বাসস ক্রীড়া-৯ : ওয়ার্নারের ট্রিপল সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড়ে পিষ্ট পাকিস্তান

172

বাসস ক্রীড়া-৯
ক্রিকেট-অ্যাডিলেড
ওয়ার্নারের ট্রিপল সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড়ে পিষ্ট পাকিস্তান
অ্যাডিলেড, ৩০ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : ডেভিড ওয়ার্নারের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিতে অ্যাডিলেডে দিবা-রাত্রির টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে রানের পাহাড় গড়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্নারের অপরাজিত ৩৩৫ রানে ৩ উইকেটে ৫৮৯ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছে অসিরা। জবাবে অস্ট্রেলিয়ার পাহাড়ে পিস্ট হয়ে নিজেদের ইনিংস শুরু করে ৯৬ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে পাকিস্তান। এতে ৪ উইকেট নিয়ে এখনো ৪৯৩ রানে পিছিয়ে পাকিস্তান।
দিবা-রাত্রির টেস্টের প্রথম দিনই রানের পাহাড় গড়ার পথ তৈরি করেছিলো অস্ট্রেলিয়া। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ওয়ার্নারের ১৬৬ ও লাবুশেনের ১২৬ রানে ৭৩ ওভারে ১ উইকেটে ৩০২ রান করেছিলো অসিরা।
দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেই টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ওয়ার্নার। ততক্ষণে দেড়শ’ রানের কোটা পূর্ণ করেন লাবুশেন। তবে ব্যক্তিগত ১৬২ রানে আউট হন তিনি। পাকিস্তানের বাঁ-হাতি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির দ্বিতীয় শিকার হন লাবুশেন। প্রথম দিন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার জো বার্নসকে আউট করেছিলেন আফ্রিদি। ২২টি চারে ২৩৮ বলে নিজের ইনিংসটি সাজান প্রথম টেস্টে ১৮৫ রান করা লাবুশেন ।
ওয়ার্নারের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৩৬১ রান করেন লাবুশেন। টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের বিপক্ষে যেকোন উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন তারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার আগের সর্বোচ্চ রানের জুটিটি ছিলো ৩৫২ রানের। ২০১০ সালে হোবার্টে চতুর্থ উইকেটে ঐ স্কোর করেছিলেন রিকি পন্টিং ও মাইকেল ক্লার্ক। আর নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি।
লাবুশেন ফিরে গেলে, সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে নিয়ে দলের স্কোর বড় করতে থাকেন ওয়ার্নার। ২ উইকেটে ৪৭৫ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যান তারা। বিরতি থেকে ফিরে উইকেট পতনের তালিকায় নাম তুলেন স্মিথ। এবারও শিকারীর নাম আফ্রিদি। ৩৬ রান করা স্মিথকে আউট করেন তিনি। সাবেক দুই নিষিদ্ধ ক্রিকেটার ওয়ার্নার-স্মিথ তৃতীয় উইকেটে ১২১ রান যোগ করেছিলেন।
স্মিথের আউটের পর ম্যাথু ওয়েডকে নিয়ে ৮১ ম্যাচের ক্যারিয়ারে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ওয়ার্নার। অস্ট্রেলিয়ার সপ্তম খেলোয়াড় হিসেবে ট্রিপল সেঞ্চুরির স্বাদ নিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বশেষ ২০১২ সালে সিডনিতে ভারতের বিপক্ষে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন সাবেক দলপতি মাইকেল ক্লার্ক।
তবে দিবা-রাত্রির টেস্টে দ্বিতীয় ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান হলেন ওয়ার্নার। এর আগে আগে ২০১৬ সালে দুবাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়েছিলেন পাকিস্তানের বর্তমান অধিনায়ক আজহার আলি।
ট্রিপল সেঞ্চুরি করেও নিজের ইনিংসটি বড় করছিলেন ওয়ার্নার। তার আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং-এ ক্রিকেটপ্রেমিরা ভেবেছিলেন আজ রি-ডাবল সেঞ্চুরি দেখা যাবে টেস্ট ময়দানে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে চা-বিরতির আগ মুহূর্তে ইনিংস ঘোষণা করেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টিম পাইন। তাই ৩৩৫ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়তে হয় ওয়ার্নারকে। যা অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান। ৩৮০ রান নিয়ে এক্ষেত্রে সবার উপরে বাঁ-হাতি ওপেনার ম্যাথু হেইডেন। ওয়ার্নারের সাথে ৩৮ রানে অপরাজিত ছিলেন ওয়েড। পাকিস্তানের আফ্রিদি ৮৮ রানে ৩ উইকেট নেন।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষে ব্যাট হাতে নেমে মহাবিপদে পড়েছে পাকিস্তান। অসি পেসার মিচেল স্টার্কের তোপে কুপোকাত পাকিস্তানের টপ-অর্ডার। ৮৯ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে বসেছে পাকিস্তান। এরমধ্যে চার উইকেটই নিয়েছেন স্টার্ক। ১টি করে নেন প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজেলউড।
ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাঝে মাত্র তিনজন ব্যাটসম্যান দু’অংকের কোটা স্পর্শ করতে পারেন। শান মাসুম ১৯ ও ইফতেখার আহমেদ ১০ রান করে ফিরেন। তবে ৪৩ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন আগের টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান বাবর আজম। তার সঙ্গী ইয়াসির শাহ’র সংগ্রহ ৪ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
অস্ট্রেলিয়া : ৫৮৯/৩ ডি, ১২৭ ওভার (ওয়ার্নার ৩৩৫*, লাবুশানে ১৬২, আফ্রিদি ৩/৮৮)।
পাকিস্তান : ৯৬/৬ ডি, ৩৫ ওভার (বাবর ৪৩*, মাসুদ ১৯, স্টার্ক ৪/২২)।
বাসস/এএমটি/১৯৩০/স্বব