বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : সড়কে আনফিট গাড়ি চলাচল ও এর অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন : প্রধানমন্ত্রী

119

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-নিরাপদ সড়ক
সড়কে আনফিট গাড়ি চলাচল ও এর অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন : প্রধানমন্ত্রী

গাড়ি চালকের জন্য প্রয়োজনীয় বিশ্রামের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চালকরাও মানুষ তাদের যে বিশ্রাম বা আহারের প্রয়োজন রয়েছেন সে বিষয়ে সকলে নজর দেন কি না সন্দেহ, অনেকেই এ নিয়ে ভাবেন না। কাজেই, একজন চালক দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালাতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই একটু ঝিমুনি আসতে পারে আর তখনই দুর্ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, ‘দূরপাল্লার গাড়ির চালকদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, বিকল্প চালক না থাকায় অনেককেই অদক্ষ হেলপারের হাতে গাড়ি ছেড়ে দেয় এবং দুর্ঘটনা ঘটে।’
চালকদের জন্য সরকার উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে চাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ গ্রাম থেকে এসেই গাড়ি বা ভ্যান নিয়ে রাস্তায় নামতে পারবে না, তাদের এজন্য প্রশিক্ষণ নিতে হবে এবং লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার এসডিজি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ‘ন্যাশনাল রোড সেফটি স্ট্র্যাটেজিক অ্যাকশন প্ল্যান ২০১৭-২০২০’ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
তিনি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে তাঁর সরকার আরোপিত বিভন্ন বিধি নিষেধ কার্যকরের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে উদ্যোগী হওয়ার আহবান জানান।
যেমন- কোন চালক টানা পাঁচ ঘন্টার বেশি কোন গাড়ি চালাতে পারবে না, অবশ্যই তাকে বিশ্রাম নিতে হবে। দুরপাল্লার যানবাহনে বিকল্প চালকের ব্যবস্থা রাখতে হবে, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে, গাড়ির অনিয়ন্ত্রিত গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ এবং ওভারটেকিং এর মত অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে।
এছাড়া, গাড়ি চালানো অবস্থায় এবং পথচারিদের রাস্তা পারাপার এমনকি রেলপথ ধরে হাঁটার সময়ও সময় মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধ করা, ফুটপাতকে দখল মুক্ত করা, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ করা (সেজন্য ট্রাফিক পুলিশ জরিমানা হিসেবে টোল প্রথা চালু করতে পারে), বিভিন্ন শপিং মল এবং মার্কেটে পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা, মহাসড়কগুলোতে নির্দিষ্ট দূরত্বে চালকদের জন্য বিশ্রামাগার তৈরী প্রভৃতির দিকে নজর দিতে হবে।
তিনি চালক এবং যাত্রীদের জন্য বিশ্রামাগার এবং রিফ্রেসমেন্ট সেন্টার তৈরীতে বেসরকারী উদ্যোক্তাদেরকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
তাঁর সরকার পেশাদার এক লাখ দক্ষ গাড়ি চালক তৈরীর জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, একই সঙ্গে ৩ লাখ দক্ষ দাড়ি চালক তৈরীর জন্য নতুন একটা প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন জেলায় ভেহিক্যাল ইন্সপেকশন সেন্টার এবং ড্রাইভার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এই ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি এ সময় স্কুল পর্যায়ে ট্রাফিক আইন প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা সৃষ্টির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেন।
শিক্ষিত জনগোষ্ঠী কেন ট্রাফিক আইন মানবে না, প্রশ্নটি উত্থাপনকরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় কারো মৃত্যু কারও কাম্য নয়, কেউ পঙ্গুত্ব বরণ করুক সেটাও কাম্য হতে পারে না, কত মানুষের জীবন এভাবে শেষ হয়ে যাচ্ছে সেজন্যই আমরা চাই সব সময় একটা নিরপদ সড়ক ব্যবস্থা থাকুক, দেশে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকুক।
দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই সকলে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন। কারণ, দেশটা আমাদের, একটা মানুষের ক্ষতি হলে সে যেই হোক এদেশের কোন না কোন পরিবারেরইতো সে। কাজেই, সেই পরিবারের ভবিষ্যতটা কি হবে, সেটাওতো চিন্তা করতে হবে।’
নিরাপদ সড়কের জন্য তাঁর সরকার ‘সড়ক পরিবহন আইন- ২০১৮’ প্রণয়ন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আইনটিকে দ্রুত কার্যকর করারও আহবান জানান এবং বলেন, ‘আমরা মহাসড়কগুলো চারলেনে রূপান্তর, বিপজ্জনক বাঁকগুলো মেরামতসহ বিভিন্ন সড়কের উন্নয়ন করছি। ফলে, দুর্ঘটনা কমে এসেছে। জনগণ আরো সচেতন হলে তা একেবারেই কমে আসবে।’
বাসস/এএসজি-এফএন/১৭০০/আরজি