বাসস সংসদ-৪ : বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ উন্নয়নবান্ধব খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান রওশন এরশাদের

397

বাসস সংসদ-৪
রওশন-বাজেট আলোচনা
বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ উন্নয়নবান্ধব খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান রওশন এরশাদের
সংসদ ভবন, ২৭ জুন, ২০১৮ (বাসস) : জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে উন্নয়নবান্ধব খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহবান জানিয়েছেন।
প্রস্তাবিত বাজেটকে দেশের সর্ববৃহৎ বাজেট উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বিশাল বাজেট অবশ্যই বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের চাকা আরো গতিশীল করতে হবে।
তিনি আজ সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ১৭ কোটি মানুষের দেশে আরো বৃহৎ বাজেট প্রয়োজন। এবারের বৃহৎ বাজেটের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয় ও ’৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত করতে হবে। পাশাপাশি তিনি বাজেটে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রবৃদ্ধি আরো বাড়াতে হবে। তা না হলে কাক্সিক্ষত সময়ের মধ্যে কিভাবে উন্নত দেশে পরিণত হবে? তবে তিনি বিগত ৬-৭ বছরে দেশের প্রবৃদ্ধির হার ধারাবাহিকভাবে ৬ শতাংশের ওপরে রাখায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রবৃদ্ধির এ হার প্রতিবেশী দেশসমূহের তুলনায় বেশী।
তিনি অবশ্য এ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে দেশে ব্যক্তি তথা বেসরকারি এবং সরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিশেষ করে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এসব করা সম্ভব না হলে প্রবৃদ্ধির কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করা যাবে না।
বেগম রওশন এরশাদ দেশে নতুন কর্মসংস্থানে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিকল্প নেই উল্লেখ করে বলেন, বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ আরো নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে বিনিয়োগের পথে বর্তমানে সে সব জটিলতা রয়েছে তা দূর করতে হবে। এসব জটিলতা দূর করে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন।
তিনি দেশে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, দেশে বর্তমানে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ৫ কোটি লোক বেকার রয়েছে। এসব বেকারদের কর্মসংস্থান করতে হবে। কর্মসংস্থান করতে না পারলে মাদকের ভয়াবহতাসহ বিভিন্ন অপরাধ প্রবণতা বাড়বে। বিশেষ করে যুব সমাজকে কাজ দিতে না পারলে তারা এ সবে জড়িয়ে পড়বে।
তিনি দেশের জনগণকে ভেজালমুক্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, খাদ্যে ভেজাল মেশানোর দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। প্রয়োজনে খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে সেনাবাহিনী বা র‌্যাবকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
বিরোধীদলীয় নেতা প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষিপণ্য, মেডিটেশনসহ বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত ভ্যাট এবং ব্যাংক হিসাবের ওপর আবগারি শুল্ক আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান জানান। এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
তিনি রাজস্ব আয় বাড়াতে ভ্যাট ও আয়করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান। তিনি বলেন, ১৭ থেকে ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে ৮ লাখ ৪০ হাজার ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত আছে। কিন্তু মাত্র ৪ শতাংশ ভ্যাট প্রদান করছে। এছাড়া দেশে বর্তমানে ৩০ লাখ লোক আয়কর নিবন্ধন করেছে। কিন্তু আয়কর দাতার সংখ্য ১২ থেকে ১৪ লাখের বেশী নয়। অথচ দেশে ১ কোটি লোকের আয় কর দেয়ার সামর্থ্য রয়েছে। এদের করের আওতায় আনতে হবে।
বেগম রওশন এরশাদ বর্তমান সরকারের আমলে বাস্তবায়িত ও বাস্তবায়িতব্য মেগা প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ করা গেলে ব্যয় কমার সাথে সাথে জনগণ দ্রুত এর সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
বাসস/এমআর/২০১০/বেউ/-আসচৌ