ইমার্জিং কাপের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান

168

ঢাকা, ২১ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : ব্যাটসম্যান-বোলারদের নৈপুন্যে এসিসি ইমার্জিং কাপের ফাইনালে উঠেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। আজ টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আফগানিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশের যুবারা। আগামী ২৩ নভেম্বর মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ফাইনালে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। গতকাল প্রথম সেমিফাইনালে পাকিস্তান ৩ রানে হারায় চিরপ্রতিন্দ্বন্দি ভারতকে।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে আফগানিস্তানকে ব্যাটিং করতে পাঠায় বাংলাদেশ। আফগানদের ভালো শুরু করতে দেয়নি বাংলাদেশ। ৭৩ রানে প্রতিপক্ষের ৫ উইকেটের পতন ঘটায় স্বাগতিক বোলাররা। এরমধ্যে আফগানিস্তানের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে শিকার করেন ডান-হাতি পেসার হাসান মাহমুদ। অন্য দু’টি নেন মিডিয়াম পেসার সৌম্য সরকার ও বাঁ-হাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম।
২২ ওভারের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানিস্তান। সেখান থেকে দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন দরবিশ রসুলি ও ওয়াহিদুল্লাহ শফিক। ষষ্ঠ উইকেটে ৬৭ রানের জুটি গড়েন তারা। ৩৪ রান করে শফিক আউট হলে আট নম্বরে নামা তারিক স্তানিকজাইকে নিয়ে ৮৬ রান দলকে এনে দেন রাসুলি। এই জুটিতেই নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রসুলি। ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৭টি করে চার-ছক্কায় ১২৮ বলে ১১৪ রান করেন রাসুলি। স্তানিকজাই’র সাথে সপ্তম উইকেটে ৮৬ রানের জুটি গড়েন রাসুলি। ফলে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২৮ রানের ভদ্রস্ত সংগ্রহ পায় আফগানিস্তান। স্তানিকজাই করেন ৩৩ রান। বাংলাদেশের হাসান ও সৌম্য ৩টি করে উইকেট নেন।
জবাবে জয়ের জন্য ২২৯ রানের লক্ষ্যে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। চতুর্থ ওভারে দলীয় ২৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ৩টি চারে ২১ বলে ১৭ রান করে আউট হন নাইম। এরপর দলের জয়ের ভিত গড়েন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
আফগানিস্তান বোলারদের বিপক্ষে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকেন সৌম্য ও শান্ত। ফর্মে থাকার সুবিধা ভালোভাবেই কাজে লাগিয়ে আবারো হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন দু’জনে। গ্রুপ পর্বে প্রথম দুই ম্যাচে অপরাজিত ৮৪ ও ৭৩ রান করা সৌম্য এবার আউট হন ৬১ রানে। তার ৫৯ বলের ইনিংসে ৩টি করে চার-ছক্কা ছিলো।
সৌম্যর মত হাফ-সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংসটি বড় করতে ব্যর্থ হয়েছেন শান্তও। ৫৯ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেন তিনি। ৬৮ বল মোকাবেলা করে ৫টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন শান্ত। দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য-শান্ত ১০৮ বল মোকাবেলা করে ১০৭ রান যোগ করেন।
দলীয় ১৫৪ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে শান্ত ফিরে গেলে ম্যাচ জয়ের দায়িত্ব পড়ে মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের। সেই কাজটি ভালোভাবে সম্পন্ন করেছেন ইয়াসির আলি ও আফিফ হোসেন। দ্রুত ম্যাচ শেষ করতে উদগ্রীব ছিলেন আফিফ। মারমুখী মেজাজে রান তুলতে থাকেন আফিফ। অন্যপ্রান্তে ইয়াসির ছিলেন সর্তক। তবে ৬১ বল বাকী রেখে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান আফিফ-ইয়াসির। ৮১ বলে অবিচ্ছিন্ন ৭৫ রান করেন তারা। ১টি করে চার-ছক্কায় ৫৬ বলে অপরাজিত ৩৮ রান করেন ইয়াসির। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৬ বলে অপরাজিত ৪৫ রান করেন আফিফ। আফগানিস্তানের আব্দুল ওয়াসি ২টি উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন সৌম্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আফগানিস্তান : ২২৮/৯, ৫০ ওভার (রসুলি ১১৪, শফিক ৩৪, হাসান ৩/৪৮, সৌম্য ৩/৫৮)।
বাংলাদেশ : ২২৯/৩, ৩৯.৫ ওভার (সৌম্য ৬১, শান্ত ৫৯, আফিফ ৪৫*, ওয়াসি ২/৪৬)।
ফল : বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : সৌম্য সরকার (বাংলাদেশ)।