ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইটের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন মিলার

397

ঢাকা, ২৬ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস): মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল এফ মিলার বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আরো বেশি ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি করতে পুনরায় ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট চালু করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
শুক্রবার রাতে ঢাকার আমেরিকান ক্লাবে নিউইয়র্কের পাঁচ জন স্টেট সিনেটরের সম্মানে আয়োজিত এক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘পুনরায় ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট চালু করতে আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।’
২০০৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটটি চালু ছিল। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করত। কিন্তু বর্তমানে বিমান অথবা বাংলাদেশের অন্য কোন এয়ারলাইন্সের যুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদন নেই। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) সিভিল এভিয়েশন অথোরিটি, বাংলাদেশ (কাব) এর মর্যাদা হ্রাস করে ক্যাটাগরি-২ করেছে।
যদিও, কাব যুক্তরাষ্ট্রের এফএএ’র শর্ত পূরণে ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের অডিট দলকে পুনরায় ক্যাটাগরি ১ প্রদানের জন্য বাংলাদেশে এসে সরেজমিনে সবকিছু দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
নিউইয়র্ক স্টেট বিধায়কদের আমন্ত্রণ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত মিলার দু’দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে আরো বেশি শিক্ষা ও সংস্কৃতিক বিনিময়ের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি কয়েকজন বাংলাদেশী পার্লামেন্ট সদস্যকে নিউইয়র্ক সফরের আমন্ত্রণ জানান।
নিউইয়র্ক সিটি স্টেটের ৫ সিনেটর বাংলাদেশে সপ্তাহব্যাপী এই সফরে ব্যাপক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছেন।
তারা বিভিন্ন ব্যাপারে নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রতি জোরালো সমর্থন ও তাদের সহযোগিতা দিয়ে আসছেন।
সিনেটর লুইস সেপুলভেডা’র নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- লিরয় কোমরি, জেমস স্কোউফিস, কেভিন এস পার্কার ও জন সি লিউ। এছাড়াও প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তিন জন স্টাফ সদস্য রয়েছেন। তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে তারা বাংলাদেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন এই অভ্যর্থনার আয়োজন করে।
সিনেটররা সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, এই সফর তাদের চোখ খুলে দিয়েছে। এদেশের তারা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসায় ব্যাপক সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছেন।
সিনেটর ল্ইুস বলেন, ‘নিউইয়র্কে ফিরে গিয়ে আমরা বাংলাদেশ ও নিউইয়র্ক ব্যবসা ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক থেকে সুবিধা পেতে পারে সেজন্য চ্যানেল খোলা নিশ্চিত করতে আমাদের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় জনপ্রতিনিধিদের উৎসাহিত করব।’
তিনি নিউইয়র্কের ব্রনক্স থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। তার এলাকায় বাংলাদেশী কমিউনিটি দ্বিতীয় বৃহত্তম।
তিনি দেখেছেন যে, দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সর্বোচ্চ সুযোগের জন্য ঢাকা-ইউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট শুরু করা প্রয়োজন।
এই সিনেটর আরো বলেন, দেশে ফিরে তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে শিক্ষা কর্মসূচি বিনিময়ের জন্য সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক (সিইউএনওয়াই) ও স্টেট ইউনিভার্সিটি অব ইউইয়র্ক (এসইউএনওয়াই)-এর ভাইস চ্যান্সেলরের সঙ্গে দেখা করবেন।
তিনি আরো বলেন, ‘এই প্রথমবারের মতো আমরা এদেশে এলাম। আশা করছি, আগামী বছর বা দুই বছরের মধ্যে নিউইয়র্ক থেকে ১০ প্রতিনিধি নিয়ে আমরা আবার এখানে আসব।’
বিগত ৩০ বছর ধরে নিউইয়র্কের বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করছেন উল্লেখ করে সিনেটর কেভিন বলেন, বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী দেশ। এদেশের মানুষ অত্যন্ত আবেগপ্রবণ।’
তিনি বলেন, ‘অধিকতর ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষে আমি বাংলাদেশী কমিউনিটির সাথে কাজ করতে আগ্রহী।’
মানবিক দিক বিবেচনা করে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য সিনেটররা বাংলাদশের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (যুক্তরাষ্ট্র) ফেরদৌসি শাহরিয়ার, সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশনের সভাপতি ই এম চৌধুরী শামিম ও সিইও দিলারা আফরোজ খান রূপা।