ভোলায় চরাঞ্চলের মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে

168

ভোলা, ৯ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস): জেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবেলায় ঝুঁকিপূর্ণ চরাঞ্চলের মানুষদের নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে। আজ শনিবার বেলা ১২টার মধ্যে সকলকে ৬৬৮টি সাইক্লোণ সেল্টারে নিয়ে আসা হবে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ৫ লাখ মানুষকে আশ্রয় দেয়া যাবে। আর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে জনসাধারণকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়।
জেলা প্রশাসক মো: মাসুদ আলম সিদ্দিক বাসস’কে জানান, যেহেতু ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত চলছে। তাই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাইক্লোন সেল্টারের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সেখানে মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়া গবাদি পশু রাখার জন্য ৩৯টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ লক্ষ্যে মোট ১৩ হাজার সেচ্ছাসেবক মাঠে কাজ করছে। একইসাথে কোষ্টগার্ড, নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে দুূর্যোগকালীন সময়ের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। চাল বরাদ্দ হয়েছে ২০০ মে:টন। এবং ২ হাজার প্যাকেট সুস্ক খাবার বরাদ্দ এসেছে। বিভিন্ন উপজেলায় ইতোমধ্যে খাবার পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে আরো ত্রাণ দেওয়া হবে। এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে প্রতিবন্ধী, শিশু, নারী ও বয়স্কদের সার্বিক নিরাপত্তায় নির্বাহী ম্যোজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ১০ সদস্য বিশিষ্ট ৮টি টিম গঠর করা হয়েছে।
মাসুদ আলম সিদ্দিক বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষদের সকালে সুস্ক খাবার ও দুপুর ও রাতে খিচুরি খেতে দেওয়া হচ্ছে। দুূর্যোগে যাতে কোন প্রাণহাণী না ঘটে সে ব্যাপারে প্রশাসন সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে। একইসাথে সকল রুটে নৌ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পরবর্তি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত।
জেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী (সিপিপি) উপ-পরিচালক সাহাবুদ্দিন মিয়া বাসস’কে বলেন, সিপিবি’র ৬৮০টি ইউনিটে ৩টি করে সংকেত পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ইউনিট’র আওতায় ২ থেকে ৩ হাজার মানুষের বসবাস। উপকূলজুড়ে সাধারণ জনগণকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য হ্যান্ড সাইরেন ও মেগা ফোনের মাধ্যমে আহবান জানানো হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদের মাইকেও প্রচার চালানো হচ্ছে নিরাপদে থাকার জন্য। গত রাত থেকেই মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া খোলা হয়েছে মোট ৮টি কন্ট্রোল রুম। প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ১টি ও ভ্রাম্যমাণ ২৪টিসহ মোট গঠন করা হয়েছে ৯২টি মেডিকেল টিম। এসব টিম মানুষদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি বুলবুল’র প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চারা রোপণ, সেচ, সার কীটনাশক, বালাইনাশক প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার জন্য আহবান জানানো হয়েছে।
এদিকে ঘুর্ণিঝড় বুলবুল’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ভোলায় শুক্রবার সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেই সাথে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। নদী ও সাগর ক্রমশই উত্তাল হয়ে উঠছে। অনেক জেলেদের নিরাপদে অবস্থান করতে দেখা গেছে।