বাসস দেশ-৯ : আইনের সঠিক বাস্তবায়ন হলেই প্রতিবন্ধীরা সমাজের মূল স্রোতধারায় আসবে

226

বাসস দেশ-৯
প্রতিবন্ধী-সংবাদ সম্মেলন
আইনের সঠিক বাস্তবায়ন হলেই প্রতিবন্ধীরা সমাজের মূল স্রোতধারায় আসবে
ঢাকা, ১ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : দেশে বিদ্যমান আইনের সঠিক বাস্তবায়ন হলেই সকল ধরনের প্রতিবন্ধীরা সমাজের মূল স্রোতধারায় আসবে। ফলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) বাংলাদেশ সহজে পৌছাতে পারবে।
আজ রাজধানীর প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে উইমেন উইথ ডিজঅ্যাবেলিটিজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (ডাব্লিউডিডিএফ) উদ্যোগে ‘বিচার ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধী নারীদের প্রবেশগম্যতা সহজ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়।
এতে বলা হয়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষায় বিদ্যমান আইনগুলোর চর্চা বাড়ানোর পাশাপাশি সকলস্তরে এর বাস্তবায়ন সম্প্রসারিত করতে হবে। প্রচলিত আইনগুলো সম্পর্কে সচেতনতাবৃদ্ধি করা এবং প্রতিবন্ধী-বান্ধব প্রক্রিয়ায় আইনী তথ্যের প্রচারণা চালানো ও সকল আইন ও নীতির বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে উন্নয়নের সূচকে বাংলাদেশের এগানো সহজ হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউডিডিএফ-এর নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টি।
প্রবন্ধে বলা হয়,সরকারের পদক্ষেপের কারণে প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার হার কমেছে। সমাজের অসামঞ্জস্য ও অসঙ্গতি তুলে ধরার পাশাপাশি গণমাধ্যম এ্বং বর্তমান সরকারের উন্নয়নের সূচকগুলো তুলে ধরা হয়।এতে বলা হয় সামাজিক আন্দোলন ও ন্যায় সঙ্গত দাবি দাওয়া পূরণে গণমাধ্যম মাইলফলক হিসেবে কাজ করে।
প্রতিবন্ধী নারীদের সুবিচার পাওয়ার জন্য সুপারিশমালা রয়েছে। এর মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে প্রতিবন্ধী নারীদের বিচারপ্রক্রিয়া চালানোর জন্য সুনির্দিস্ট কার্যপদ্ধতি,সকল দেশীয় আইন ও নীতিগুলো সার্বজনীন হওয়া,সকল সেবাসমূহ সবধরনের মানুষের জন্য সমানভাবে উপযোগী হওয়া, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য ইশারা ভাষার ব্যবহার, পরিবারের সদস্য ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কাজ করে এমন সংগঠনের প্রতিনিধিদের উপস্থিত রাখার ব্যবস্থা করা,অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রতিবন্ধী নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, আইনী সহায়তা, দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মস্ংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করা, প্রতিবন্ধী নারীদের ক্ষতিপূরণ পাওয়া এবং দোষী ব্যক্তিকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন,দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও নারীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা,প্রচলিত আইনগুলো সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং প্রতিবন্ধীবান্ধব প্রক্রিয়ায় আইনী তথ্যের প্রচার চালানো উল্লেখযোগ্য।
আশরাফুন নাহার মিষ্টি বলেন, শুধু আইনের বাস্তবায়ন নয় বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধীরা সমস্যা ও সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। প্রতিবন্ধীদের জন্য ঢালু এবং অসমতল ফুটপাত নির্মাণ করেছে সরকার। মোটর সাইকেল ও রিকশা চলাচল ঠেকাতে খুঁটি গেড়ে দেয়ার কারণে এগুলো ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।অন্যদিকে যাত্রী চলাচলের জন্য উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে শিগিরই ২৭০টি বাস আসছে। জানা যায়নি এসব বাসে প্রতিবন্ধীবান্ধব এক্সলেটর,চলমান সিড়ি এবং আসন রয়েছে কি না। প্রবেশগম্যতা না বাড়ার কারণে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীরা তাদের মেধার স্বাক্ষর রাখতে পারছে না।
প্রতিবন্ধী নারীদের পরিসংখ্যান সম্পর্কে প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হাউজহোল্ড জরিপ অনুযায়ী মোট জনসংখ্যার শতকরা ৯.০৭ ভাগ প্রতিবন্ধী মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর হিসেব অনুযাযী সকল উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ১৫ ভাগ প্রতিবন্ধী মানুষ।সেই হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২৪ মিলিয়ন; এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ১২ মিলিয়ন।৯৯ শতাংশ নারী দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। ১ শতাংশের কম প্রতিবন্ধী মেয়ে শিশু বিদ্যালয়ে যাবার সুযোগ পায়। একটি গবেষণা হতে দেখা যায়, দেশের শতকরা ৯৬ ভাগ প্রতিবন্ধী নারী ও মেয়ে শিশু শারীরিক,মানসিক,যৌন ও আবেগীয় নির্যাতনের শিকার। ব্লাস্ট-এর এক গবেষণায় দেখা যায়, শতকরা ৭৮ ভাগ প্রতিবন্ধী নারী ও মেয়ে শিশু বিভিন্ন ধরণের যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয় শুধুমাত্র বাঁধা দেয়ার ক্ষমতা সীমিত বলে।এবং এদেও মধ্যে ১৮ ভাগ পুনঃপুনঃ নির্যাতনের শিকার হয়।
বাসস/এএসজি/এসএস/১৬৩০/-জেহক