বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ : সমন্বিত প্রচেষ্টায় দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হবো : প্রধানমন্ত্রী

272

বাসস প্রধানমন্ত্রী-২
প্রধানমন্ত্রী-বাণী-দুর্যোগ-প্রশমন-দিবস
সমন্বিত প্রচেষ্টায় দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হবো : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ১২ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে আন্তর্জাতিক রোল মডেল হওয়ার পাশাপাশি একটি দুর্যোগ সহনীয় দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে।
তিনি বলেন, সমনি¦ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হবো।
‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী আজ একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলাদেশে ১৩ অক্টোবর ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০১৯’ উদ্যাপন হতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন (ইউএনডিআরআর) কর্তৃক প্রণীত স্লোগান ‘বিল্ড টু লাস্ট’ এর আলোকে এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘নিয়ম মেনে অবকাঠামো গড়ি, জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি হ্রাস করি’ আমাদের সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্য ও কর্ম কৌশলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলে আমি মনে করি।”
শেখ হাসিনা বলেন, স¦াধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচি প্রণয়নের পথিকৃৎ। তিনি ঘূর্ণিঝড় থেকে জানমাল রক্ষায় ‘মুজিব কিল্লা’ নির্মাণের ব্যবস্থা করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজনের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা হিসেবে ১৯৭৩ সালে ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)’ প্রতিষ্ঠা করেন। যেখানে দুর্যোগ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বর্তমানে ৫৫ হাজার ৫১৫ জন সে¦চ্ছাসেবকের মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দুর্যোগ প্রশমন ও প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। সম্প্রতি দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী হালনাগাদ করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগকে অন্তর্ভুক্ত করে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসমূলক অবকাঠামো উন্নয়নের অংশ হিসেবে এ পর্যন্ত ৩,১৪৫ কি.মি. রাস্তা হেরিং বোনবন্ড, ২৮,৪৯৪টি সেতু ও কালভার্ট, ২৫৫টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র ও ১০০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও ৫,২০৫ কি.মি. রাস্তা হেরিং বোনবন্ড, ১৩ হাজার সেতু ও কালভার্ট, ৪২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, ২২০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ৬৬টি জেলা ত্রাণ গুদাম ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র এবং ৫৫০টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়নের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের স¦রূপ পরিবর্তন করে গৃহহীনদের জন্য ‘দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ’ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে মানসিক স¦াস্থ্য সেবা ও পরাশ্রমের বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে উদ্ভাবনী কর্মী উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও সংগঠনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। তবে আগাম প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে লাঘব করা সম্ভব তার প্রমাণ আমরা রাখতে পেরেছি। ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের মৃত্যু সাত অঙ্ক থেকে নামিয়ে এক অঙ্কে আনতে পেরেছি। বাংলাদেশ দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে আন্তর্জাতিক রোল মডেল হওয়ার পাশাপাশি একটি দুর্যোগ সহনীয় দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে। প্রাকৃতিক এবং মানবসৃষ্ট দুর্যোগজনিত কারণে জনগণের জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি রোধে আমাদের সরকার গত সাড়ে দশ বছরে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন হওয়ার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে দুর্যোগ প্রশমন, প্রস্তুতি, সাড়াদান এবং পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনে আমাদের সাফল্য ধরে রাখতে হবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আপামর জনগণ অবকাঠামো নির্মাণে এ বছরের প্রতিপাদ্য অনুসরণ করে দুর্যোগ সহনীয় দেশ বিনির্মাণে অংশগ্রহণ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০১৯’ এর সকল আয়োজনের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
বাসস/তবি/এমএন/২১১০/কেকে