অক্সালেড-চেম্বারলেইনের জোড়া গোলে লিভারপুলের বড় জয়

191

জেঙ্ক (বেলজিয়াম), ২৪ অক্টোবর ২০১৯ (বাসস) : মিডফিল্ডার এ্যালেক্স অক্সালেড-চেম্বারলেইনকে খুব একটা মূল একাদশে সুযোগ দেননা লিভারপুল বস জার্গেন ক্লপ। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কাল বেলজিয়ামের ক্লাব জেঙ্কের বিপক্ষে প্রথম একাদশে খেলতে নেমেই বাজিমাত করেছেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার। তার দুই গোলের সাথে সাদিও মানে ও মোহাম্মদ সালাহ’র গোলে জেঙ্ককে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
ইনজুরির কারণে গত মৌসুমের প্রায় পুরোটাই মাঠের বাইরে ছিলেন অক্সালেড-চেম্বারলেইন। এবারের মৌসুমেও তার উপস্থিতি ছিল অনিয়মিত। বেলজিয়ামের লুমিনাস এরিনাতে ম্যাচ শুরু দুই মিনিটের মধ্যেই তিনি লিভারপুলকে এগিয়ে দেন। এরপর ৫৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ম্যাচের শেষের দিকে মানে ও সালাহ আরো দুই গোল করার পর স্টিফেন ওডে জেঙ্কের হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন।
ম্যাচ শেষে ক্লপ বলেছেন, ‘অবশ্যই এটা তার জন্য অসাধারণ মুহূর্ত। দলে এর আগেও অক্সের পারফরমেন্স এমনই ছিল। গোলগুলো অসাধারণ হয়েছে, তবে সব মিলিয়ে পুরো দলই আরো ভাল করতে পারতো। তারপরেও আমি সন্তুষ্ট।’
এর আগে দলের আরেক অনিয়মিত খেলোয়াড় এ্যাডাম লালানা প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে গোল করে দলকে মূল্যবান এক পয়েন্ট উপহার দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে ক্লপ বলেছেন, ‘এই গোলগুলো সত্যিকার অর্থেই গুরুত্বপূর্ণ। গত রোববার এ্যাডাম গোল করেছে, আর এখন ওক্স। তাদেরকে দলে ফিরে পাওয়াটাও স্বস্তির।’
২৬ বছর বয়সী অক্সালেড-চেম্বারলেইন গুরুতর হাঁটুর ইনজুরি থেকে ফিরে এসে গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে বদলী বেঞ্চে থাকলেও খেলার সুযোগ পাননি। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন, ‘এই টুর্নামেন্টে খেলতে পারাটা বিশেষ কিছু। গত বছর খেলোয়াড়রা যা করেছে তা ছিল অনন্য। বেঞ্চে বসে সেটা উপভোগ করার আনন্দও অনেক বেশী। ঐ ম্যাচের পর এই প্রথমবারের মত আমি মূল একাদশে ফিরেছি। ম্যাচে ফিরেই দুই গোল পাওয়াটা বোনাস।’
নাপোলির বিপক্ষে ২-০ গোলের পরাজয় দিয়ে মৌসুম শুরু করা লিভারপুরের গ্রুপ-ই’তে এটি টানা দ্বিতীয় জয়। গ্রুপের শীর্ষে থাকা নাপোলির থেকে এক পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অল রেডসরা। ক্লপের দলের জন্র প্রতিযোগিতার এই পর্যায়ে এসে এ্যাওয়ে জয়টাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই সফরের আগে গ্রুপ পর্বে সাতটি এ্যাওয়ে ম্যাচে মাত একটিতে জয়লাভ করেছিল লিভারপুল। গত মৌসুমেও গ্রুপ পর্বের তিনটি এ্যাওয়ে ম্যাচে পরাজয়ের পরও শিরোপা লাভ করেছিল ক্লপ বাহিনী।
রক্ষণভাগে ট্রেন্ট আলেক্সান্দার-আর্নল্ড ও জোয়েল মাটিপের স্থানে কাল মূল একাদশে জায়গা করে নিয়েছিলেন অক্সালেড-চেম্বারলেইন, ডিয়ান লোভরেন ও নেবি কেইটা। এদিকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে অনুপস্থিত থাকার পর দলে ফিরেছিলেন সালাহ। লিভারপুলের প্রথম সুযোগটিই দারুনভাবে কাজে লাগান অক্সালেড-চেম্বারলেইন। দুই মিনিটের মধ্যে ২৫ গজ দুর থেকে ডান পায়ের জোড়ালো শটে তিনি জেঙ্ক গোলরক্ষক গিটান কাউচকেকে পরাস্ত করেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে ঘরের মাঠে বেলজিয়ান চ্যাম্পিয়দের রেকর্ড বেশ ভাল। যে কারনে এক গোলে পিছিয়ে থেকেও আগ্রাসী খেলাই খেলতে থাকে জেঙ্ক। ২০১১-১২ ও ২০০২-০৩ মৌসুমে তারা শেষ পাঁচটি হোম ম্যাচেই ড্র করেছিল। ম্যাচগুলোতে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল রিয়াল মাদ্রিদ, ভ্যালেন্সিয়া, চেলসি, নাপোলির মত জায়ান্টরা। লিভারপুলের দক্ষ রক্ষনভাগের বিপরীতে অবশ্য জেঙ্ক পেরে উঠেনি। অধিনায়ক এমবোয়ানা এ্যালি সামাত্তা অবশ্য দ্রুতই ম্যাচে ফিরে আসার দারুন একটি সুযোগ নষ্ট করেন। এরপর পল ওনুচু ও জাপান জাতীয় দলের স্ট্রাইকার জুনিয়া ইতো জেঙ্ককে হতাশ করেন। ৩০ মিনিটে ইতোর ক্রস থেকে সামাত্তার হেডে জেঙ্ক সমতা ফিরিয়েছিল। কিন্তু ভিএআর প্রযুক্তি ইতোর অফসাইডের কারনে গোলটি বাতিল করে দেয়।
৫৭ মিনিটে রবার্তো ফিরমিনোর সহায়তায় অক্সালেড-চেম্বারলেইন ব্যবধান দ্বিগুন করেন। এটি ছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুরের ২০০তম গোল। কিন্তু গতকাল রাতে এটাই তাদের শেষ গোল ছিলনা। ৭৭ মিনিটে সালাহ মানেকে দিয়ে তৃতীয় গোলটি করানোর দশ মিনিট পর নিজেও একটি গোল করেছেন।
আগামী মাসে এ্যানফিল্ডে এই দুই দল আবারো একে অপরের মুখোমুখি হবে।