বাসস ক্রীড়া-১৪ : লক্ষ্য অর্জনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো জাপানী উৎসবে কান্নার রোল

158

বাসস ক্রীড়া-১৪
ফুটবল-বিশ্বকাপ-জাপান-বেলজিয়াম
লক্ষ্য অর্জনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো জাপানী উৎসবে কান্নার রোল
টোকিও, ৩ জুলাই ২০১৮ (বাসস/এএফপি) : টোকিওর মদের বার থেকে বৌদ্ধ মন্দির, সবখানেই লাখ লাখ জাপানী সমর্থকদের আবেগ ছিল প্রায় একই রকম। তাদের ইতিবাচক উৎসবে আকস্মিকভাবেই নেমে এল হতাশার কালো ছায়া। আর এসব কিছুই ঘটেছে গতরাতে রাশিয়া বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ম্যাচের শেষ ২৫ মিনিটে।
সোমবার রোস্তভে অনুষ্ঠিত শেষ ষোলর ম্যাচে ব্লু সামুরাইরা যখন ২-০ গোলে বেলজিয়ামকে পিছিয়ে দিয়েছিল, তখন গোটা দেশে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। সবাই ধরেই নিয়েছিল জাপান প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের পথে যাত্রা করছে।
কিন্তু বিধাব বাম। ম্যাচের ইনজুরি সময়ে বেলজিয়ামের বদলী খেলোয়াড় নাসের চাডলির একটি গোল যেন সব কিছুই ওলট-পালট করে দিয়েছে। লাড়াইয়ে ফেরা বেলজিয়াম ৩-২ গোলে হারিয়ে দেয় জাপানকে। মুহূর্তেই পিন পতন নিরবতা নেমে আসে গোটা দেশে।
টোকিওর বাণিজ্যিক নগরী সিংঙ্গাওয়ার বারে বসে খেলা দেখা রয়তা ইয়াকিরি চোখের জল সংবরণ করার চেস্টা করতে করতে বলেন,‘ আমি খুবই হতাশ’।
আবাসন কোম্পানির কর্মচারী ইয়কি কাকিসিতা বলেন, ‘খেলাটি ছিল রোলার কোস্টারের মত। এক কথায় তারা(দল) আমাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। এ জন্য তারা ভাল একটি অবস্থানও গড়ে তুলেছিল।’
তাকাশি ইনুই যখন জাপানের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি আদায় করেন তখন বারের দর্শকদের মধ্যে কেউ কেউ নিজ দলের নীল পোশাক পড়ে এবং মুখে জাতীয় পতাকা এঁকে উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হতাশ হতে হয়। এমন পোষাকে থাকা ব্যবসায়ী শিমন ওটোমো বলেন, ‘জাপান যখন লীড নিল, তখন আমরা একেবারেই রোমঞ্চিত হয়ে পড়ি। তবে বেলজিয়াম বেশ কঠিন দল।’
এ সময় জাপানের বিভিন্ন স্থানে বড় জায়ান্ট পর্দায় সমবেত হয়ে খেলা দেখা জাপানী সমর্থকদের শেষ মুহূর্তের স্বপ্ন ভঙ্গের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে বুকে হাত দিয়ে স্থান ত্যাগ করেেত দেখা যায়।
শিজোকার কেন্দ্রীয় জেন মন্দিরে প্রথমবারের মত উন্মুক্তভাবে এই খেলা দেখানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। খেলা শেষে মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ভজন গেয়ে ভক্তদের সান্তনা দেন। এ সময় ধর্ম যাজক তাইকো ইশিদা বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেন, ‘আমি আগত সব অতিথিদের বলেছিলাম শান্তভাবে খেলা উপভোগ করতে। কিন্তু তারা তো দূরের কথা আমি নিজেও আবেগ সংবরণ করতে পারিনি। জাপান যখন গোল করল, তখন আমরা সবাই চিৎকার করে লাফাতে লাগলাম। কিন্তু এর সমাপ্তিটা হল নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে। ফলাফল আমাদের দারুণ অনুশোচনায় ফেলে দিয়েছে।’
তবে কোচ বদলসহ বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পড়ে যাওয়া দলটি গ্রুপ পর্বের বাঁধা অতিক্রম করতে পারবে না বলেও অনেকে মন্তব্য করেছিল। কিন্তু তাদের মুখে ছাই দিয়ে দলের পারফর্মেন্সে সন্তুষ্ট জাপানী সমর্থকরা। ২৩ বছর বয়সি সাওয়া ওসাকা বলেন, ‘আমরা হেরেছি ঠিকই, কিন্তু দলটি মাঠে জয়ের জন্য সবকিছুই করেছে।’ ইয়াকিরি যোগ করেন,‘ জাপান দল জনগণকে জানিয়ে দিয়েছে যে, বিশ্ব মঞ্চে তারা খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। জয়ান্টদের তারা প্রায় হারিয়েই দিয়েছিল।’
দলের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শিনজি এ্যবে এক টুইটবার্তায় লিখেছেন, ‘আপনারা শেষ মিনিট পর্যন্ত সেরাটা খেলে গেছেন।’
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/১৭৩০/মোজা/স্বব