বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস পালিত

165

ঢাকা, ১৫ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ ১৫ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শোক দিবস পালিত হয়েছে।
১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে জগন্নাথ হলে সংঘটিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হয়।
এ রাতে দুর্ঘটনায় ২৬ জন ছাত্র, ১৪ জন অতিথি ও কর্মচারীসহ মোট ৪০জন নিহত হন।
দিবসটি পালন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল, হোস্টেল ও প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারি সকাল সাড়ে ৭ টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শোক র‌্যালি সহকারে জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে যান এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ ও নীরবতা পালন করেন।
পরে ঢাবি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে ‘অক্টোবর স্মৃতি’ ভবনস্থ টিভি কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ, জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, সাবেক প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার, ডাকসু’র ভিপি নুরুল হক নুর, জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের ভিপি উৎপল বিশ্বাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এসোসিয়েশন-এর সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম, দুর্ঘটনায় আহত তৎকালীন ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ডেপুটি রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার প্রমুখ।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান নিহতদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সেদিন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ হতাহতদের পাশে দাঁড়িয়েছিল এবং উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছিল।
উপাচার্য আরও বলেন, সচেতনতা ও সাবধানতা অবলম্বনের মাধ্যমে অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা এবং মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ করার কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে উপাচার্য উল্লেখ করেন।
এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্বের জায়গাটি জাগ্রত রাখার পাশাপাশি নিজ নিজ অবস্থানে দায়িত্বের প্রতি সবসময় যতœশীল থাকতে হবে।মানবিক মূল্যবোধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা আমরা যেন হারিয়ে না ফেলি সেদিকে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে।
দিবসটি উপলক্ষে জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী নিহতদের নিয়ে আঁকা তৈলচিত্র ও তৎসম্পর্কিত দ্রব্যাদি প্রদর্শন এবং রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বাদ আছর নিহতদের আত্মার শান্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ সকল হল মসজিদে মোনাজাত করা হয়।সন্ধ্যায় জগন্নাথ হল উপাসনালয়ে কবিতা আবৃত্তি, ভক্তিমূলক গান ও শোক সঙ্গীতের আয়োজন করা হবে। এছাড়া, ‘অক্টোবর স্মৃতি রচনা প্রতিযোগিতা’ ও ‘অক্টোবর স্মৃতি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা’ আয়োজন করা হয়েছে।