সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অস্থিরতা ছড়ানোর দায় রয়েছে সেবাপ্রদানকারী সংস্থারও : তথ্যমন্ত্রী

605

ঢাকা, ২৪ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অস্থিরতা ছড়ানোর দায় সার্ভিস প্রোভাইডার বা সেবাপ্রদানকারী সংস্থা এড়াতে পারে না।’
আজ ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমি’র চিত্রশালা মিলনায়তনে ‘উগ্রবাদ ও সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে করণীয়’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন। অভিনয় শিল্পী সংঘের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ (সিটিটিসি) প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এ সেমিনার আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, ‘ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দায় অস্বীকার করার উপায় নেই। এবিষয়টি এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।’
‘ইউরোপ-আমেরিকার মানুষ মনে করে অনেকক্ষেত্রেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সমাজে অস্থিরতা ছড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কয়েকটি দেশের মতামত নিয়েছি। তারা এই ধরনের অপব্যবহারের জন্য সার্ভিস প্রোভাইডার বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন করেছে। আমরাও অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিচ্ছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাউন্ট খুলতে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারের বিষয় নিয়েও আমরা আলোচনা করছি।
এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুমতিহীন বিজ্ঞাপন নিয়ে সার্ভিস প্রোভাইডাররা ব্যাপক অর্থ এদেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে। সেটিও নিয়মের মধ্যে আসা প্রয়োজন, বলেন ড. হাছান মাহ্মুদ।
ড. হাছান বলেন, ‘সংস্কৃতিচর্চা উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদ রোধে অত্যন্ত কার্যকর। একারণে সংস্কৃতি চর্চার ব্যাপক প্রসার একান্ত প্রয়োজন। সরকার দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার প্রসারে আন্তরিকভাবে কাজ করে চলেছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশি সিরিয়াল প্রচারের জন্য আমরা যে কমিটি করে দিচ্ছি, তার অনুমতি নিতে হবে। আর আমাদের দেশে যথেষ্ট প্রতিভাবান শিল্পী থাকা সত্ত্বেও তাদের বাদ দিয়ে বিদেশি দ্বিতীয়-তৃতীয় গ্রেডের শিল্পীদের দিয়ে মডেলিং করিয়ে বিজ্ঞাপন নির্মাণ করে এদেশে প্রচার করতে হলেও অতিরিক্ত শুল্ক গুনতে হবে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ এবং গোয়েন্দা বাহিনী অত্যন্ত সফলভাবে উগ্রবাদ দমনে সক্ষম হয়েছে। নির্মূল না হলেও অন্যান্য অনেক দেশের চেয়ে আমরা এ বিষয়ে অনেক বেশি সফল।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ- ডিএমপি’র সিটিটিসি ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার মোঃ মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম, ফেডারেশন অভ টিভি প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন-এফটিপিও আহ্বায়ক নাট্যকার মামুনুর রশীদ, বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব ড. ইনামুল হক, বিশিষ্ট অভিনেতা কে এস ফিরোজ, ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দীন লাভলু, অভিনয় শিল্পী সংঘের উপদেষ্টা তৌকির আহমেদ, জাহিদ হাসান, টিভি প্রযোজক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুনতাসীর সাজু, নাট্যকার সংঘের সাধারণ সম্পাদক এজাজ মুন্না, শিল্পী সাজু খাদেম, শবনম ফারিয়া, মৌসুমী হামিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ডিএমপি’র সিটিটিসি ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মাহফুজা লিজা ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নাজমুল ইসলাম বিষয় ভিত্তিক উপস্থাপনা দেন।
বক্তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বজায় রাখার প্রযুক্তি ও ব্যবহারগত বিভিন্ন দিক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন ও এ বিষয়ে পুলিশের সহায়ক ভূমিকার জন্য অকুণ্ঠ চিত্তে ধন্যবাদ দেন।