বাসস ক্রীড়া-৮ : টানা দ্বিতীয় জয়ে চোখ বরিশালের; প্রথম জয়ের স্বাদ নিতে চায় চট্টগ্রাম-সিলেট-ঢাকা মেট্রো

100

বাসস ক্রীড়া-৮
ক্রিকেট-এনসিএল
টানা দ্বিতীয় জয়ে চোখ বরিশালের; প্রথম জয়ের স্বাদ নিতে চায় চট্টগ্রাম-সিলেট-ঢাকা মেট্রো
ঢাকা, ১৬ অক্টোবর ২০১৯ (বাসস) : ২১তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) প্রথম রাউন্ডে দুই স্তর মিলিয়ে আট দলের চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।। এরমধ্যে তিনটি ম্যাচই ড্র হয়। তবে প্রথম রাউন্ডেই দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে চমক দেখায় বরিশাল বিভাগ। বৃষ্টিতে প্রথম দিন পরিত্যক্ত হবার পরও দাপটের সাথে তিনদিন লড়াই করে প্রথম রাউন্ডেই জয় তুলে নেয় বরিশাল। ইনিংস ও ১৩ রানের ব্যবধানে সিলেট বিভাগকে হারায় বরিশাল। তাই প্রথম রাউন্ডে দুই স্তর মিলিয়ে জয় পাওয়া একমাত্র দল বরিশাল। এই স্তুরে চট্টগ্রাম বিভাগ-ঢাকা মেট্রোর ম্যাচটি ড্র হয়।
তাই প্রথম রাউন্ডের মত দ্বিতীয় রাউন্ডেও জয় তুলে নিতে চায় বরিশাল। সেই লক্ষ্যে নিয়ে আগামীকাল চট্টগ্রাম বিভাগের মুখোমুখি হচ্ছে বরিশাল। ম্যাচটি হবে ফতুল্লায়। প্রথম রাউন্ডে ঢাকা মেট্রোর সাথে ড্র করায় দ্বিতীয় রাউন্ডে জয়ের স্বাদ নিতে মরিয়া চট্টগ্রাম। প্রথম জয়ের স্বাদ নিতে চায় ঢাকা মেট্রো ও সিলেট বিভাগও। এই দু’দলের ম্যাচ হবে বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে। দু’টি ম্যাচই শুরু হবে সকাল সাড়ে ৯টায়।
রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে প্রথম রাউন্ডে সিলেট বিভাগের বিপক্ষে প্রথম দিন ব্যাট-বল হাতে লড়াই করতে পারেনি বরিশাল। বৃষ্টির কারণে ঐ ম্যাচের প্রথমদিন ভেস্তে যায়। তবে দ্বিতীয় দিন খেলা শুরু হলে টস জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নেয় বরিশাল। ব্যাট হাতে নেমে বরিশালের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বির বিধ্বংসী বোলিং-এ মাত্র ৮৬ রানেই অলআউট হয় সিলেট। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন জাকির হাসান।
১৬ দশমিক ১ ওভার বল করে ২৪ রানে ৬ উইকেট নেন রাব্বি। প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে এটিই তার সেরা বোলিং ফিগার। রাব্বির পাশাপাশি উইকেট শিকারে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন অফ-স্পিনার নুরুজ্জামান। মাত্র ৩ ওভার বল করে শূন্য রানে ৩ উইকেট শিকার করেন তিনি।
সিলেটকে অল্প রানে অলআউট করে দিয়ে বড় লিডের স্বপ্ন দেখে বরিশাল। দলকে বড় লিড এনে দেন ওপেনার শাহরিয়ার নাফীস ও অধিনায়ক ফজলে মাহমুদ। দু’জনই জোড়া হাফ-সেঞ্চুরি করেন। নাফীস ৯৭ বলে ৬৩ ও ফজলে ৭০ রান করেন। অবশ্য দু’জনের বিদায়ের পর পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন। তারপরও ম্যাচের ১৪৫ রানের লিড নিয়ে ৮ উইকেটে ২৩১ রানে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষনা করে বরিশাল।
১৪৫ রানে পিছিয়ে থেকে ম্যাচের তৃতীয় দিন নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ২ উইকেটে ২৭ রান তুলে সিলেট। তাই ম্যাচ জয়ের পথ দেখতে শুরু করে বরিশাল। ম্যাচের চতুর্থ ও শেষ দিন মধ্যাহ্ন-বিরতির পরই সিলেটকে ১৩২ রানে অলআউট করে দিয়ে দুর্দান্ত এক জয়ে স্বাদ নেয় বরিশাল। এই ইনিংসে রাব্বি উইকেটশুন্য থাকেন। তবে তানভীর ইসলাম ৪টি ও মনির হোসেন ৩টি উইকেট নিয়ে বরিশালের জয় নিশ্চিত করেন।এই ইনিংসে দলের পক্ষে জাকের আলী অপরাজিত ৪৫ ও ইমতিয়াজ হোসেন ৩৫ রান করেন। ম্যাচ সেরা হন বরিশালের রাব্বির।
প্রথম রাউন্ডেই জয় পাওয়ায় দ্বিতীয় স্তরের পয়েন্ট টেবিলে সবার উপরে বরিশাল। তাদের পয়েন্ট ৯ দশমিক ৫। হারলেও ১ পয়েন্ট পেয়েছে সিলেট। ১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে সিলেট।
এই স্তরের আরেক ম্যাচে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিলো চট্টগ্রাম বিভাগ ও ঢাকা মেট্রো। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় চট্টগ্রাম। তাসামুল হকের ৯০ ও ওপেনার সাদিকুর রহমানের ৫১ রানে কল্যাণে ২৯০ রানেই গুটিয়ে যায় চট্টগ্রাম। ঢাকা মেট্রোর পক্ষে দুই স্পিনার আরাফাত সানি ৮৭ রানে ৬টি ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৫৫ রানে ৩ উইকেট নেন।
এরপর ব্যাট হাতে নেমে লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় প্রথম ইনিংসে লিড পায় ঢাকা মেট্রো। উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার মাঝেও হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ ও শামসুর রহমান। মাহমুদুল্লাহ ৬৩ ও শামসুর ৫৫ রান করেন। তাদের পর আট নম্বরে নেমে ২২৮ বলে ৮৫ রানের দায়িত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন উইকেটরক্ষক জাভিদ হোসেন। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন দশ নম্বরে নামা শহিদুল ইসলাম। ৯টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৪২ বলে ৮৩ রান করেন শহিদুল। ফলে ৩৫৪ রানে গিয়ে থামে ঢাকা মেট্রোর ইনিংস। এতে প্রথম ইনিংস থেকে ৬৪ রানের লিড পায় ঢাকা মেট্রো। চট্টগ্রামের মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি ১০৩ রানে ৩ উইকেট নেন।
প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে থেকে দলের চার ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তায় ৫ উইকেটে ২২৭ রান করে ম্যাচ ড্র করতে সমর্থ হয় চট্টগ্রাম। মাসুম খান অপরাজিত ৬১, ওপেনার পিনাক ঘোষ ৫৭, তাসামুল হক ৫৩ ও বাংলাদেশ দলের ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল ৪৬ রান করেন। প্রথম ইনিংসে ৩০ রান করেছিলেন তামিম। এই ইনিংসেও ঢাকা মেট্রোর পক্ষে ৩ উইকেট নেন মাহমুদুল্লাহ। তাই ম্যাচে ৬ উইকেট ও ৬৩ রান করায় সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন মাহমুদুল্লাহ।
ম্যাচ ড্র করায় চট্টগ্রামের পয়েন্ট ৩। ঢাকা মেট্রোর ২ দশমিক ৯৯। পয়েন্ট টেবিলে চট্টগ্রাম দ্বিতীয় ও ঢাকা মেট্রো তৃতীয়স্থানে রয়েছে।
বাসস/এএমটি/১৮০৫/মোজা/স্বব