বাজিস-৩ বরগুনার জেলেরা ছুটেছেন নদী সাগরে

190

বাজিস-৩
বরগুনা-জেলেরা ছুটছেন
বরগুনার জেলেরা ছুটেছেন নদী সাগরে
বরগুনা, ৩১ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : জেলার জেলেরা বুধবার গভীর রাত থেকে সাগরে ছুটছেন। জাল, নৌকা নিয়ে নেমে পড়েছেন নদীতে। ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাত ১২টায়। গত বছরের মতো এবারেও স্থানীয় জেলেরা নিষেধাজ্ঞা শতভাগ মান্য করে সততার নজির রেখেছেন। অবরোধ বা নিষেধাজ্ঞা শেষে টানা পাঁচমাসের জন্য জেলেদের বিশাল কর্মযজ্ঞ আবার শুরু হয়েছে। চলবে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্ট জেলে সূত্রগুলো জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা বা অবরোধ শুরুর আগের দিন ৮ অক্টোবর সাগর থেকে ফিরে আসেন তারা। দীর্ঘ অবসরে ট্রলার ও জাল মেরামতের পাশাপাশি পরিবারের সঙ্গেই দিন কাটিয়েছেন। জেলে ট্রলারে ১৭ থেকে ২০ জন করে জেলে কাজ করেন। সবাই সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন। গভীর রাতেই সমুদ্রে রওনা দিয়েছে অধিকাংশ ট্রলার। বাকিগুলো বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যাওয়া শুরু করেছে। তবে নদীর জেলেরা রাতেই জাল ফেলে সকালে স্থানীয় বাজারগুলোতে ইলিশ নিয়ে এসেছেন। যদিও দাম আকাশ ছোঁয়া। তবুও সাধারণ মানুষের স্বস্তি যে, ইলিশ আসালে বাজারের অন্যান্য মাছের দর কমে যাবে।
বরগুনাসহ উপকূলীয় এ অঞ্চলের প্রায় তিন লাখ জেলে, ফাতরা, সোনাকাটা, আশারচর সুন্দরবন সংলগ্ন আলোর কোলসহ আশপাশের চর এলাকায় মাছ শিকার করে। ইলিশের পাশাপাশি নানা ধরনের মাছ ধরে তারা জীবিকা নির্বাহ করেন। সাগর থেকে নির্দিষ্ট জাতের মাছ সংগ্রহ করে চরে এসে তা শুঁটকিও করেন। বিভিন্ন এলাকার মহাজনরা ইতোমধ্যে জেলেদের সঙ্গে যোগাযোগও সম্পন্ন করেছেন। জেলেরা জানান, জলদস্যুরা আবারো মাথাচারা দিতে শুরু করেছে। তাদের দাবি সাগর এলাকায় র‌্যাব ও কোস্টগার্ডের স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনের।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানিয়েছেন, গত বছরের মতো এবারও বরগুনার জেলেরা সরকারের নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করেছে। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে কোনো জেলেকে নদী-সাগরে জাল ফেলতে দেখা যায়নি। ইলিশ প্রজনন ঘটাতে সরকার সফল হয়েছে। এখন জাটকা রক্ষা করতে পারলে আগামীতে ইলিশ আরও কয়েক গুণ বাড়বে বলে মনে করি।
পাথরঘাটা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিষেধাজ্ঞার মধ্যে অসাধু জেলেদের ইলিশ শিকারের খবর পাওয়া গেলেও উপকূলীয় বরগুনা তার ব্যতিক্রম। এখানকার কোনো জেলে নিষিদ্ধ সময়ে নদী-সাগরে জাল ফেলেনি। জেলে, মহাজনসহ সর্বস্তরের মানুষের আন্তরিক সহযোগিতায় এবারের অবরোধ সফল হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে দ্বিতীয়বারের মতো ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, কেনা-বেচা, মজুদ ও বিনিময় স¤পূর্ণ বন্ধ রাখে সরকার।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, জলদস্যু নির্মূলে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। বিভিন্ন সময় র‌্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী অভিযান চালিয়ে জলদস্যুদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসে। জেলেরা যাতে নির্বিঘেœ ইলিশ শিকার করতে পারে, সে বিষয়ে সরকার সচেষ্ট রয়েছে।
বাসস/সংবাদদাতা/১০-১২/নূসী