ম্যান সিটিকে হারিয়ে শিরোপা দৌঁড়ে এগিয়ে থাকলো লিভারপুল

262

লিভারপুল, ১১ নভেম্বর ২০১৯ (বাসস) : দীর্ঘ ৩০ বছর পর প্রথমবারের মত ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে দারুণভাবে এগিয়ে যাচ্ছে লিভারপুল। রোববার লক্ষ্য পূরণের মিশনে বড় বাঁধা পার করেছে অল রেডসরা। ঘরের মাঠ এ্যানফিল্ডে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটিকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে লিগ টেবিলে আট পয়েন্টের ব্যবধানে শীর্ষস্থানটি ধরে রেখেছে লিভারপুল।
ফাবিনহো ও মোহাম্মদ সালাহ’র গোলে ম্যাচ শুরুর ১৩ মিনিটের মধ্যেই ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল জার্গেন ক্লপের দল। ৫১ মিনিটে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সাদিও মানের ডাইভিং হেডে সিটির দুর্ভাগ্য রচিত হয়। বার্নান্ডো সিলভার ৭৮ মিনিটের গোলে সিটিজেনরা এক গোল পরিশোধ করলেও তা পরাজয় আটকাতে পারেনি। এই নিয়ে শেষ আট ম্যাচে তিন পরাজয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে নেমে গেছে ম্যান সিটি। লিভারপুলের থেকে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান ৯। সর্বোচ্চ ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে লিভারপুল। আট পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে লিস্টার সিটি। সমান ২৬ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে লিস্টারের থেকে পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে চেলসি। টানা তৃতীয় শিরোপা জয়ে লিভারপুলকে ধরতে হলে সিটিকে এখন পাহাড় সমান বাঁধা পেরুতে হবে।
যদিও লিভারপুর বস জার্গেন ক্লপ বলেছেন, ‘নয় পয়েন্টের ব্যবধান হলেও এখনো অনেক পথ বাকি। নভেম্বরে কে এগিয়ে থাকলো সেটা খুব বেশী গুরুত্বপূর্ণ নয়। মে মাসে কে শীর্ষে থাকলো সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
তারকা ডিফেন্ডার অমারিক লাপোর্তের ইনজুরির কারণে গতকালও সিটির রক্ষণভাগের দুর্বলতা চোখে পড়েছে। বিশেষ করে প্রথম দুই আক্রমণ থেকেই মাত্র ১৩ মিনিটের মধ্যে লিভারপুলের দুই গোলে এগিয়ে যাওয়া তারই প্রমাণ দেয়। যদিও সফরকারীদের বিপক্ষে পুরো ম্যাচে বেশ কিছু সিদ্ধান্তের ব্যপারে অবিচার করা হয়েছে বলেই অনেকেই মত দিয়েছেন। ম্যাচের শুরুর দিকে ডি বক্সের মধ্যে ট্রেন্ট আলেস্কান্দার-আর্নল্ডের হাতে স্পষ্টভাবে বল লাগলেও পেনাল্টি থেকে রক্ষা পায় লিভারপুল। উল্টো কাউন্টার এ্যাটাক থেকে ৬ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফ্যাবিনহো সিটি গোলরক্ষক ক্লডিও ব্র্যাভোকে পরাস্ত করলে এগিয়ে যায় লিভারপুল।
সিটি বস পেপ গার্দিওলা বিতর্কিত ঐ সিদ্ধান্তের বিষয়ে ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘এটা নিয়ে আমাকে নয় রেফারিকে প্রশ্ন করুন। আমি দলের পারফরমেন্স নিয়েই কথা বলতে চাই। ম্যান সিটির ম্যানেজার হিসেবে এটি ছিল আমার কাছে অন্যতম গর্বিত একটি পারফরমেন্স।’
লিভারপুল এগিয়ে গেলেও প্রথমার্ধের বেশিরভাগ সুযোগই পেয়েছিল সফরকারীরা। তারই ধারাবাহিকতায় কেভিন ডি ব্রুইনের সুইংগিং ফ্রি-কিক থেকে রাহিম স্টার্লিংয়ের হেড অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়। তবে ১৩ মিনিটে এন্ডি রবার্টসানের নিখুঁত ক্রস থেকে সালাহ কোন ভুল করেননি। এই গোলটির বিষয়ে ক্লপ বলেছেন, ‘আমার মনে হয়না এই ধরনের গোল আমি আগে কখনো দেখেছি। আমরা দ্রুত দু’টি অসাধারণ গোল করেছিলাম যার কারনে জয় নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু পুরো ম্যাচে সিটি যেভাবে খেলেছে তাতে তাদের প্রশংসা করতেই হয়।’
প্রথমার্ধের বাকি সময়টা সিটি নিজেদের দারুণভাবে রক্ষা করেছে। কিন্তু প্রথম ১৩ মিনিটেই মূলত লিভারপুল ম্যাচের ভাগ্য গড়ে নিয়েছিল। বিরতির ঠিক আগে এঞ্জেলিনোর ডিফ্লেকটেড শট পোস্টে লেগে ফেরত আসলে সার্জিও এগুয়েরো সিটির হয়ে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি হাতছাড়া করেন।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে জর্ডান হেন্ডারসনের ক্রস থেকে মানের ডাইভিং হেডে সিটির সব আশা শেষ হয়ে যায়। স্টার্লিংয়ের আরেকটি প্রচেষ্টা ভিএআর’র সহযোগিতায় বাতিল হয়ে গেওে গার্দিওলার হতাশা বাড়তেই থাকে। ম্যাচ শেষের ১২ মিনিট আগে এ্যাঞ্জেলিনোর ক্রস থেকে বার্নান্ডো সিলভা এক গোল পরিশোধ করলেও তা কোন সুখবর দিতে পারেনি। গার্দিওলা বলেছেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন একটি স্টেডিয়ামে আজ সিটি প্রমান করেছে কেন আমরা চ্যাম্পিয়ন। আমাদের থেকে তিনটি দল এগিয়ে আছে যাদের প্রত্যেকেরই প্রিমিয়ার লিগ জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আশা করছি মানসিকভাবে আমরাও চেষ্টা চালিয়ে যাব।’