বাসস দেশ-২৭ : মুন্সীগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৮ জনের জানাজা অনুষ্ঠিত, মামলা দায়ের, তদন্ত কমিটির কাজ শুরু

230

বাসস দেশ-২৭
সড়ক-দুর্ঘটনা-নিহত
মুন্সীগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৮ জনের জানাজা অনুষ্ঠিত, মামলা দায়ের, তদন্ত কমিটির কাজ শুরু
মুন্সীগঞ্জ, ২৩ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : মুন্সীগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৮ জনের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে এই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে।
লৌহজং উপজেলার পদ্মা তীরের কনকসার নাগেরহাট গ্রাম যেন এখন শোকে কাতর। স্বজনদের আর্তনাত আর গ্রামবাসীদের শোক চলছেই। রাতভর ছিল কান্নার রোল, বর রুবেল ব্যাপারীর বাড়ি ঘিরে হাজারো মানুষের ভিড় ছিল। লাশগুলো দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় এই কান্না আরও বেড়ে যায়।
গ্রামটির মধ্যবয়সী মিজানুর রহমান বাসস’কে বলেন, ‘শোক যে কত বেশি ভারি হতে পারে তা আমরা গ্রামবাসীরাই বুঝতে পারতাছি। এক পরিবার তছনছ হয়ে গেল। আর প্রতিবেশী আর দুই মুরুব্বীর মৃত্যু পুরো গ্রামকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে।’
এদিকে এই দুর্ঘটনায় নিহত আট জনের একই সাথে জানাজা হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লৌহজং উপজেলার কনকসার বটতলা গ্রামের বাহ্মনগাঁও উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাযা এই আট জনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে হলদিয়া গ্রামের সাতঘড়িয়া কবরস্থানে সাত জনের দাফন সম্পন্ন করা হয়। রুবেরে ভাই সাহেলের শ্যালিকা রেনু আক্তারের জানাজা একত্রে হলেও দাফন করা পার্শ্ববর্তী তাদের কাহেতারা গ্রামের কবরস্থানে। এছাড়া চালক বিল্লাল হোসেনকে পৃথক জানাজার পর তার গ্রামের বাড়ি সিরাজদিখানে দাফন করা হয়।
জানাজায় শ’ শ’ লোক অংশ গ্রহণ করে। জানাজার আগে নিহতদের বাড়িতে উপস্থিত হন মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমলি। তিনি শোকাহত পরিবারকে শান্তনা দেন।
এদিকে এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। কমিটির চেয়ারম্যান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায় জানান, শুক্রবার রাতেই তিনি কমিটির পত্র পেয়েছেন। বাকী ছয় সদস্যের সাথে আলোচনা হচ্ছে খোঁজখবর করা হচ্ছে। তবে রবিবার তদন্ত কমিটি সরেজমিন ঘটনা পরিদর্শনসহ খুঁটিনাটি বিষয় উদঘাটনে কাজ করবেন।
জেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত এই কমিটি আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
মুন্সীগঞ্জের শুক্রবারের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার রাতেই মামলাটি হাসাড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে এন্ট্রি দেখানো হয়েছে। এই মামলায় একজনকে আসামী করা হয়েছে। স্বাধীন পরিবহনের অজ্ঞাতনামা চালক মামলাটির আসামী। এই ফাঁড়ির সাব ইন্সপেক্টর দেলোয়ার হোসেন খান মামলাটির বাদী হয়েছেন। তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন ফাঁড়িটির আরেক সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) মো. শাহজান মিয়া। দ্রুত বোপোরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে আহত ও নিহত করার অপরাধে বাংলাদেশ দ-বিধি ২৭৯, ৩৩৭, ৩৩৮ (ক) এবং ৩০৪ (খ) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের কনসার গ্রামের নিহত আব্দুল রশিদ বেপারীর পুত্র রুবেলের বিয়ে বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে শোকের মাতন।
বিকেলে ওই বাড়িতে পৌছেঁ দেখা যায়, শত শত লোক উঠানের মাঝে দাড়িয়ে ঘিরে আছে।
দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত জাহাঙ্গীর আলম (৪০) বেঁচে আছেন। তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছে। জাহাঙ্গীর শ্রীনগর উপজেলার ছনবাড়ি গ্রামের নুম মোহাম্মদ বেপারীর ছেলে। সে এখন ঢাকার মোহাম্মদপুর আল মান্নান হাসপাতালে লাইফসাপোর্টে আছেন। জাহাঙ্গীর আলমের ভাই আলমগীর হোসেন শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, আমার ভাই এখন লাইফ সার্পোটে আছেন। চিকিৎসকরা এখনও কিছু বলতে পারছেন না।
বাসস/সংবাদদাতা/এমএন/২০৩৫/কেকে