বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : সন্ত্রাস, দুর্নীতিতে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না : প্রধানমন্ত্রী

145

বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-যুবলীগ-কংগ্রেস
সন্ত্রাস, দুর্নীতিতে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কাজ করে অনেকে টাকা বানাতে পারে। এই টাকা দিয়ে হয়তো জৌলুস করতে পারে, চাকচিক্য বাড়াতে পারে, আন্তর্জাতিক বড় বড় ব্র্যান্ডের জিনিস পরতে পারে, কিন্তু তাতে সম্মান পাওয়া যায় না।’
তিনি বলেন,‘ এতে হয়তো নিজের ভোগের ভেতর দিয়ে একটা আত্মতুষ্টি পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু দেশের মানুষের কাছে মর্যাদা পাওয়া যায় না। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।’
দেশ গড়ার জন্য যুব সমাজের মেধা ও মননকে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের প্রত্যেকটি নেতা-কর্মীকে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীমূলক লেখা ‘কারাগারের রোজ নামচা’ এবং ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ মনোযোগ দিয়ে পাঠ করে লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে ওঠে কীভাবে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করা যায়, তা থেকে শিক্ষা গ্রহণের আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মানুষের কল্যাণে কী করতে পারলাম সেই চিন্তা যাদের মাথায় থাকে তারা রাজনীতিতে সফল হতে পারেন।’
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যুব সমাজকে বিশেষভাবে সম্পৃক্ত করার প্রচেষ্টা নিয়ে তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের যুবশক্তিই পারে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে দিতে। সে জন্য যুব সমাজের প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার বিরোধী গণআন্দোলনে রাজপথে শহিদ নূর হোসেন, বাবুল, ফাত্তাহ এবং শুক্রাবাদের মিলনের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘প্রত্যেকটি আন্দোলন-সংগ্রামে আমি দেখেছি যুবলীগ অগ্রণী ভ’মিকা নিয়েছে। আবার মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই যুবকরাই জাতির পিতার আহবানে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলে নিয়ে নিজের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে এ দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে।’
তিনি বলেন,‘কাজেই সেই যুবসমাজকে আমরা চাই একটা আদর্শ হিসেবে। নিজেদের তাঁরা গড়ে তুলবে।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিগত প্রায় ১০ বছরে বাংলাদেশে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের ওপরে অনেকে বদনাম দিতে চেয়েছিল। কিন্তু পারেনি কারণ সততার শক্তি হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা।’
তিনি এ সময় নাম উল্লেখ না করে ড.ইউনুস এবং সংশ্লিদের পদ্মা সেতুর বিদেশি সাহায্য বন্ধের চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের দেশেরই কিছু স্বনামধন্য লোক যাদের একসময় ব্যবসা দিয়ে ফুলে ফেঁপে উঠতে আমিই সাহায্য করেছি। তারা সে সময় আন্তর্জাতিক সম্মাননা নিয়ে আসলো অথচ দেখা গেল বয়স হয়েছে কিন্তু একটা ব্যাংকের এমডি’র পদ ছাড়তে পারে না।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এদিকে নোবেল প্রাইজ পায় কিন্তু একটি ব্যাংকের এমডি’র পদ ছাড়ে না।’
তিনি বলেন, ‘সেই পদ কেন বয়সের কারণে ছাড়তে হলো সেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পদ্মা সেতু বন্ধে আমেরিকা গিয়ে ধর্ণা দিল এবং তারা আমাদের ওপর দোষ দিল দুর্ণীতির।’
প্রধানমন্ত্রী সে সময় চ্যালেঞ্জ নিলে ওয়াল্ড ব্যাংক দুর্ণীতি প্রমানে ব্যর্থ হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘তারা যখন দুর্ণীতি খুঁজতে গেছে তখন খালেদা জিয়া তারেক রহমান এবং কোকো’র দুর্ণীতিই বেরিয়েছে, আরো অনেকেরটা বেরিয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের কোন দুর্ণীতি পায়নি। বরং আমাদের ঘোষণা অনুযায়ী আমরা নিজন্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে যাচ্ছি।’
দক্ষিণ আফ্্িরকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাগারে থাকার ঘটনার সাদৃশ্য খুঁজে বেড়ানো বিএনপি নেতৃবৃন্দের কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যিনি বিএনপি নেত্রী, যিনি এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেন, দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে। তার তুলনা করে নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে। তার তুলনা করে কার সঙ্গে? আমি তো মনে করি, এটা করে নেলসন ম্যান্ডেলাকে অপমান করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘নেলসন ম্যান্ডেলা তার জাতির স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে কারাগারে ছিলেন। দুর্নীতি করে কারাগারে যাননি।’
খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকার সময়ে তাঁকে হত্যার প্রচেষ্টায় আইভী রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেনেড হামলা করে হত্যা এবং একাধিকবার হত্যা প্রচেষ্টার ও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করায় বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ আমরা যে মহাজোট গড়ে তুলি, আমরা বিপুল ভোটে জয় লাভ করি। সে সময় বিএনপি জামায়াত জোট, তারা কী পেয়েছিল? তারা মাত্র ২৯টি সিট পেয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘২০০৮-এর নির্বাচন নিয়ে তো কেউ কথা বলেনি। বিএনপি যদি এতই জনপ্রিয় সংগঠন হয়ে থাকতো, তাহলে মাত্র ২৯টি সিট পেয়েছিল কেন? তারা মাত্র ২৯টি সিট পেয়েছিল এ কথাটা অনেকে ভুলে যায়।’
বাসস/এএসজি-এফএন/১৭৫৫/-আসাচৌ