দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে টেকসই মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনার কোনো বিকল্প নেই : রাষ্ট্রপতি

280

ঢাকা, ৪ ডিসেম্বর,২০১৯ (বাসস) : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন,দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য টেকসই মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস-২০১৯ উপলক্ষে আজ এক বাণীতে এ কথা বলেন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস-২০১৯ পালিত হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
তিনি বলেন,আবহমানকাল থেকেই কৃষি বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রধানতম নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত। আর জীবনের প্রয়োজনে খাদ্য উৎপাদনে যে নিয়ামকটি অত্যাবশ্যক তা হলো মাটি বা মৃত্তিকা। মাটি ফসল উৎপাদনের মৌলিক উপাদান ও ভিত্তি যেখানে প্রায় সব খাদ্য উৎপাদনকারী উদ্ভিদই জন্মে।
আবদুল হামিদ বলেন, শতকরা ৯৫ ভাগ খাবার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মাটি থেকে আসে এবং মাটি উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে।
জীবনরক্ষার অন্যতম উপকরণ ওষুধের উৎসের মূল ভিত্তি হচ্ছে স্বাস্থ্যকর ও সঠিক গুণাগুণসম্পন্ন মাটি এ কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন,জ্বালানি এবং জীবনরক্ষার উপকরণ ছাড়াও বা¯ুÍতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা, কার্বনচক্রে ভূমিকা, পানি সংরক্ষণ ও পরিশোধন এবং বন্যা, খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মূল হাতিয়ার হচ্ছে মাটি। তাই দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য টেকসই মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনার কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন,বর্তমান সরকার কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে নানামুখী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।
আবদুল হামিদ বলেন,জাতিসংঘ মাটির ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজনিয়তা অনুভব করে ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস পালনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এ বছর বিশ্ব মৃত্তিকা দিবসের প্রতিপাদ্য ‘আমাদের ভবিষ্যৎ, মৃত্তিকার ক্ষয়রোধ’ যা অত্যন্ত সময়োপযোগী বলেও তিনি মনে করেন।
ফসল উৎপাদনে এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় মৃত্তিকার অবদান অনস্বীকার্য এ কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট কারণে উদ্ভূত মৃত্তিকা ক্ষয়জনিত সমস্যা বিশ্বব্যাপী একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন,বিশ্বব্যাপী পানি ও বায়ুর কারণে সর্বাধিক মৃত্তিকা ক্ষয় সাধিত হয়, যার প্রতিকূল প্রভাব মানুষের কার্যকলাপে বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। মৃত্তিকা ক্ষয়ের ফলে মাটি তার পুষ্টিগুণ হারায় এবং ফসল উৎপাদনে অক্ষম হয়ে পড়ে। বন উজাড়, অপরিকল্পিত মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা এবং দূষণের মতো সমস্যা মাটির অবক্ষয় ও ক্ষয় ঘটায়।
রাষ্ট্রপতি বলেন,মাটির অতিরিক্ত ব্যবহার, অম্লতা, লবণাক্ততা এবং অন্যান্য রাসায়নিক কারণে সৃষ্ট মৃত্তিকার ক্ষয় একমাত্র মৃত্তিকা সংরক্ষণের মাধ্যমে রোধ করা সম্ভব। মাটির গুণাগুণ বজায় রেখে পরিবেশসম্মত চাষাবাদ, সমন্বিত কৃষি বনায়ন, পরিকল্পিত মৃত্তিকা ও সার ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মৃত্তিকা ক্ষয়জনিত সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে।
কৃষিতে বাংলাদেশ প্রভূত উৎকর্ষ সাধন করেছে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতাকে টেকসই রূপ দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
তিনি ‘বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস ও মৃত্তিকা মেলা ২০১৯’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। বাসস/তবি/