বাজিস-৫ : নীলফামারীতে আগাম সবজি আবাদ করে স্বাবলম্বী শতাধিক কৃষক

150

বাজিস-৫
নীলফামারী -সবজি চাষ
নীলফামারীতে আগাম সবজি আবাদ করে স্বাবলম্বী শতাধিক কৃষক
নীলফামারী, ২৭ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : জেলা সদরে আগাম শীতকালীন সবজি আবাদ করে স্বাবলম্বী হয়েছে শতাধিক কৃষক। এসব কৃষক পরিবারে নেই এখন অভাব-অনটন, বেড়েছে জীবনযাত্রার মান। সংগলশী ইউনিয়নের সুবর্ণখুলি গ্রামের নিমাই চন্দ্র রায় (২৭) তাদেরই একজন।
ওই পরিবারটির কৃষি জমি রয়েছে ১ একর। পাঁচ বছর আগেও পরিবারটির ছিল অর্থনৈতিক সংকট। কৃষির আয় থেকে চার সদস্যের পরিবারের চলতো না ভরণপোষণ। একারণে ধারদেনা লেগেই ছিল পরিবারটিতে। এরপর থেকে আগাম সবজি আবাদ করে ফিরে এনেছে পরিবারের স্বচ্ছলতা।
এবারে নিমাই চন্দ্র রায় সবজি চাষে ব্যবহার করছেন ৬৮ শতক জমি। এর মধ্যে আবাদ করেছেন লাউ ৪ শতক জমিতে, মূলা ১০ শতকে, বেগুন ১০ শতক, শিম ১০ শতক, হলুদ ৫ শতক, আলু ৩৩ শতকে। গত বছর একই পরিমান জমিতে সবজি আবাদ করে আয় করেছেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এবারে ইতিমধ্যে বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছেন লাউ, বেগুন। ফলনও ধরেছে ভালো, আগাম চাষে দাম পাচ্ছেন বাজারে। গত বছরের চেয়ে অধিক আয়ের আশা করছেন তিনি।
তিনি জানান, শীতকালীন এসব সবজির ফলন উঠিয়ে একই জমিতে আবাদ করবেন ভুট্টাসহ অন্যান্য গ্রীস্মকালীন ফসল। এসব ফসল থেকে আয় আসবে অন্তন্ত ৫০ হাজার টাকা। সারা বছরের ওই আয় দিয়েই স্বনির্ভর হয়েছে তার ৪ সদস্যের পরিবার।
নিমাই বলেন,‘সবজি আবাদের আগে পরিবারের অভাব-অনটন ছিল। ধারদেনা করে প্রয়োজন মেটাতে হতো। গত ৫ বছরের আগাম সবজি আবাদ করে সে ধারদেনা পরিশোধ করে ভালো আছি আমরা।’ তাদের পরিবার এখন স্বনির্ভর বলে দাবি করেন তিনি।
ওই গ্রামে অনেক কৃষক আবাদ করছেন আগাম সবজি। নিমাই চন্দ্র রায়ের ন্যায় তারাও হয়েছে স্বনির্ভর। তাদের মধ্যে গ্রামের হরিপদ রায় (৪০) বলেন,‘আগে যে পরিমান জমি ছিল এখনো তাই আছে। আবাদের কৌশল জানা না থাকায় অভাব অনটনে দিন কেটেছে। এখন আগাম শীতকালীন সবজি আবাদ করে অভাব তাড়িয়েছি। পরিবারের ৫ সদস্যের ভরণপোষণের জন্য আর চিন্তা করতে হয়না। এখন সমাজেও আমাদের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।’
কৃষি বিভাগ জানায়, জেলা সদরের সংগলশী, সোনারায় এবং লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের শতাধিক কৃষক আগাম সবজি চাষের সঙ্গে জড়িত। আগাম আবাদে দাম ভালো পাওয়ায় এসব কৃষক পরিবার আগের তুলনায় স্বাবলম্বী। সামাজিক মর্যাদাসহ বেড়েছে তাদের জীবনযাত্রার মান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল কাশেম আযাদ বলেন, জেলায় এবার ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম আলুর পাশাপাশি ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। ইতিমধ্যে সবজি বাজারে উঠেছে। আর কিছুদিনের মধ্যে আলু উঠতে শুরু করবে। আগাম ফসল উঠায় কৃষরা দাম বেশী পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন। একারণে দিনদিন আবাদের পরিমাণ বাড়ছে।
বাসস/সংবাদদাতা/১৪০১/নূসী