প্রান্তিক কৃষকদের হয়রানি মেনে নেয়া হবে না : খাদ্যমন্ত্রী

195

দিনাজপুর, ৩০ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের কারণে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের হয়রানি কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না। তিনি আজ বুধবার দুপুরে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে এ জেলার খাদ্য কর্মকর্তা ও খাদ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টদের সমন্বিত বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। ‘আমন ধান ক্রয় ও চাল সংগ্রহ অভিযান’ সফল করতে এ বৈঠক আহ্বান করা হয়। জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন।
মন্ত্রী বলেন, খাদ্য বিভাগকে যে কোন মূল্যে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। প্রয়োজনে সরকার খাদ্য বিভাগের ভিতরেও শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করে কলঙ্কমুক্ত করবে। সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেনে, ‘খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের মনে যদি পোকা না থাকে তাহলে খাদ্য গুদামের চালে কখনই পোকা ধরবে না।’
রংপুর বিভাগে ১টি সিএসডি গুদাম করার জন্য সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্যোগের কারণে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়সম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন,অন্যান্য বারের চেয়ে এবার বোরো মৌসুমে সবচেয়ে বেশি চাল কেনা হয়েছে। চলতি আমন মৌসুমে আরও বেশি চাল ক্রয় করে কৃষকদের উৎপাদিত ধানের সঠিক মূল্য দেয়া হবে। কৃষকেরা যাতে তাদের অর্জিত ধানের সঠিক মূল্য পায় সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে বর্তমানে ১৫ লাখ মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে। মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত ছিল। সরকার কৃষকদের কষ্ট লাঘবে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়ে উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছে। কৃষকরা তাদের কষ্টে উৎপাদিত ধানের যাতে ন্যায্য মূল্য পায় সে ব্যাপারে প্রশাসনের সকলকে খেয়াল রাখার জন্যও তিনি নির্দেশ প্রদান করেন।
মন্ত্রী চালকল মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ধান ও চাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে খাদ্য বিভাগের কাছে যে সব চালকল মালিক গ্রুপের পক্ষ থেকে চালকলের যে তালিকা দেয়া হয় সেগুলো থেকেই ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ দেয়্ হয়। বরাদ্দকৃত মিলগুলোর মধ্যে অনেক মিল একেবারে অচল হয়ে পড়েছে। তাদের কাছ থেকে নিম্ন মানের ধান ও চাল গুদামে আসছে। যে সকল মিলের কার্যক্রম একেবারে অচল, সে সকল মিলের তালিকা না পাঠানোর জন্য তিনি চালকল গ্রুপ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।
ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি গমের উৎপাদন কমে যাওয়া প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে আশঙ্কাজনকহারে গমের আবাদ কমে যাচ্ছে। সরকারকে প্রতি বছর ৭ লক্ষ মেটিক টন গম আমদানী করতে হয়। তিনি বলেন, কৃষি বিভাগ আগামীতে ধানের পাশাপাশি গমের আবাদ বাড়ানোর জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে।
মন্ত্রী বলেন, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের কারণে কৃষকরা প্রতিনিয়ত নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এধরনের কর্মকান্ড কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। নামমাত্র কয়েকজন কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করে ছবি ফেসবুকে ও সংবাদপত্রে প্রকাশ করা চলবে না। প্রকৃত পক্ষে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করে কৃষকদের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম. মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি, জাকিয়া তাবাসসুম জুই এমপি, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মোছাঃ নাজমানারা খানম, পরিচালক (সংগ্রহ) জুলফিকার রহমান, রংপুরের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক রায়হানুল কবিরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।