বাসস দেশ-২ হলি আর্টিসান মামলার রায় আজ

237

বাসস দেশ-২
হলি আর্টিসান-মামলা-রায়
হলি আর্টিসান মামলার রায় আজ
ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার মামলার রায় আজ বুধবার।
ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান দুপুর ১২টার দিকে এ রায় ঘোষণা করবেন। এজন্য ঢাকার আদালত পাড়ায় বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রায় ঘোষণার জন্য কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সকাল ১০টায় আসামিদের আনা হয়েছে। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আসামিদের এজলাসে উঠানো হবে। ১২টার দিকে রায় ঘোষণা করা হবে। রায়ের পর আদালত থেকে আসামীদের সরাসরি প্রিজন ভ্যানে আবারও কারাগারে পাঠানো হবে।
আজ মামলা দায়েরের তিন বছর চার মাস পর দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। মামলায় ২১১ জনের মধ্যে ১১৩ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত।
ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্ল¬াহ আবু বলেন, আমরা সাক্ষ্য প্রমাণে তা প্রমাণের চেষ্টা করেছি যে, আসামিরা অপরাধী। তাই আমরা আশা করছি, আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আদেশ দেবেন আদালত।
সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার খান জাকিরও এ মামলায় রায়ে আসামিদের মৃত্যুদন্ড আশা করছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, সাক্ষীর জেরা ও যুক্তি উপস্থাপনে আমরা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছি যে, আসামিরা অপরাধ করেননি। তাই আমরা রায়ে আদালতের কাছে ন্যায় বিচার কামনা করছি।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার আদালত পাড়া পরিদর্শন করেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মীর রেজাউল আলম ও কৃষ্ণ পদ রায়। পরিদর্শন শেষে তারা আদালত পাড়ার বিশেষ নিরাপত্তায় লালবাগ ডিভিশন ও আদালতের ডিসি প্রসিকিউশনকে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন।
ঢাকার আদালতের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি প্রসিকিউশন) জাফর হোসেন বলেন, হলি আর্টিসান মামলার রায়কে কেন্দ্র করে ডিএমপির দুই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আদালত এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা বিশেষ নিরাপত্তার বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। যদিও হামলার কোনো আশঙ্কা নেই, তবুও নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা থাকবে।
ঢাকা মহানগর আদালতের হাজতখানার ওসি মঈনুল ইসলাম বলেন, হাজাতখানা থেকে এজলাসে আসামিদের আনা নেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
জঙ্গিরা ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিসানে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে । তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন। পরে অভিযানে ঘটনাস্থলে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। ওই ঘটনায় গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়।
গত ১৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণা দিন ২৭ নভেম্বর ধার্য করেন।
এর আগে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক হুমায়ুন কবির। একই বছর ২৬ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ভয়াবহ এ জঙ্গি হামলার বিচার শুরু হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র‌্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান সাগর, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।
এ ছাড়া ঘটনাস্থলে ৫ জনসহ বিভিন্ন জঙ্গি আস্থানায় অভিযানে মোট ১৩ জন নিহত হওয়ায় মামলা থেকে তাদের বাদ দেয়া হয়।
হলি আর্টিসানে সেনাবাহিনীর অপারেশন থান্ডারবোল্টে নিহত পাঁচ হামলাকারী হলেন- রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল এবং অন্যান্য জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহত আটজন হলেন- তামিম আহমেদ চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ান জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।
বাসস/সংবাদদাতা/এফএইচ/১২১০/এমএসআই