বাসস দেশ-৩৭ : আইপিএস, বিআরআই সাংঘর্ষিক নয়, সম্পূরক : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

252

বাসস দেশ-৩৭
শাহরিয়ার-আইপিএস-বিআরআই
আইপিএস, বিআরআই সাংঘর্ষিক নয়, সম্পূরক : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ১২ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : বাংলাদেশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম মঙ্গলবার বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) ও চীনের ওয়ান বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) সাংঘর্ষিক নয়, সম্পূরক।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টানে আয়োজিত ‘ঢাকা গ্লোবাল ডায়লগ ২০১৯’ এর দ্বিতীয় দিনে ‘কানেক্টিং দ্য ইন্দো-প্যাসিফিক: ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ইনফ্লুয়েন্স’ শীর্ষক আলোচনা সভার দ্বিতীয় দিনে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান জোরালো ও পরিষ্কার। আমরা আইপিএস ও বিআরআই কে পরস্পরের সাথে সাংঘর্ষিক নয়, সম্পূরক মনে করি। তবে এ ব্যাপারে উপসংহারে আসার মত সময় এখনো আসেনি। ইন্দো-প্যাসিফিক একটি অত্যন্ত নতুন ধারণা।’
ভারতের পার্লামেন্ট সদস্য মনিষ তিওয়ারী, ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস এবং ফুদান ইউনিভার্সিটি অব চায়নার ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মিনওয়াং লিনও আলোচনায় অংশ নেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সার্বিক অর্থে ইন্দো-প্যাসিফিক কি সে ব্যাপারে এ অঞ্চলের অধিকাংশ দেশেরই কোন সুস্পষ্ট ধারণা নেই। তিনি বলেন, ‘তবে একটি জিনিস পরিষ্কার যে এই অঞ্চলটি বিশ্ব শক্তি, অর্থনীতি ও সামরিক শক্তির মনযোগ আকর্ষণ করে আছে এবং এজন্যই এ অঞ্চলের দেশগুলোকে যতটা সম্ভব পরস্পরের সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে ও পরস্পরের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।’
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সমৃদ্ধির জন্য যোগাযোগ বৃদ্ধি ও মুক্ত বাণিজ্যের ওপর জোর দিয়ে শাহরিয়ার বলেন, ‘মানুষ অবাধে যাতায়াত করতে চায়, আর এভাবে বাণিজ্যও করতে চায় এবং নিশ্চিতভাবেই আমাদের সকল দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক স্বার্থে বাণিজ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রতিমন্ত্রী বিমসটেকের পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন। বিমসটেক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
বিমসটেক (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল, টেকনিকাল এন্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন) দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশকে নিয়ে গঠিত একটি আঞ্চলিক জোট। সাতটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ এর সদস্য। সদস্য দেশগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভূটান। দেশগুলো বঙ্গোপসাগরের উপর নির্ভরশীল।
কয়েকটি সুনির্দিষ্ট কারণে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো সবচেয়ে সম্ভাবনাময়, তবে এ লক্ষে আমাদের বিমসটেকের প্রতি মনযোগ দিতে হবে।
ভারতীয় হাই কমিশনার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘আমরা ঢাকায় বৈশ্বিক আলোচনার আয়োজন করেছি। এতে বুঝা যায় ঢাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’
ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে ভারতের ভূমিকার ব্যাপারে রিভা বলেন, ভারত বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক দেশ। প্রাকৃতিকভাবেই দেশটি অনেকাংশেই সমুদ্রের উপর নির্ভরশীল। তাই ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ধারণাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটা অধিক থেকে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এই অঞ্চলের জলসীমাকে নিরাপদ, নিশ্চিত ও স্থিতিশীল দেখতে চাই। আমরা এই অঞ্চলে নৌ চলাচলের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, ইন্দো অঞ্চলের দেশগুলোর স্বার্বভৌমত্বের প্রতিও আমরা শ্রদ্ধাশীল। এটা কোন কৌশল, ক্লাব বা দল নয়, ভারত বিশ্বাস করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের কাউকেই এর বাইরে রাখা যাবে না, সকলকে সাথে নিয়েই আমাদের চলতে হবে।’
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার আরো বলেন, এটি সহযোগিতা, আন্তর্জাতিক আইন ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতার ওপর ভিত্তি করেই অঞ্চলটির স্বার্থ সংরক্ষণ করছে।
বাংলাদেশকে ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে উল্লেখ করে রিভা বলেন, উভয় দেশ সর্বস্তরে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য একসাথে কাজ করে যাচ্ছে।
৪৫টি দেশের ১৫০ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের অংশ গ্রহণে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস) ও ভারতের অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) যৌথভাবে এই ডায়ালগের আয়োজন করছে।
বাসস/টিএ/অনু-কেএআর/২০৪৫/কেএমকে