মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন মাহজাবিন খালেদ

319

ঢাকা, ৭ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকান্ডে জড়িত খুনিদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ (বীর উত্তম) এর কন্যা মাহজাবিন খালেদ। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে মুক্তিযোদ্ধা ও সৈনিক হত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ও অভিমত প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম ট্রাস্ট এ সংবাদ সম্মেলন ও অভিমত প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মাহজাবিন খালেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যিনি নিজে একজন বিচারবঞ্চিত ভুক্তভোগী, ২১ টি বছর যাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে বিচার শুরু করতে, ৩৪ বছর লেগেছে বিচারের রায় কার্যকর করতে। যিনি বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে এসে জাতিকে কিছুটা হলেও কলঙ্কমুক্ত করেছেন। যিনি শত বাধা পেরিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন। তিনি নিশ্চয়ই মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানীদের হত্যার বিচারের ব্যবস্থা করবেন।’ তিনি বলেন, ‘পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বর একটি প্রাণঘাতী সেনা অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে, সেদিন কোনো বিপ্ল¬ব হয়নি। যারা সেনাবাহিনীতে চেইন অব কমান্ড প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন, যারা সংবিধান ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন তাদেরই সেদিন হত্যা করা হয়।’
খালেদ মোশাররফ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মাহজাবিন বলেন, ‘আপনারা জানেন, কোন পরিস্থিতিতে কারা, কার ইঙ্গিতে মুক্তিযুদ্ধের লড়াকু সৈনিক খালেদ মোশাররফ বীর উত্তমকে হত্যা করে। খালেদ মোশাররফ কখনই কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের শায়েস্তা করে সেনাবাহিনীতে চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনাই ছিল তার লক্ষ্য।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘৬ নভেম্বর রাত ১২টার পর ঢাকা সেনানিবাস থেকে যখন তথাকথতি সিপাহি বিপ্ল¬বের সূচনা হয়, তখন খালেদ মোশাররফ ও অন্যরা বঙ্গভবনেই ছিলেন। গোলাগুলির সংবাদ শুনে খালেদ মোশাররফ কর্নেল হুদার মাধ্যমে ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক নওয়াজেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার ইউনিটে যান। ভোরের দিকে জিয়াউর রহমান খালেদ মোশাররফের অবস্থান জানার পর তার সঙ্গে কথা বলেন এবং দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এরপরই কিছুসংখ্যক সেনাসদস্য ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে এসে তিনজনকেই গুলি করে হত্যা করে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ‘খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বেই গৃহবন্দী করা হয়েছিল তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে, যিনি মোশতাক চক্রের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন বলেই জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করেছিলেন মোশতাক।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা আবু ওসমান চৌধুরীর কন্যা নাসিমা ওসমান ও ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ প্রমুখ।