বাজিস-২ : মেহেরপুরে লাউ চাষ করে লাভবান হচ্ছে কৃষক

129

বাজিস-২
মেহেরপুর- লাউ চাষ
মেহেরপুরে লাউ চাষ করে লাভবান হচ্ছে কৃষক
॥ দিলরুবা খাতুন ॥
মেহেরপুর, ২৮ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়ন পরিষদের কোলঘেঁষে রাস্তার পাশের জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। পোকা প্রতিরোধের জন্য এর চারিদিকে জাল দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে । ভেতরে তিনফুট উঁচু করে বেড়া ও মাচা। মাচায় ও বেড়ায় লকলকে সবুজ ডগায় লাউয়ের কুুঁড়ি ধরেছে থরে থরে। এখানে উৎপাদিত লাউ জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রফতানি হচ্ছে বলে জানালেন চাষিরা।
মেহেরপুর জেলায় এবার প্রায় ২শ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। জেলায় এবার অন্তত ৫ হাজার মেট্রিক টন লাউ উৎপাদন হবে। মেহেরপুর জেলা থেকে বর্তমানে রোজ অন্তত ১৫ লরি লাউ বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হচ্ছে।
সদর উপজেলার বুড়িপোতা গ্রামের লাউচাষি আবু ওসমান জানান, তিনি এবার দুই বিঘা জমিতে লাউ চাষ করেছেন। গড়ে প্রতিদিন তার জমি থেকে ৩শ টি করে লাউ সংগ্রহ হচ্ছে। যার দাম প্রায় ৩ হাজার টাকা। তিনি ওই জমি থেকে মোট সাড়ে তিন মাস থেকে চার মাস পর্যন্ত লাউ সংগ্রহ করতে পারবেন। কীটনাশক ও পোকা মুক্ত হওয়ার কারণে তার লাউয়ের চাহিদা অনেক। তার সাফল্য দেখে অনেকেই লাউচাষে আগ্রহী হয়েছে। তিনিও অন্যদের দেখে আগ্রহী হয়ে লাউচাষ করেন বলে জানান। তার সাফল্যে আশ পাশের গ্রামগুলোতেও লাউচাষে মেতেছে কৃষকরা। বাণিজ্যিকভাবে এ লাউ চাষ করেই শত কৃষকের ভাগ্য বদলাচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে।
কৃষকরা বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে লাউচাষ করতে বাঁশের মাচা, বীজ, সারসহ শ্রমিক খরচ মিলে বড় জোর খরচ হবে ১৫ হাজার টাকা। আর লাউয়ের দাম পাওয়া গেলে অন্তত ৫০ হাজার টাকা আয় হবে। সেক্ষেত্রে এক বিঘা জমি থেকেই একজন কৃষকের আয় হবে ৪০ হাজার টাকা। লাউয়ের চাষে সুবিধা লাউয়ের ডগা সবজি হিসেবে বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠে আসে।
সদর উপজেলার ঝাউবাড়িয়া গ্রামের লাউচাষি নাসির আলী বলেন- মাত্র ১১ কাঠা জমিতে লাউ লাগিয়েছিলাম। এপর্যন্ত ৮হাজার টাকা পেয়েছি। এখন পর্যন্ত জমিতে যে লাউ আছে, তা বিক্রি করে এখনও ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা হবে।
মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রামের মাঠ ও সবজি বাজার যথাক্রমে ঘুরে দেখা গেছে মাঠে যতœ আত্মি করে চাষি লাউ আবাদ করেছে। বাজারজাতের জন্য কোন কোন লাউচাষি জমি থেকে লাউ সংগ্রহ করছে।
বুড়িপোতা ইউনিয়নের শালীকা গ্রামের মাঠে লাউচাষি মিরাজুল আলীকে দেখা গেল জমিতে ‘সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী’ গানের সুরে সুরে জমি থেকে লাউ সংগ্রহ করতে। তিনি বলেন- গতবছর ১বিঘা জমির লাউ বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা পেয়েছি। এবছরও ৫০ হাজার টাকা হবে বলে আশা করছি। তিনি আরও জানান- স্থানীয় বাজারসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে লাউয়ের চাহিদা থাকায় প্রতিটি লাউ ১০/১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. আক্তারুজ্জামান জানান- লাউ চাষে কৃষকের লোকসান হয়না। কারণ লাউয়ে ফলন না হলেও লাউলতার ডগা কেটে বিক্রি করেই উৎপাদন খরচ তোলা যায়। এজন্য কৃষকরা লাউ আবাদে আগ্রহী হয়।
বাসস/সংবাদদাতা/১২-২১/নূসী