বহিরাগতদের খুঁজে দল থেকে বের করে দিতে হবে : জাহাঙ্গীর কবির নানক

214

রংপুর, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, আওয়ামী লীগের ভেতরে বহিরাগত অনুপ্রবেশকারীদেকে সকল পর্যায়ে খুঁজে তাদেরকে দল থেকে বের করে দিতে হবে।
তিনি বলেন, নিজেদের স্বার্থে দল ভারী করার জন্য যারা বিএনপি-জামায়াত থেকে এসব বহিরাগতদের দলে ঢুকিয়ে গ্রুপিং আর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন, তাদেরকে তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে সব স্থান থেকে খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি আজ সোমবার বিকেলে রংপুর টাউন হল মিলনায়তনে আয়োজিত রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা-২০১৯ তে সভাপতিত্বকালে একথা বলেন।
রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি সভার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন এমপি।
বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় রংপুর বিভাগের ছয়টি সাংগঠনিক জেলা, রংপুর মহানগর, সকল উপজেলা, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন কমিটির সকল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীগন উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক প্রধান বক্তা হিসেবে সভায় বক্তৃতাকালে সবাইকে দলের আগামী দিনের করণীয় সম্পর্কে মতামত রাখার জন্য উদাত্ত আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে নেতৃত্বের জন্য প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু সেটা যেন কখনো প্রতিহিংসায় রূপ না নেয়। আমরা দ্রুত রংপুর বিভাগের প্রতিটি উপজেলা ও জেলায় সম্মেলনের মাধ্যমে কাউন্সিল করে কমিটি গঠন করবো।’
নানক তার বক্তব্যে বলেন, জননত্রেী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি নিজ দল থেকেই শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। তিনি ক্যাসিনো-ফ্যাসিনো-সহ কোনও কিছুকেই রেহাই দিচ্ছেন না। দলের যত বড় রথি-মহারথি হোক না কেন, অভিযোগ পেলেই তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
নানক বলেন, দলে কিছু অসাধু মানুষ ঢুকে পড়েছে। যারা দলের বহিরাগত, কোনোদিন দল করেনি, অথচ এখন দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে আছে। তিনি তাদের খুঁজে বের করার জন্য দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আগামী ২১ ও ২২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে জেলা-উপজেলা সম্মেলন শেষ করতে চাই।
আওয়ামী লীগের জেলা-উপজেলা সম্মেলনে নিজের লোক, বাড়ির কাজের লোককেও কমিটিতে রাখার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘জেলা-উপজেলায় গ্রুপিং করলে সেটা বরদাশত করা হবে না।’
নানক আরও বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আর ব্যারিষাটার মওদুদ আহমেদ সাহেবরা বড় বড় কথা বলেন। বুয়েটে আমাদের বোন সনিকে হত্যা করা হলো। কই আপনরা তো খুনিদের গ্রেফতার করেন নাই, তাদের বিচারও করেন নাই। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাউকেই রেহাই দিচ্ছেন না।
প্রধান অতিথি রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, দলকে আরো সুসংগঠিত করতে সব অঙ্গসংগঠনের কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে ঢেলে সাজাতে হবে।
সেই সাথে তিনি সারা বাংলাদেশের জেলা-উপজেলার কমিটির সম্মেলন করে কমিটিগুলোকে গতিশীল করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, এমপি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন চৌধুরী, এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, আবুল কালাম মো; আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, এমপি, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি ও সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল।
এর আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রংপুর জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত শাহীনুর রহমান সোহেল এর পরিবারের লোকজনের সাথে সাক্ষাত করে এবং কবর জিয়ারত করে বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও চিরশান্তি কামনা করে দোয়া ও মুনাজাতে অংশ নেন।