বাসস ক্রীড়া-৫ : পাকিস্তানকে প্রথমবারের মত হোয়াইটওয়াশ করলো শ্রীলংকা

105

বাসস ক্রীড়া-৫
ক্রিকেট-টি-২০
পাকিস্তানকে প্রথমবারের মত হোয়াইটওয়াশ করলো শ্রীলংকা
লাহোর, ১০ অক্টোবর ২০১৯ (বাসস) : তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে র‌্যাংকিং-এর শীর্ষ দল পাকিস্তানকে তাদের মাঠেই হোয়াইটওয়াশ করলো শ্রীলংকা। গতকাল সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে লংকানরা ১৩ রানে হারায় পাকিস্তানকে। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে নিলো শ্রীলংকা। এই প্রথমবারের মত পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করলো লংকানরা। এর আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছিলো পাকিস্তান।
লাহোরে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় শ্রীলংকা। শুরুতে ২৪ রানের সূচনা পায় লংকানরা। এরপর ৫৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় তারুণ্য নির্ভর দলটি। ফলে প্রথম দুই ম্যাচের মত শ্রীলংকানদের বড় স্কোর গড়ার সম্ভাবনা কঠিন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন ওসাদা ফার্নান্দো ও অধিনায়ক দাসুন শানাকা। উইকেট ধরে খেলায় মনোযোগি ছিলেন শানাকা।
তবে পাকিস্তান বোলারদের উপর পাল্টা আক্রমন করেন ফার্ন্দাদো। তার এই পরিকল্পনা কাজে দেয়। তাতে লড়াকু স্কোর গড়ার পথ পায় শ্রীলংকা। ১৮তম ওভারের শেষ বলে থেমে যান শানাকা। টেস্ট মেজাজে খেলে ২৫ বলে ১২ রান করেন তিনি। অপরপ্রান্তে মারমুখী মেজাজে থাকা ফার্নান্দো ৩৩ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। শেষ পর্যন্ত ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৮ বলে অপরাজিত ৭৮ রান করেন ফার্নান্দো। তার ঝড়ো গতির ব্যাটিংয়ে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪৭ রানের সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা। পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আমির ২৭ রানে ৩ উইকেট নেন। বোলারদের পারফরমেন্স ভালো থাকলেও, পাকিস্তানের ফিল্ডাররা সহজ পাঁচটি ক্যাচ ফেলেছেন।
জবাবে জয়ের জন্য ১৪৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় পাকিস্তান। শ্রীলংকার ডান-হাতি পেসার কাসুন রাজিথা শুন্য রানে বিদায় দেন ফখর জামানকে। তার বিদায়কে ভুলে গিয়ে বড় জুটি গড়েন আরেক ওপেনার বাবর আজম ও হারিস সোহেল। ৭১ বলে ৭৬ রানের জুটি গড়েন তারা। ২৭ রান করা বাবরকে তুলে নিয়ে এই জুটি ভাঙ্গেন শ্রীলংকার পেসার লাহিরু কুমারা। তবে অন্যপ্রান্তে টি-২০ ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন সোহেল। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫০ বলে ৫২ রান করে লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা ডি সিলভার শিকার হন তিনি।
দলীয় ৯৪ রানে সোহেলের বিদায়ের পর দ্রুতই ৩ উইকেট হারায় পাকিস্তান। ফলে ম্যাচ জয়ের পথ কঠিন হয়ে পড়ে তাদের। অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ ১৭, ইমাদ ওয়াসিম ৩ ও আসিফ আলি ১ রান করে আউট হন। সোহেলের পর সরফরাজ ও আসিফকেও আউট করেন ডি সিলভা।
১৮তম ওভারে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সরফরাজ যখন ফিরেন, তখন দলের স্কোর ১১১। ফলে শেষ ১২ বলে ৩৭ রান প্রয়োজন পড়ে পাকিস্তানের। তখন উইকেটে ছিলেন ইফতিখার আহমেদ ও ওয়াহাব রিয়াজ। কিন্তু শেষ ১২ বল থেকে মাত্র ২৩ রান তুলতে পারেন ইফতিখার ও রিয়াজ। এতে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩৪ রান করে পাকিস্তান। ইফতিখার ৮ বলে ১৭ ও রিয়াজ ৬ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন। শ্রীলংকার ডি সিলভা ২১ রানে ৩টি ও কুমারা ২৪ রানে ২ উইকেট নেন। ম্যাচ ও সিরিজ সেরা হন ডি সিলভা।
ম্যাচ শেষে শ্রীলংকার অধিনায়ক শানাকা বলেন, ‘এটিই সত্যিই দুর্দান্ত জয়। পাকিস্তানের দর্শকদের ধন্যবাদ দিতে চাই, তারা শুধু তাদের দেশকেই নয় আমাদেরকেও সাপোর্ট দিয়েছে। এটি আমাদের জন্য বড় সম্মানের। সিরিজে সবাই পারফরমেন্স করেছে। তাই এটি দলগত সাফল্য।’
পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজের কণ্ঠে ছিলো হতাশা, ‘আমি মনে করি, আমরা বোলিং ভালো করেছি। মিডল-অর্ডারে বড় জুটির প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু এ ম্যাচেও আমাদের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ। তবে আমাদের ফিল্ডিং-এ আরও উন্নতি করতে হবে। যদি আমরা ক্যাচ ধরতে না পারি, তবে কোন দলকেই হারাতে পারবো না।’
বাসস/এএমটি/১৬৪০/মোজা/স্বব