বাসস দেশ-১২ : মাদক সংক্রান্ত অপরাধের বিচারের জন্য পৃথক আদালত গঠনের প্রস্তাব

187

বাসস দেশ-১২
মাদক বিরোধী-প্রস্তাবিত আইন
মাদক সংক্রান্ত অপরাধের বিচারের জন্য পৃথক আদালত গঠনের প্রস্তাব
ঢাকা, ৩ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও পাচার বন্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে প্রস্তাবিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন চুড়ান্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে মাদক সংক্রান্ত অপরাধের বিচারের জন্য পৃথক আদালত বা ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বাসস’কে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এ আইন প্রনয়ন করার পর সরকার চাইলে মাদক সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তির জন্য মহানগর ও জেলা পর্যায়ে পৃথক আদালত স্থাপন করতে পারবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের কারাগারগুলোতে ৩৫ হাজার কয়েদীর ধারন ক্ষমতা থাকলেও সেখানে এই সংখ্যা ৮০ হাজারের কাছাকাছি। এদের মধ্যে ৪০ শতাংশ মাদক সংক্রান্ত অপরাধী। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি প্রয়োজন বিধায় মাদক সংক্রান্ত অপরাধের বিচারের জন্য আমরা পৃথক আদালত চেয়েছি।
তিনি বলেন, ‘মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে খসড়া আইনে প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রচলিত মাদক প্রতিরোধ আইনে ইয়াবা ও সীসা অন্তর্ভুক্ত ছিল না। মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ আইনের খসড়া প্রস্তাবে ইয়াবা ও সীসাকে মাদক হিসাবে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ইদানিং অনেক তরুন-তরুনীদের মধ্যে ইয়াবা ও সীসা সেবনের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এগুলোসহ মাদক সংক্রান্ত অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে আইনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনে ‘মাদক ব্যবসায়ি ও পৃষ্ঠপোষকদের শাস্তির আওতায় আনার বিধান রাখা হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ী যত শক্তিশালী হোক না কেন কাঊকে ছাড় দেয়া হবে না। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। সমাজপতি- রাজনীতিবিদ যিনিই হউক না কেন, সবাই আইনের দৃষ্টিতে সমান।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের ছাড়াও যারা এ ব্যবসায় অর্থ, আশ্রয় ও বাড়ি ভাড়া দিয়ে সহযোগিতা করছে তাদেরও তালিকা করা হচ্ছে। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে ।
তিনি বলেন, ‘মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত মোবাইল কোর্টের সংখ্যা ও পরিধি বাড়ানো চেষ্টা চলছে। মোবাইল কোর্ট নিয়ে রেগুলার কোর্টের সঙ্গে কিছুটা বিতর্ক ছিল, সেগুলো সমাধান করার চেষ্টা চলছে।’
মাদকদ্রব্য নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে এবং সীমান্তে নিñিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত শুধু টেকনাফ বা নাফ নদীই নয়। এর বাইরেও অনেক সীমান্ত দিয়ে নানাভাবে পাচার হয়ে ইয়াবা আসে। আমরা সীমান্তে সেন্সরযন্ত্র বসিয়েছি। সেন্সরের মাধ্যমে বিজিবি সদস্যরা বুঝতে পারবে আমাদের বর্ডার দিয়ে কিছু আসছে কিনা।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সরকার মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়াসহ সীমান্ত সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যেসব দুর্গম এলাকায় বিওপি নেই, সেখানে বিওপি স্থাপন করা হচ্ছে। সেসব সড়ক দিয়ে যাতে মোটরসাইকেল দিয়ে এক বিওপি থেকে আরেক বিওপিতে যাওয়া যায় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিজিবিসহ বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশকে শক্তিশালী করা হয়েছে। দ্রুতগামী জাহাজ ও স্পিডবোট দেয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আতিকুল হক বাসসকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনে ইয়াবা ও সীসাকে মাদকদ্রব্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে মাদক সংক্রান্ত আপরাধের জন্য ৫ থেকে ৭ বছর সাজা দেয়া হতো। প্রস্তাবিত আইনে মাদক সংক্রান্ত আপরাধকে ‘খ’ শ্রেণি থেকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত করে সর্বোচ্চ মৃত্যুদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।’
বাসস/এসপিএল/এফএইচ/১৬৪৫/কেজিএ