বাসস ক্রীড়া-১ : শেষ মুহূর্তে সুইডেনের সাথে ড্র করে ইউরোর টিকিট পেল স্পেন

122

বাসস ক্রীড়া-১
ফুটবল-ইউরো বাছাই
শেষ মুহূর্তে সুইডেনের সাথে ড্র করে ইউরোর টিকিট পেল স্পেন
প্যারিস, ১৬ অক্টোবর ২০১৯ (বাসস) : ইনজুরি টাইমে রড্রিগো মোরেনোর গোলে সুইডেনের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে ইউরো ২০২০’র চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করেছে স্পেন। তবে সুইজারল্যান্ডের সাথে ২-০ গোলে পরাজিত হওয়ায় বেড়ে গেছে আয়ারল্যান্ডের অপেক্ষা ।
স্টকহোমে ৫০ মিনিটে মার্কোস বার্গের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল স্বাগতিক সুইডেন। কিন্তু বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসে ইনজুরি টাইমের দ্বিতীয় মিনিটে গোল করে স্পেনকে নাটকীয়ভাবে এক পয়েন্ট উপহার দেন মোরেনো। আর এই পয়েন্টেই গ্রুপ-এফ থেকে ২০ পয়েন্টসহ শীর্ষ দল হিসেবেই বাছাই পর্বের বাঁধা পার করেছে স্পেন। যদিও শেষ দু’টি ম্যাচে ড্র করে পয়েন্ট হারিয়েছিল রবার্তো মানচিনির দল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সুইডেনের থেকে পাঁচ ও রোমানিয়ার থেকে ছয় পয়েন্ট উপরে আছে স্প্যানিশরা। বুখারেস্টে নরওয়ের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে ওঠার সুযোগ হাতছাড়া করেছে রোমানিয়া।
স্পেনকে এক পয়েন্ট উপহার দেয়া মোরেনো বলেছেন, ‘স্পেনের মত একটি দলের জন্য চূড়ান্ত পর্বে যাওয়াটা দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। তবে বাছাইপর্বে তা আদায় করে নেয়ারও একটি মূল্য আছে। আমরা এখন চাপমুক্ত হয়ে বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করার চেষ্টা করবো।’
কাল ম্যাচের শুরুটা ভাল হলেও স্বাভাবিক খেলা থেকে বেশ খানিকটা দূরেই ছিল স্পেন। বিশেষ করে দারুণ উজ্জীবিত স্বাগতিক সুইডেনের বিপরীতে স্পেনকে কিছুটা হলেও নার্ভাস মনে হয়েছে। এদিকে উরুর ইনজুরির কারনে দ্বিতীয়ার্ধে গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়াকে হারানোটা স্পেনকে দু:শ্চিন্তায় ফেলেছে। বিশেষ করে চলতি সপ্তাহের শেষে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ দল লিভারপুলের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচকে সামনে রেখে দলের মূল গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়ার এই ইনজুরিতে সবচেয়ে বেশি দু:শ্চিন্তায় পড়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
গ্রুপ-এইচ’এ হ্যারিস সেফেরোভিচের ১৬ মিনিটের গোলের পর ইনজুরি টাইমের তৃতীয় মিনিটে শেন ডাফির আত্মঘাতি গোলে সুইজারল্যান্ড আয়ারল্যান্ডকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে চূড়ান্ত পর্বে সরাসরি খেলার স্বপ্ন টিকিয়ে রেখেছে। জেনেভায় এই জয়ে সুইসরা গ্রুপের শীর্ষে থাকা দুই দল আয়ারল্যান্ড ও ডেনমার্কের থেকে এক পয়েন্ট পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। হাতে রয়েছে আরো দুটি ম্যাচ। অবশ্য আইরিশদের হাতে রয়েছে মাত্র একটি ম্যাচ। ইউরোর চূড়ান্ত পর্বে খেলতে হলে আগামী ১৮ নভেম্বর ড্যানিশদের বিপক্ষে ঐ ম্যাচটিতে জয়ের বিকল্প নেই আয়ারল্যান্ডের।
আয়ারল্যান্ডের কোচ মিক ম্যাককার্থি বলেছেন, ‘ডেনমার্ককে হারিয়ে ইউরো ২০২০’র চূড়ান্ত পর্বের টিকিট পাওয়ার ম্যাচটিই আমাদের জন্য ফাইনাল ম্যাচ।’
সুইজারল্যান্ডও হেড-টু-হেড রেকর্ডে আয়ারল্যান্ডের থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। সেপ্টেম্বরে দুই দলের মোকাবেলার ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। শেষ দুই ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের প্রতিপক্ষ গ্রুপের দুই ছোট দল জর্জিয়া ও জিব্রালটার। সুইস কোচ ভøাদিমির পেটকোভিচ বলেছেন, ‘আজকের ম্যাচের ফলাফল খুব একটা অর্থ বহন করে না। গ্রুপের শেষ দু’টি ম্যাচে অবশ্যই জয়ী হতে হবে।’
গ্রুপ-জে’তে টুরকুর ঘরের মাঠে আর্মেনিয়াকে ৩-০ গোলে পরাজিত করে প্রথমবারের মত ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপে খেলার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে ফিনল্যান্ড। ৩১ মিনিটে ফেডেরিক জেনসেন স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন। এরপর নরউইচ সিটি স্ট্রাইকার টিমু পুক্কি ৬১ ও ৮৮ মিনিটে পরপর দুই গোল করে স্বাগতিকদের জয় নিশ্চিত করেন। এই জয়ে মারকু কানেরভার দল গ্রুপের শীর্ষ দল ইতালির থেকে ৯ পয়েন্ট পিছনে থাকলেও শক্তভাবেই দ্বিতীয় স্থানটি ধরে রেখেছে। গ্রুপ টেবিলের একেবারে তলানিতে থাকা লিচটেনস্টেইনের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে জিততে পারলেও প্রথমবারের মত বড় কোন টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে ফিনল্যান্ড।
এদিকে আগেই চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করা ইতালি কাল নিয়ম রক্ষার ম্যাচে লিচটেনস্টেইনকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বাছাইপর্বে শতভাগ জয়ের রেকর্ড ধরে রেখেছে। শনিবার রোমে গ্রীসের বিপক্ষে ২-০ গোলে জয়ী হয়ে রবার্তো মানচিনির দলের গ্রুপ-জে’র শীর্ষস্থান নিশ্চিত হয়েছিল। ফেডেরিক বার্নারডেশি ম্যাচ শুরু দুই মিনিটের মধ্যেই আজ্জুরিদের এগিয়ে দিয়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধে আন্দ্রে বেলোত্তির দুই হেডের সাথে এ্যালেসিও রোমাগনোলি ও বদলী খেলোয়াড় স্টিফান এল শারাভি দলের বড় জয় নিশ্চিত করেন।
এই জয়ের মাধ্য মানচিনি ইতালির কোচ হিসেবে টানা নয় ম্যাচে জয়ের ১৯৩৮-১৯৩৯ মৌসুমে কিংবদন্তী কোচ ভিট্টোরিও পোজ্জোর রেকর্ড স্পর্শ করলেন। পোজ্জোর অধীনে ইতালি ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে পরপর দু’টি বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করা ছাড়া ১৯৩৬ সালে বার্লিন অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জিতেছিল।
৫৪ বছর বয়সী ইন্টার মিলান ও ম্যানচেস্টার সিটির সাবেক কোচ মানচিনি বলেছেন, ‘আমি তার মত দুটি বিশ্বকাপ ও অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়ের রেকর্ড স্পর্শ করতে বেশি আগ্রহী। তবে এই মুহূর্তে আমার জন্য ইউরো ২০২০ জয় করাই যথেষ্ট।’