একুশ আগস্ট মামলায় আসামীপক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ অব্যাহত

277

ঢাকা, ৪ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট ভয়াবহ বর্বরোচিত ও নৃশংস গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামীপক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ অব্যাহত রয়েছে।
এ পর্যন্ত ৩৮ আসামীর পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ করা হয়েছে। আজ ছিল এ মামলার যুক্তিতর্ক পেশ করার ৯১ তম দিন।
রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে এ মামলার বিচার চলছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আমিনুর রহমান আজ বাসস’কে জানান, আজ আসামী পুলিশের প্রাক্তন এএসপি আব্দুর রশিদ, আসামী রুহুল আমিন, মুন্সি আতিকুর রহমানের পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ করেন আইনজীবী আবদুস সোবহান তরফদার।
কাল এ তিন আসামীর পক্ষে তাদের আইনজীবী আইনি পয়েন্টে যুক্তি পেশ করবেন। এরপর কাল আসামী সাবেক সেনা কর্মকর্তা রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শুরু করবেন তার আইনজীবী। মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে আগামীকাল ৫ জুলাই।
এর আগে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২২৫ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেয়। আসামীপক্ষে সাক্ষিদের জেরা করেছে।
গত বছরের ৩০ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহহার আকন্দের জেরা শেষের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রধান কোঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান, এডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল, বিশেষ পিপি মো. আবু আব্দুলাহ ভূঞা, আইনজীবী আকরাম উদ্দিন শ্যামল, এডভোকেট ফারহানা রেজা, এডভোকেট মো. আমিনুর রহমান, এডভোকেট ইমানুর রহমান, আবুল হাসনাত, আশরাফ হোসেন তিতাস প্রমুখ।
অপরদিকে আসামিপক্ষে আবদুস সোবহান তরফদার ছাড়াও বিভিন্ন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
২১ আগস্টের ওই নৃশংস হামলায় পৃথক দুটি মামলায় মোট আসামী ৫২ জন। মামলার আসামী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছে। অন্য দিকে তারেক রহমান, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, মেজর জেনারেল (এলপিআর) এটিএম আমিন, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দারসহ ১৮ জন এখনো পলাতক।
জামিনে থাকা আসামিরা হলেন- বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা, সিআইডি’র সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডি’র সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম।
বিএনপি-জামায়াতের জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের একটি সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই নৃশংস হামলায় ২২ জন নিহত ও নেতাকর্মী-আইনজীবী-সাংবাদিকসহ পাঁচ শতাধিক লোক আহত হন।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের পতœী আইভি রহমান।
তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্যান্য নেতা
এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচন্ড শব্দে
তার শ্রবণশক্তিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়।