বাসস ইউনিসেফ ফিচার-১ : রক্ত শূন্যতা থেকে রক্ষা পেতে শিশুকে আয়রণযুক্ত খাবার দিতে হবে

108

বাসস ইউনিসেফ ফিচার-১
রক্তশূন্যতা- শিশু
রক্ত শূন্যতা থেকে রক্ষা পেতে শিশুকে আয়রণযুক্ত খাবার দিতে হবে
ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : কিংশুক পার্থ’র বয়স সাত বছর। এই বয়সে সারাক্ষন ছোটাছুটি আর খেলাধুলার মধ্যে থাকার কথা থাকলেও প্রায় সময় চুপচাপ বসে থাকে সে। কিছুক্ষণ বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করলেও পরে মাঠের পাশে বসে থাকতে হয় তাকে। অল্পতেই হাঁপিয়ে যায়। মুখটাও কেমন ফ্যাকাসে হয়ে আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল পার্থ আ্যানিমিয়া অর্থাৎ রক্তশূন্যতায় ভুগছে।
অনুপম আর সোমা দে’র সন্তান পলাশ দে’ও ভুগছে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়াতে। পলাশের বয়স এখন বার বছর। প্রায় সময় দুর্বলতা অনুভব করে সে। এ নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলে বেশ কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর জানা যায় পলাশ রক্ত শুন্যতায় ভুগছে। এরপর থেকে নিয়মিত ওষুধ সেবন করে আসছে পলাশ। ওষুধ সেবনের পর থেকে কিছুটা সুস্থতা অনুভব করছে সে।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাইদুর রহমান সোহাগ বলেন, শিশুদের বেশ কিছু সাধারন স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে। আর এসব রোগের মধ্যে অ্যানিমিয়া অথবা রক্তশূন্যতা একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমান আয়রন না থাকলে রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয়। সাধারনত জন্মের তিনমাস বয়স পর্যন্ত শিশুর শরীরে যে হিমোগ্লোবিন থাকে শিশু তা মায়ের গর্ভ থেকেই নিয়ে আসে। এরপর শিশুর শরীরের অস্থিমজ্জায় রক্ত তৈরী হতে শুরু করে। আর এই রক্ত তৈরীতে সহায়তা করে আয়রণ। এজন্য শিশুকে বয়স বাড়ার সাথে সাথে মায়ের দুধের পাশাপাশি নিয়মিত আয়রনসমৃদ্ধ খাবার দিতে হয়। এতে করে শিশু সুস্থ-সবল হয়ে বেড়ে উঠে। অন্যথায় শিশুর রক্তশূন্যতা রোগ দেখা যেতে পারে।
তিনি বলেন, শিশুর বয়স ছয় মাস পার হওয়ার পর থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার খাওয়ানো শুরু করতে হবে। যেসব খাবারে আয়রন আছে সেসব খাবার শিশুর খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। তালিকায় মাছ, মাংস, ডিম, কলিজা, বাদাম, কিশমিশ, সবুজ শাক-সব্জি, ব্রকলি, ডুমুর ইত্যাদি উপাদান রাখা যায়।
ডা. সোহাগ বলেন, এ সব খাবার শিশুর জন্য অনেক ভালো উপাদান হিসেবে কাজ করে। বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে বুকের দুধের মাত্রা কমিয়ে আনতে হবে। কারন শিশু যদি দুধ পান করে পেট ভরিয়ে রাখে তবে অন্য খাবার খেতে চাইবে না। সে ক্ষেত্রে বাচ্চা আয়রনজনিত সমস্যাসহ অন্যান্য রোগে ভুগতে পারে। ডিমের কুসুম আয়রনসমৃদ্ধ খাবার। আর তাই ছয় মাস বয়সের পর থেকে বাচ্চাকে অন্যান্য খাবারের সাথে সাথে ডিম খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হবে। আস্তে আস্তে অন্যান্য খাবার যেমন মাছ, মাংস, শাক-সব্জি খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে।
এছাড়াও শিশুদের প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে। এতে করে শিশুদের অন্যান্য সমস্যাগুলোও জানা যাবে। দুই বছর বয়সের পর থেকে শিশুদের কৃমির ওষুধও সেবন করাতে হবে। কারন শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কৃমি বড় প্রতিবন্ধকতা। তাই কৃমি প্রতিরোধে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করাতে হবে।
বাসস ইউনিসেফ ফিচার/সুঘো/আহো/১৮০০/স্বব