লিভারপুলকে কোনরকমে রক্ষা করলেন মিলনার, ব্রাইটনে বিধ্বস্ত টটেনহ্যাম

161

লন্ডন, ৬ অক্টোবর ২০১৯ (বাসস) : ইনজুরি টাইমে পেনাল্টি থেকে গোল করে লিভারপুলকে কোনরকমে রক্ষা করেছেন জেমস মিলনার। ইংলিশ এই অভিজ্ঞ মিডফিল্ডারের গোলে প্রিমিয়ার লিগে লিস্টার সিটিকে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে ২-১ গোলে পরাজিত করেছে লিভারপুল। এই জয়ে আট পয়েন্টের ব্যধানে ম্যানচেস্টার সিটিকে পিছনে ফেলে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নরা। দিনের অপর ম্যাচে ব্রাইটনের কাছে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে টটেনহ্যাম।
এ্যানফিল্ডে নাটকীয় এই জয়ের মাধ্যমে লিগে টানা ১৭ ম্যাচে জয়ের রেকর্ড গড়েছে লিভারপুল। একইসাথে ২০১৫ সালের পর লিস্টার বস ব্রেন্ডন রজার্সের লিভারপুলের ফেরাটাও সুখকর হলো না। চার বছর আগে রজার্সের স্থানেই রেডসদের বস হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন জার্গেন ক্লপ।
ম্যাচ শেষে ক্লপ বলেছেন, ‘এটা একটি দারুণ ম্যাচ ছিল। শেষ মিনিট পর্যন্ত আমরা ম্যাচের আবহ ধরে রেখেছিলাম। যেভাবে আমরা ফুটবল খেলছি তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভাগ্য ছাড়া লিগে টানা এতগুলো ম্যাচ জেতা সম্ভব না। তবে পুরো ৯০ মিনিটই জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। জেমস মিলসার আমাদেরকে আজ গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট উপহার দিয়েছে।’
মিলনারের লম্বা বল লিস্টার ডিফেন্ডার জনি ইভান্স ধরতে ব্যর্থ হলে সাদিও মানে মৌসুমের অষ্টম গোল করে ৪০ মিনিটে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন। লিভারপুলের হয়ে শততম ম্যাচে মানের এটি ৫০তম গোল। রেডসের হয়ে দশম খেলোয়াড় হিসেবে সেনেগালের এই উইঙ্গার এই কৃতিত্ব দেখালেন। ৮০ মিনিটে আয়োজে পেরেজের পাস থেকে তৃতীয় স্থানে থাকা লিস্টারের হয়ে ম্যাচে সমতা ফেরান জেমস ম্যাডিসন। কিন্তু স্টপেজ টাইমের পঞ্চম মিনিটে মানেকে ফাউলের অপরাধে মার্ক আলব্রাইটনের বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেয় লিভারপুল। ভিএআর’র সহায়তায় পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হবার পর ঠান্ডা মাথায় স্পট কিক থেকে স্বাগতিকদের দারুণ এক জয় উপহার দেন ৩৩ বছর বয়সী মিলনার।
পূর্ব সাসেক্সের এমেক্স কমিউনিটি স্টেডিয়ামে আরেকটি হতাশা রাত কেটেছে মরিসিও পোচেত্তিনোর দলের। ব্রাইটনের কাছে ৩-০ গোলের পরাজয়ের পাশাপাশি গোলরক্ষক হুগো লোরিসের গুরুতর কনুইয়ের ইনজুরিতে দু:শ্চিন্তায় পড়েছে স্পার্সরা। ম্যাচের তিন মিনিটেই নিল মওপের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাইটন। ঐ গোলের সময়ই কনুইয়ে আঘাত পেয়েছিলেন লোরিস। পরে ৮ মিনিটে তার পরিবর্তে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক পাওলো ডিনো গাজানিগাকে নামাতে বাধ্য হন পোচেত্তিনো। ৩২ মিনিটে এ্যারন কোনোলির গোলে ব্যবধান দ্বিগুন হলে টটেনহ্যামের ভাগ্য অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। পোচেত্তিনোর অধীনে এই ম্যাচটির ফলাফলকে অন্যতম বাজে পারফরমেন্স হিসেবে ইতোমধ্যেই বিবেচনা করা শুরু হয়েছে। এর আগের ম্যাচে গত সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৭-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল স্পার্সরা। সেই মানসিক আঘাত থেকে দলকে বের করে আনাই ছিল পোচেত্তিনোর সামনে মূল চ্যালেঞ্জ। ম্যাচ শেষে হতাশ পোচেত্তিনো বলেছেন, ‘এরপরও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। যদিও তাদের জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে। তাদেরকে সান্তনা দেবার ভাষা আমার জানা নেই। অনেক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে আমরা পার হচ্ছি।’
গতবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালিস্ট দলটি এবারের মৌসুমে প্রথম ১১টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জয়ী হয়েছে। জানুয়ারি থেকে ১০টি এ্যাওয়ে ম্যাচের একটিতেও জিততে পারেনি।
এদিকে বার্নলির কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়ে দারুন চাপে আছেন এভারটনের ম্যানেজার মার্কো সিলভা। এই পরাজয়ে লিগ টেবিলের নীচের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে নেমে গেছে এভারটন। ম্যাচের ৭২ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন জেফ হেনড্রিক। এর আগে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের কারনে রাইট ব্যাক সিমাস কোলম্যান মাঠত্যাগ করলে ৫৬ মিনিটেই দশজনের দলে পরিণত হয়েছিল এভারটন।
দিনের অপর ম্যাচগুলোতে এ্যাস্টন ভিলা ৫-১ গোলে নরউইচকে, ক্রিস্টাল প্যালেস ২-১ গোলে ওয়েস্ট হ্যামকে পরাজিত করেছে।