রাজশাহীর বিপক্ষে জয়ের স্বপ্ন দেখছে খুলনা; ঢাকাকে জবাব দিচ্ছে রংপুর; বরিশালের ১৯০ রানে এগিয়ে চট্টগ্রাম

293

ঢাকা, ১৯ অক্টোবর ২০১৯ (বাসস) : ২১তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রথম স্তরের ম্যাচে রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে জয়ের স্বপ্ন দেখছে খুলনা বিভাগ। ম্যাচের চতুর্থ ও শেষ দিন ৯ উইকেট হাতে জয়ের জন্য ১০৮ রান করতে হবে খুলনাকে। অপরদিকে, ম্যাচ জিতে দ্রুতই খুলনার ৯ উইকেটের পতন ঘটাতে হবে রাজশাহীকে।
খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ২৬১ রান করেছিলো রাজশাহী। জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ২২৭ রান করেছিলো খুলনা বিভাগ। ফলে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৪ রানে পিছিয়ে ছিলো খুলনা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৩ রান করেন ইমরুল কায়েস। উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান ৩৫ ও অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাক ৭ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন।
তৃতীয় দিন ১৬তম বলেই আউট হয়ে যান রাজ্জাক। ১২ রান করে পেসার শফিউলের শিকার হন তিনি। তবে এক প্রান্ত আগলে দলের স্কোর বড় করেছেন নুরুল। ওয়ানডে স্টাইলে খেলার চেষ্টা করেছেন তিনি। লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের সহায়তায় সেঞ্চুরির স্বপ্ন দেখছিলেন নুরুল। কিন্তু ১০৯তম ওভারের তৃতীয় বলে খুলনার শেষ ব্যাটসম্যান আল-আমিন আউট হয়ে গেলে সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন নুরুল। ১০টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১২৭ বলে অপরাজিত ৯৭ রান করেন নুরুল। শেষ পর্যন্ত ৩০৯ রানে অলআউট হলে প্রথম ইনিংস থেকে ৪৮ লিড পায় খুলনা।
পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বিপর্যয়ে পড়ে রাজশাহী। ব্যাট হাতে নেমেই ২৮ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। প্রথম তিন উইকেটের দু’টিই নিয়েছেন আল-আমিন হোসেন। জুনায়েদ সিদ্দিকী ৫ ও অধিনায়ক ফরহাদ হোসেন ১১ রান করে আল-আমিনের বলে আউট হন। আরেক ওপেনার মিজানুর রহমানকে খালি হাতে ফেরান বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।
এরপর দলের হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। চতুর্থ উইকেটে ৮৪ রানের জুটি গড়েন তারা। এরমধ্যে হাফ-সেঞ্চুরি করেন শান্ত। তবে অর্ধশতকের আগে ৪৪ রানে থেমে যান মুশফিক। অর্ধশতকের পর থামেন শান্তও। করেন ৫৭ রান। দু’জনকেই শিকার করেন রাজ্জাক।
তাদের বিদায়ের পর রাজশাহীর পরের দিকের ব্যাটসম্যানদের বড় ইনিংস খেলতে দেননি খুলনার বোলাররা। ১৭০ রানেই গুটিয়ে যায় রাজশাহী। জয়ের জন্য ১২৩ রানের টার্গেট পায় খুলনা। খুলনার পক্ষে আল-আমিন-রাজ্জাক ৪টি করে ও মুস্তাফিজ ২টি উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১২৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দিনের শেষ ভাগে মাত্র ৩ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পায় খুলনা। ইনিংসের তৃতীয় বলেই এনামুল হককে হারায় তারা। ৪ রান করে আউট হন তিনি। এরপর অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করেন সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস। সৌম্য শূন্য ও ইমরুল ১১ রানে অপরাজিত আছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
রাজশাহী বিভাগ : ২৬১ ও ১৭০, ৬০ ওভার (শান্ত ৫৭, মুশফিক ৪৪, আল-আমিন ৪/১৭)।
খুলনা বিভাগ : ৩০৯ ও ১৫/১, ৩ ওভার (নুরুল ৯৭, ইমরুল ৯৩, শফিউল ৩/৫৫)।

লিটন-নাইমের জোড়া সেঞ্চুরিতে জবাব দিচ্ছে রংপুর বিভাগ
ঢাকা, ১৯ অক্টোবর ২০১৯ (বাসস) : ওপেনার লিটন দাস ও নাইম ইসলামের জোড়া সেঞ্চুরিতে ২১তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম স্তরের ম্যাচে ঢাকা বিভাগকে দুর্দান্তভাবে জবাব দিচ্ছে রংপুর বিভাগ। ডান-হাতি ব্যাটসম্যান সাইফ হাসানের অপরাজিত ২২০ রানের সুবাদে ৮ উইকেটে ৫৫৬ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ঢাকা বিভাগ। জবাবে লিটনের ১২২ ও নাইমের অপরাজিত ১২৪ রানে তৃতীয় দিন শেষে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রান করেছে রংপুর বিভাগ। তৃতীয় দিন শেষে ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ২২২ রানে পিছিয়ে রংপুর।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিন শেষে গতকাল রংপুরের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ৭১ রান। ৮টি চারে ৬৪ বল মোকাবেলা করে ৫১ রানে অপরাজিত ছিলেন লিটন। তার সঙ্গী নাইমের সংগ্রহ ছিলো ৮ রান।
তৃতীয় দিন ব্যাট হাতে বড় জুটি গড়েছেন লিটন-নাইম। উইকেটে সেট হয়ে ঢাকা বিভাগের বোলারদের বিপক্ষে দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করতে থাকেন তারা। ফলে বড় হতে থাকে রংপুরের স্কোর। মধ্যাহ্ন-বিরতির আগেই সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ পান নাইমও। এতে ২ উইকেটে ১৭৪ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় রংপুর।
বিরতির পর উইকেট পতনের তালিকায় নাম তুলেন লিটন। ১৪টি চারে ১৮৯ বলে ১২২ রান করে পেসার সুমন খানের বলে আউট হন লিটন। তৃতীয় উইকেটে ১৫৪ রান যোগ করেন লিটন- নাইম।
দলীয় ১৯৮ রানে লিটনের আউটের পর দ্রুত ২ উইকেট হারায় রংপুর। অধিনায়ক নাসির হোসেন ১ ও আরিফুল হক ১৭ রান করে আউট হন। তাদের বিদায়ের পর তানবীর হায়দারকে নিয়ে আবারো বড় জুটির চেষ্টা করেন নাইম। এই জুটি গড়ার পথে সেঞ্চুরির স্বাদ নেন নাইমও। তাই তিন অংকে পা দিয়ে অপরাজিত ১২৪ রানে দিন শেষ করেন নাইম। ২৯৬ বল মোকাবেলা করে ১২টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি। হাফ সেঞ্চুরি তুলে ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন তানবীর। ১০১ বলের ইনিংসে ৭টি চার মারেন তিনি। ঢাকা বিভাগের সুমন-শাকিল ২টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ঢাকা বিভাগ : ৫৫৬/৮ ডি, ১৬০ ওভার (সাইফ ২২০*, রনি ৬৫, সাহা ৩/৮৯)।
রংপুর বিভাগ : ৩৩৪/৫, ১০৮ ওভার (নাইম ১২৪*, লিটন ১২২, সুমন ২/৭০)।

৯ উইকেট হাতে নিয়ে ১৯০ রানে এগিয়ে চট্টগ্রাম
ঢাকা, ১৯ অক্টোবর ২০১৯ (বাসস) : ২১তম জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে তৃতীয় দিন শেষে বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ১৯০ রানে এগিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগ। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৫৬ রান করে চট্টগ্রাম। জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ৪ উইকেটে ১০৪ রান তুলেছিলো বরিশাল। আজ তৃতীয় দিনে হাতে থাকা ৬ উইকেট নিয়ে শেষ পর্যন্ত ২১৬ রান পর্যন্ত যেতে সক্ষম হয় বরিশাল। ফলে প্রথম ইনিংসে ১৪০ রানের লিড পায় চট্টগ্রাম। এই লিড নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে তৃতীয় দিন শেষে ১ উইকেটে ৫০ রান করেছে চট্টগ্রাম।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিন শেষে ৪ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন বরিশালের দুই ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ আশরাফুল ও মোসাদ্দেক হোসেন। তৃতীয় দিন মোসাদ্দেক ৪ রান থামলেও, দুই অংকের কোটা স্পর্শ করেন আশরাফুল। ২১ রানে আউট হন তিনি। এরপর সোহাগ গাজীও ব্যর্থতার পরিচয় দেন। ৮ রান করে ফিরেন গাজী। ফলে ১৪২ রানেই সপ্তম উইকেট হারায় বরিশাল। তাই দ্রুতই গুটিয়ে যাবার শংকায় পড়ে বরিশাল।
কিন্তু সেটি হতে দেননি আট নম্বরে নামা নুরুজ্জামান। নয় নম্বরে নামা উইকেটরক্ষক শামসুল ইসলামকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন নুরুজ্জামান। বড় জুটি গড়তে না পারলেও ৩৩ রান দলকে এনে দেন নুরুজ্জামান ও শামসুল। এই জুটি ভাঙ্গেন চট্টগ্রামের সফল স্পিনার নাইম হাসান। ১০ রান করা শামসুলকে শিকার করেন তিনি। এই জুটিতেই হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে নেন নুরুজ্জামান।
শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে নুরুজ্জামানকে বিদায় দিয়ে বরিশালকে ২১৬ রানে আটকে রাখেন নাইম। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ১০৭ বলে ৬০ রান করেন নুরুজ্জামান। চট্টগ্রামের নাইম ৬২ রানে ৪টি উইকেট নেন।
চা-বিরতির আগে বরিশালকে গুটিয়ে দিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে চট্টগ্রাম। এরপর বৃষ্টির কারনে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। এমনকি আলো স্বল্পতার কারনে আগেভাগেই দিনের খেলা শেষ হয়। এসময় ওপেনার ইরফান শুক্কুরকে হারায় চট্টগ্রাম। মোহাম্মদ আশরাফুলের বলে আউটের আগে ১১ রান করেন শুক্কুর। তবে পিনাক ঘোষ ৩০ ও অধিনায়ক মোমিনুল হক ৯ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
চট্টগ্রাম বিভাগ : ৩৫৬ ও ৫০/১, ১৯ ওভার (পিনাক ৩০*, শুক্কুর ১১, আশরাফুল ১/১৯)।
বরিশাল বিভাগ : ২১৬/১০, ৮২.৩ ওভার (নুরুজ্জামান ৬০, রাফসান ৪৯, নাইম ৪/৬২)।