বাসস ক্রীড়া-১২ : রেকর্ড গড়তে যাওয়া রামোস স্পেনের সোনালী অতীতের সঙ্গে সেতুবন্ধন রচনা করতে চান

253

বাসস ক্রীড়া-১২
ফুটবল-ইউরো-২০২০-স্পেন-রামোস
রেকর্ড গড়তে যাওয়া রামোস স্পেনের সোনালী অতীতের সঙ্গে সেতুবন্ধন রচনা করতে চান
মাদ্রিদ, ১১ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস/এএফপি) : দেশের হয়ে সর্বাধিক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার ক্ষেত্রে ইকার ক্যাসিয়াসের রেকর্ডটি অতিক্রম করতে যাচ্ছেন সার্জিও রামোস। আগামীকাল শনিবার তিনি নরওয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ক্যারিয়ারের ১৬৮তম ম্যাচে অংশগ্রহণের পাশাপাশি দলকে জয়ী করে ইউরো ২০২০ আসরের মূল পর্বে পৌঁছে দিতে চান।
২০০৫ সালে কিশোর বয়সেই চীনের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক ঘটে ৩৩ বছর বয়সি রামোসের। ফার্নান্দো তোরেস, জাবি হার্নান্দেজ ও জোয়াকুইনের গোলে ওই ম্যাচে ৩-০ গোলে জয়লাভ করে স্পেন। স্পেনের সেই সোনালী প্রজন্মের একমাত্র সদস্য হিসেবে এখনো স্পেন জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করে চলেছেন রামোস। যে দলটি বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের পাশাপাশি দুইবার জয় করেছে উরোপীয় চ্যাম্পিয়নশীপ শিরোপা।
২০১৬ সালে স্পেন দলের অধিনায়ক হিসেবে ক্যাসিয়াস এর স্থলাভিষিক্ত হওয়া রামোস আরো কয়েকবছর এভাবে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করে যেতে চান। গত মাসে জাতীয় দলের হয়ে ১৬৭তম ম্যাচে অংশগ্রহণের মাধ্যমে সর্বাধিক ম্যাচে অংশগ্রহণে ক্যাসিয়াসের মাইলফলক স্পর্শের পর রামোস বলেছিলেন, ‘রেকর্ড হয় ভাঙ্গার জন্য’।
গত সপ্তাহে স্পেনের কোচ রবার্ট মোরেনো বলেছিলেন,‘ ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যেতে চান সার্জিও রামোস। আমার মনে হয় সে সেতা করতে পারবে। কারণ প্রতিটি ক্ষেত্রেই সে এখনো অসাধারণ। আমরা শুধু তার অসাধারণ বিষয়গুলোর কথাই বলতে পারি। তাকে যখন (জাতীয় দলে) ডাকা হয়, তখন তার আচরণগুলোও থাকে অনিন্দনীয়।’
২০১৮ সালে জাবিকে অনুসরণ করে যখন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ও গেরার্ড পিকে জাতীয় দল থেকে বিদায় নেন, তখন তারা সোনালী প্রজন্মের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে রেখে গিয়েছিলেন রামোসকে। যিনি সেই সোনালী অতীতের সঙ্গে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করেছেন। তার শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতাগুলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে।
এমনকি ক্যাসিয়াসের পরিবর্তিত হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদের নেতৃত্ব গ্রহণের পর ২০১৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা এনে দিয়েছিলেন ক্লাবকে। তবে লা রোজার নেতা হিসেবে এখনো বড় কোন সফলতা এনে দিতে পারেননি রামোস। ২০১৬ সালের ইউরোতে ইতালীর কাছে হেরে শেষ ষোল থেকে বিদায় নেয় স্পেন। দুই বছর পর অনুষ্ঠিত রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকেও তারা বিদায় হয় স্বাগতিক দলের কাছে টাইব্রেকারে হেরে।
তবে স্প্যানিশ ফুটবল ইতিহাসে রামোসের অবস্থান নিরাপদ হয়ে রয়েছে। সতীর্থ স্প্যানিশ আন্তর্জাতিক তারকাদের কাছে তিনি নেতা হিসেবেই বিবেচিত। র‌্যামোসের অধীনে তরুণ তারকা হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদের মাধ্যমে আবির্ভুত প্যারিস সেন্ট জার্মেইর স্প্যানিশ মিডফিল্ডার পাবলো সারাবিয়া বলেন, ‘তিনি হচ্ছেন অলৌকিক আভার অধিকারী এবং সবার কাছে একজন দৃষ্টান্ত। তিনি হচ্ছেন একজন অসাধারণ খেলোয়াড় এবং সবাইকে একতাবদ্ধ করার অসাধারণ গুণবলী তার মধ্যে রয়েছে। স্পেনের হয়ে তার ম্যাচগুলো যখন আপনি দেখবেন তখন তাকেই রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করবেন।’
ইউরো বাছাইপর্বে এবার একেবারেই নিখুঁত ফুটবল খেলছে স্পেন। ‘এফ’ গ্রুপে এখনো পর্যন্ত শতভাগ জয় নিয়ে ১৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। আগামী বছর টুর্নামেন্টে চূড়ান্ত পর্বে খেলার পথ অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে। কাল তারা যদি নরওয়েকে হারাতে পারে এবং গ্রুপের অন্য ম্যাচগুলোতে যদি প্রত্যাশিত ফলাফল হয় অর্থাাৎ মাল্টা যদি সুইডেন কিংবা রোমানিয়ার বিপক্ষে কোন অঘটন ঘটাতে না পারে তাহলে স্পেনের চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়ে যাবে।
রামোস বলেন, ‘আমরা এখনো কিছুই অর্জন করতে পারিনি। আমরা গ্রুপ পর্বের ৩০ পয়েন্টের সবগুলোই জিতে নিয়ে প্রথম হতে চাই।’
আগামী বছর টোকিও অলিম্পিকেও অংশ নেয়ার ইচ্ছা রয়েছে র‌্যামোসের। তাহলে সেটি তার ক্যারিয়ারে যোগ করবে আরেকটি রেকর্ড। এই মুহুর্তে ইতালীয় গোল রক্ষক জিয়ানলুইজি বুফনের ইউরোপীয় রেকর্ড থেকে ৯ ম্যাচ পিছিয়ে আছেন তিনি। আর মিশরের আহমাদ হাসানের বিশ্ব রেকর্ড থেকে ১৭ ম্যাচ দূরে। রামোস যদি ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যেতে পারেন, তাহলে দুটি রেকর্ডই অতিক্রম করতে সক্ষম হবেন তিনি।
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/২০০০/স্বব