প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা লন্ডনে কমনওয়েলথ মেলায়

623

ঢাকা, ১০ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : কমনওয়েলথ মেলা ২০১৯-এ নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথ, জাতিসংঘ ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মন্ত্রী লর্ড তারিক আহমেদ।
লন্ডনের কেনসিংটন টাউন হলে গতকাল শনিবার সকালে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে এক অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই-কমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে এ মেলার উদ্বোধন করেন। এবছর বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো কমনওয়েলথ মেলার সভাপতিত্ব করেছে।
লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ একথা জানানো হয়েছে।
মেলায় উদ্বোধনী বক্তব্যে লর্ড তারিক আহমেদ বলেন, “আমার সৌভাগ্য হয়েছিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করার এবং আমি জানি বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষার ব্যাপারে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীও নারী শিক্ষার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন।”
লর্ড আহমেদ কমনওয়েলথ মেলা শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীদের এগিয়ে যেতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে উল্লেখ করেন এবং এবছরের মেলার সুন্দর আয়োজনের জন্য হাইকমিশনার সাইদা মুনাকে ধন্যবাদ জানান।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, নারী শিক্ষায় অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের “প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন” এবং “এজেন্ট অব চেইঞ্জ” পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। শেখ হাসিনা আজ বিশ্বে নারীর উন্নয়ন ও নারী শিক্ষার রোল মডেল।
হাইকমিশনার কমনওয়েলথভূক্ত দেশের নারী শিক্ষা সহায়তায় তহবিল সংগ্রহের জন্য এ মেলায় অংশগ্রহণকারী দেশ, প্রতিষ্ঠান ও মেলায় আগত দর্শকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, মেলায় এবছর প্রথমবারের মত যুক্তরাজ্যের একজন মন্ত্রী যোগদান করলেন, যা মেলাকে বিশেষত্ব দিয়েছে।
তিনি জানান, এবছর বাংলাদেশি-ব্রিটিশদের এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সহযোগিতায় হাইকমিশন কমনওয়েলথ গার্লস্ এডুকেশন ফান্ডের জন্য ১৫ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করেছে। আশা করা হচ্ছে, মেলা শেষে সব মিলিয়ে এ ফান্ডের জন্য গত বছরের ৩৫ হাজার পাউন্ডের চেয়েও বেশি তহবিল সংগ্রহ করা যাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন কমনওয়েলথ কান্ট্রিস লীগ-এর প্রেসিডেন্ট মিস নলিনি পরানাভিতানে, কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের ডেপুটি সেক্রেটারি ড. অর্জুন সুদধু, কমনওয়েলথ গার্ল এডোকেশন ফান্ড-এর চেয়ারম্যান রোক্সানা সেন্ট ক্লেয়ার, কমনওয়েলথ কান্ট্রিস লীগ-এর পেট্রন লুইসা সার্ভিস, ওবিই এবং কমনওয়েলথ মেলার সমন্বয়ক সিসিলিয়া মিউচিমি। যুক্তরাজ্যের প্রবীণ রাজনীতিক লর্ড ডেভিড হাওয়েল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ও মেলায় স্বত:স্ফূর্তভাবে যোগ দেন।
এবারের মেলায় সর্বাধিক সংখ্যক ৩৮টি দেশ এবং এসব দেশের ৩৪টি প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্যবাহী সাজে সজ্জিত স্টলে নানা ধরনের হস্তশিল্প ও রকমারি পণ্য-সামগ্রী প্রদর্শন ও বিক্রি করে।
দিনব্যাপী এ মেলায় আরো ছিলো বাংলাদেশসহ কমনওয়েলথভূক্ত বিভিন্ন দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের পরিবেশনায় ফ্যাশন শো, নাচ ও গান। দেশগুলির মধ্যে ছিল- মালয়েশিয়া, তানজানিয়া, কেনিয়া, ভারত ও জাম্বিয়া।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশি-ব্রিটিশ ডিজাইনারদের ফ্যাশন শো ও বিয়ের পোশাক প্রদর্শনী ও বাংলাদেশি-ব্রিটিশ শিল্পীদের পরিবেশিত বর্ণাঢ্য সাজে লোকনৃত্য, যা মেলায় বাংগালী সংস্কৃতির এক মনোমুগ্ধকর আবহ তৈরি করে। দর্শকরা এসব অনুষ্ঠান গভীর আগ্রহ নিয়ে উপভোগ করেন। বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্টল ছিলো মেলায় আগত রসনা বিলাসীদের পরিতৃপ্তির এক অনন্য আকর্ষণ। শেষে ছিলো র‌্যাফেল ড্র।
কমনওয়েলথের সত্তর বছর পূর্তিতে এবছরের মেলা পেয়েছে ভিন্নতর গুরুত্ব। মেলা উপলক্ষে বাংলাদেশ হাই কমিশন একটি স্মরণিকা প্রকাশ করেছে।