চট্টগ্রাম, ১ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জিয়াউর রহমান রাজনীতিতে বণিকায়ন ও দুর্বৃত্তায়ন করেছিলেন। রাজনীতিকে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
আর এরশাদ সেটিকে আরএকটু পূর্ণতা দেন এবং একেবারে ষোলকলা পূর্ণ করেন বেগম খালেদা জিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এভাবেই রাজনীতি যে একটা ব্রত সেটা হারিয়ে গেল। এটা একটি দেশের এবং সমাজের জন্য প্রচন্ড দুঃখজনক।’
মন্ত্রী গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে মুক্তিযুদ্ধের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠক, ন্যাপ প্রধান প্রয়াত অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নাগরিক শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে যত বেশি টাকা দলীয় ফান্ডে দিতে পারে তাকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয় বিএনপি থেকে। এভাবে রাজনীতিকে বণিকায়ন এবং দূর্বৃত্তায়ন করা হলো। ১৯৭৯ সালে কিভাবে নির্বাচন হয়েছিল সেটা সবার মনে থাকার কথা।’
মানুষ যাতে ভোট দিতে না পারে সেজন্য চট্টগ্রামের জামালখান সড়কে খোলা কিরিচ উঁচিয়ে ভোটের আগের দিন মানুষের মাঝে ভীতির সঞ্চার করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি একটা ব্রত, রাজনীতি মানুষের কল্যাণের জন্য, সমাজ পরিবর্তনের জন্য, সমাজের অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো এবং দেশ বিনির্মাণের জন্য হচ্ছে রাজনীতি।
অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদকে দেশের ইতিহাসে একজন কিংবদন্তী অভিহিত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অনন্য অবদান রেখেছেন তিনি। রাজনীতিকে তিনি ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। এর জন্য তিনি আরাম-আয়েশ ত্যাগ করেছিলেন। তিনি চাইলে মন্ত্রী ও অনেক বিত্ত-বৈভবের মালিক হতে পারতেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, রাজনীতি মন্ত্রী-এমপি হওয়ার জন্য নয়। দেশ পরিবর্তন করতে হলে সমাজ পরিবর্তন করতে হলে দলকে ক্ষমতায় নিতে হয়। রাজনীতি হচ্ছে দেশ ও সমাজ পরিবর্তনের জন্য।
তিনি বলেন, “আমি যে কর্মসূচিতে বিশ্বাস করি যে মূল্যবোধে বিশ্বাস করি এবং যে রাজনৈতিক চেতনায় বিশ্বাস করি সেটিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য হচ্ছে রাজনীতি। এটি আজকে রাজনীতিবিদরা ভুলে গেছেন।”
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা আমাদের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না তারা বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে সম্পৃক্ত। ২০ দলীয় জোটের মধ্যে অনেক দল আছে যাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে একটি তালেবানি রাষ্ট্রে রূপান্তর করা।
স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর দেশে স্বাধীনতার পক্ষের রাজনীতি এবং স্বাধীনতার বিপক্ষের রাজনীতি থাকতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে এমন হওয়া উচিত সরকারি দল হবে স্বাধীনতার পক্ষের, বিরোধী দলও হবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি।
এ জন্য ন্যাপ মোজাফফর ও কমিউনিস্ট পার্টিসহ যারা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির দল আছে তাদের আরো শক্তি সঞ্চয় করার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ নাগরিক শোকসভা কমিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাপের প্রেসিডিয়াম সদস্য আইভি আহমদ। মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন প্রমুখ।