে, কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেই খেলোয়াড় পারফরম্যান্স করতে পারে না। তবে টিম নিয়ে এখনো সেভাবে চিন্তা করতে পারছি না। বিপিএলে হাফ অব টুর্নামেন্ট না হলে তো চিন্তা-ভাবনা করতে পারছি না। অর্ধেকটা হোক তারপর আমরা এটা নিয়ে চিন্তা করব। বোলিং ব্যাটিং ফিল্ডিং শর্টার ভার্সনে খুব কমই দেখা যায়। কারণ সুযোগ অনেক কম থাকে। পারফরমারের এটা তো অবশ্যই কাউন্টেবল। যারা পারফর্ম করছে, ইয়াংস্টার যারা পারফর্ম করছে অবশ্যই তারা নজরের মধ্যে আছে। তো দেখা যাক অর্ধেক টুর্নামেন্ট হলে বলতে পারব, যেখা যাক পারফরম্যান্সের স্ট্যাবিলি কতটুকু।’
এবারের বিপিএলে এইচপির খেলোয়াড়রা ভালো করছে বলে ভালো লাগছে নান্নুর, ‘আমরা এখানে অবশ্যই দেখছি তরুণদের। সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে, আমাদের এইচপির অনেক খেলোয়াড় যথেষ্ট ভালো খেলছে। এইচপিতে যাদের নার্সিং করা হয়েছে, তাদের উন্নতি কতটা, সেটা আমরা এখানে দেখতে পারছি। এটা আমাদের জন্য ভালো দিক।’
পাকিস্তানের টেস্ট সিরিজ নিশ্চিত নয়। তবে কি দল গঠনে পরবর্তীতে কোন সমস্যা হবে কি-না! নান্নু বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি আমাদের নিয়ে রাখতে হবে। আমাদের নির্দিষ্ট একটা সময় আছে। সে সময়ের মধ্যে আমাদের দল প্রস্তুত করে রাখব।’
চট্টগ্রামের রানের বন্যা দেখা গেছে। এটি ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বলে মনে করেন নান্নু, ‘টি-২০ ক্রিকেটের এক্সাইটমেন্টই হল রান হতে হবে, চার-ছক্কা হতে হবে। চট্টগ্রামের ভেন্যুতে অনেক রান হচ্ছে, এটা দর্শকদের জন্য ভালো। ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। বোলারদের জন্য হতাশার ব্যাপার অবশ্যই আছে। একেক ভেন্যুতে একেক ধরণের উইকেট থাকবে এটাই নিয়ম। সব উইকেটেই একটা চ্যালেঞ্জের ব্যাপার থাকে খেলোয়াড়দের জন্য। ঢাকায় যদি সংগ্রাম করে থাকে চট্টগ্রামে সহজ ছিলো। সিলেটে আবার কঠিন হবে। একেক জায়গায় একেক ধরণের উইকেট হলে আমাদের জন্য ভালো।’
বাসস/এএসজি/এএমটি/১৮৫৫/স্বব