বাজিস-৫ : চাঁদপুরে এবার শাক-সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৮ হাজার মেট্রিক টন

150

বাজিস-৫
চাঁদপুর-শাক সবজি
চাঁদপুরে এবার শাক-সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৮ হাজার মেট্রিক টন
চাঁদপুর, ১ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বাসস): জেলায় এ বছর শাক-সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৮ হাজার ২১৬ মেট্রিক টন। এর অনুকূলে ৫ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। চাঁদপুর দেশের অন্যতমে একটি নদীবিধৌত কৃষি প্রধান অঞ্চল। মেঘনা, পদ্মা, মেঘনা ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী এ জেলা ওপর দিয়ে বয়ে যাওযায় রবি, আউস, আমন ও বোরোর মত কৃষি উৎপাদনে নদী অববাহিকায় ব্যাপক শাক-সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে।
বিশেষ করে চাঁদপুরের ১১টি চরাঞ্চলে এ শাক-সবজি ব্যাপকভাবে চরবাসীরা চাষাবাদ করে থাকে। চাঁদপুরে ধান, পাট, আলু, সয়াবিন, পেঁয়াজ, রসুন সরিষা, মরিচের পরেই শাক-সবজির স্থান। এটি এখন বেশ লাভজনক।
শাক-সবজির মধ্যে রয়েছে- ফুলকপি, বাধাকপি, বেগুন, লালশাক, লাউ, কুমড়া, শিম, মুলা, গাঁজর, খিরা, টমেটো, করলা, পালং শাক, ধনিয়া, বরবটি প্রভৃতি।
চাঁদপুরের কুমারডুগি, মহামায়া, দেবপুর, মাস্টার বাজার, সুন্দরদিয়া ও চরাঞ্চলে ব্যাপকহারে ও বাণিজ্যিকভাবে চাষিরা এসব শাক-সবজির চাষাবাদ করে থাকে ।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ির তথ্যমতে, এ বছর চাঁদপুরে ১ লাখ ৮ হাজার ২১৬ মে. টন শাক-সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চাঁদপুর সদরে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৯শ’ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৪৪০ মে.টন। মতলব উত্তরে চাষাবাদ ৯১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৬৫৬ মে.টন। মতলব দক্ষিণে চাষাবাদ ৩৬০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৭৭৬ মে.টন।
হাজীগঞ্জে চাষাবাদ ৬৬০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার ২৫৬ মে.টন। শাহরাস্তিতে চাষাবাদ ৩৯০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৪২৪ মে.টন।
কচুয়ায় চাষাবাদ ৪১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৮৫৬ মে.টন। ফরিদগঞ্জে চাষাবাদ ৭৪০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৯৮৪ মে.টন। হাইমচরে চাষাবাদ ৬৪০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৮২৪ মে.টন।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার হাসাঁ এলাকার কৃষক মরফত আলী সর্দার জানায়, তিনি এ বছর ২ একর জমিতে বর্গা চাষী হিসেবে লাল শাক,পালংশাক, মূলা, বরবটিসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি আবাদ করেছে, ফলন ভালো হয়েছে, আগাম ফলনের কারণে এখন কিছু কিছু বাজারে বিক্রি ও করেছ। কৃষি বিভাগের উৎপাদনের উন্নত প্রযুক্তি প্রদান, কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা, বীজ, সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের সঠিক পরামর্শের কারণে চাষীরা ব্যাপক হারে শাক-সবজির চাষ করছে।
বিশেষ করে চাঁদপুরের চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপক শাক-সবজির উৎপাদন করে থাকে চাষীরা। চরাঞ্চলগুলো হলো- মতলবের চরইলিয়ট, চর কাসিম, ষষ্ট খন্ড বোরোচর, চাঁদপুর সদরের রাজরাজেস্বর, জাহাজমারা, লগ্নিমারা, বাঁশগাড়ি, চিড়ারচর, ফতেজংগপুর, হাইমচরের ঈশানবালা, চরগাজীপুর, মনিপুর, মধ্যচর, মাঝিরবাজার, সাহেব বাজার ও চরভৈরবির বাবুরচর ইত্যাদি।
চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপপরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রশিদ জানান, চাঁদপুর জেলা কৃষি উৎপাদনের জন্য একটি সমৃদ্ধ জেলা, এখানে আমাদের কৃষি বিভাগের পরামর্শে ও সরকারের কৃষি ভর্তুকির কারণে দিন দিন শাক সবজিসহ সকল ধরনের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদী তীরবর্তী এলাকা হওয়ার কারণে পানি দ্রুত নেমে যাওয়া কৃষকরা জমি তৈরি করতে পারেন আগেই তাই এ জেলার কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি আবাদ করতে পারেন, এবং ভালো ফলন হয়, আবহাওয়া অনুকূল পরিবেশ থাকলে আমাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হবে।
বাসস/সংবাদদাতা/১৩৪৫/নূসী