বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ : বিজিবিকে আরো শক্তিশালী করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

118

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১
শেখ হাসিনা-বাণী-বিজিবি
বিজিবিকে আরো শক্তিশালী করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিজিবিকে আরো শক্তিশালী করতে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১’ এর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ বাহিনীকে বিশ্বমানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
আগামীকাল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস-উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের সীমান্তের নিরাপত্তা ও শান্তিরক্ষা, সীমান্ত এলাকায় মাদক, চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধসহ অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমন ও দুর্যোগকালীন উদ্ধার কর্মকান্ডে বিজিবি’র ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখতে এ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে সততা, নিষ্ঠা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্বপালন করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ বিজিবি ২২৪ বছরের একটি ঐতিহ্যবাহী বাহিনী। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর ভূমিকা অবিস্মরণীয়। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা ইপিআর এর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে যায়। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আপামর জনসাধারণের সঙ্গে এ বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ বীরত্বের জন্য এ বাহিনীর দু’জন বীরশ্রেষ্ঠসহ ১১৯ জন মুক্তিযোদ্ধা সদস্য খেতাবপ্রাপ্ত হয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর ৮১৭ জন অকুতোভয় সদস্য তাঁদের জীবন উৎসর্গ করে বিজিবি’র ইতিহাসকে মহিমান্বিত করেছেন। আমি তাঁদের এ আত্মত্যাগ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। এ বাহিনীর ‘স্বাধীনতা পদক’ অর্জন মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানেরই অনন্য স্বীকৃতি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন-২০১০’ পাশের মধ্য দিয়ে আমরা এই বাহিনীকে যুগোপযোগী সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু করি। বিজিবি পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় ৫টি রিজিয়ন স্থাপন করে কমান্ড স্তর বিকেন্দ্রীকরণ, সীমান্তে বিজিবি’র কার্যকর নজরদারীর লক্ষ্যে নতুন ৪টি সেক্টর ও ১৫টি ব্যাটালিয়ন সৃষ্টি করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে এ যাবৎ ৪৯৭ জন নারী সৈনিকসহ এই বাহিনীতে ২৭ হাজারের অধিক জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে বিজিবি’র পদমর্যাদা ও বেতনে সমতা আনয়নের লক্ষ্যে সুবেদার মেজর, জেসিও এবং হাবিলদারগণের বেতন স্কেল উন্নীত করা হয়েছে। বিজিবি’র তালিকাভুক্ত সকল সদস্যদের সীমান্ত ভাতা প্রদান, অগ্রিম বেতনসহ দু’মাসের ছুটি ভোগের সুবিধা, শতভাগ রেশন সুবিধা, চিকিৎসা ও আবাসন সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
বিজিবি’র সার্বিক কল্যাণে ‘বিজিবি কল্যাণ ট্রাস্ট’ গঠন এবং ‘সীমান্ত ব্যাংক’ স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধ এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনের লক্ষ্যে সকল ব্যাটালিয়নের ঝুঁকিপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সীমান্ত এলাকা নির্বাচন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩২৮ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় ‘স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভিলেন্স এন্ড ট্যাকটিকাল বর্ডার রেসপন্স সিস্টেম’ স্থাপন ও সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সীমান্তের স্পর্শকাতর আইসিপি/এলসিপিসমূহে ‘ভেহিক্যাল এক্স-রে স্ক্যানার’ মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। ফলে বিজিবি কর্তৃক খুবই কম সময়ে এবং কার্যকরভাবে বিভিন্ন পণ্যবাহী যানবাহন তল্ল¬াশী করা সম্ভব হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিজিবি’র অপারেশনাল কার্যক্রম সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য বিজিবিতে ‘কে-নাইন’ ইউনিট সংযোজন করা হয়েছে। বিজিবি’কে একটি ত্রিমাত্রিক আধুনিক বাহিনীতে রূপান্তরের অংশ হিসেবে এয়ার উইং সৃজনের মাধ্যমে হেলিকপ্টার সংযোজন করা হয়েছে।’
বাণীতে তিনি বিজিবি দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে এ বাহিনীর সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং দিবসের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
বাসস/তবি/বিকেডি/১৭১০/কেজিএ