লেখক, চিন্তাবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী আহমদ ছফার জন্মদিন আগামীকাল

406

ঢাকা, ২৯ জুন ২০১৮ (বাসস) : লেখক, চিন্তাবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী আহমদ ছফার জন্মদিন আগামীকাল।
তিনি ১৯৪৩ সালের ৩০ জুন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার গাছবাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার লেখায় বাংলাদেশি জাতিসত্তার পরিচয় নির্ধারণ প্রাধান্য পেয়েছে। তিনি ২০০২ সালে সাহিত্যে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন। জীবদ্দশায় আহমদ ছফা তার প্রথাবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য বুদ্ধিজীবি মহলে বিশেষ আলোচিত ছিলেন।
১৯৭১ সালে ‘লেখক সংগ্রাম শিবির’ গঠন এবং এর বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় অংশ নেন আহমদ ছফা। পরে কলকাতায় গিয়েও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে ‘দাবানল’ নামের পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি জার্মান ভাষার ওপর গোথে ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন। জার্মান জ্ঞানই তাকে গোথের অমরকর্ম ‘ফাউস্ট’ অনুবাদে সাহস জুগিয়েছে। গান, গল্প, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, অনুবাদসহ সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখা মিলিয়ে ৩০টির বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন।
আহমদ ছফা সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখায় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। গল্প, গান, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, অনুবাদ, ইতিহাস, ভ্রমণ কাহিনী মিলিয়ে তিরিশটির বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার জীবদ্দশায়ই আহমদ ছফা রচনাবলি প্রকাশ শুরু হয়। তার রচনাবলী ৯ খন্ডে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রথম উপন্যাস ‘সূর্য তুমি সাথি’ ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া তার উল্লেখযোগ্য রচনাবলী হলো, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘অলাতচক্র’ (১৯৯৩), বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস (১৯৭২), ‘ওঙ্কার’ (১৯৭৫), বাঙালি মুসলমানের মন (১৯৮১), একজন আলী কেনানের উত্থান-পতন (১৯৮৮), অলাতচক্র (১৯৯৩), গাভী বিত্তান্ত (১৯৯৫), অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী (১৯৯৬), পুষ্পবৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ (১৯৯৬), ফাউস্ট (১৯৮৬), যদ্যপি আমার গুরু (১৯৯৮) ইত্যাদি বাংলা সাহিত্যে বিশেষ সংযোজন। তার প্রবন্ধ দেশের রাজনীতি ও ইতিহাসের অনবদ্য দলিল এবং এ ক্ষেত্রে ‘বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
প্রতিষ্ঠানবিরোধী আহমদ ছফা ১৯৭৫ সালে লেখক শিবির পুরস্কার ও ১৯৯৩ সালে বাংলা একাডেমীর সাদত আলী আখন্দ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ২০০১ সালের ২৮ জুলাই অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।