হাসনাইনের হ্যাটট্রিকের পরও হারতে হলো পাকিস্তানকে

563

লাহোর, ৬ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : ডান-হাতি স্পিনার ১৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ হাসনাইনের হ্যাটট্রিকের পরও সিরিজের প্রথম টি-২০তে শ্রীলংকার কাছে ৬৪ রানে হেরে গেছে স্বাগতিক পাকিস্তান। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল লংকানরা। পাকিস্তানের দ্বিতীয় ও বিশ্বের অষ্টম খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিক করলেন হাসনাইন। তবে টি-২০ ইতিহাসে এটি নবম হ্যাটট্রিক।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ নিয়ে টি-২০ লড়াইয়ে নামে পাকিস্তান। লাহোরে প্রথম টি-২০ ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং-এ নামে পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাট করার সুযোগটা দারুনভাবে কাজে লাগান শ্রীলংকার দুই ওপেনার দানুস্কা গুনাতিলকা ও আবিস্কা ফার্নান্দো। মারমুখী মেজাজে ব্যাট করে পাওয়ার প্লেতে ৬৪ রান তুলে নেন গুনাতিলকা ও ফার্নান্দো। ঝড়ো গতিতে রান তুলেছেন করাচিতের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৩৩ রান করা গুনাতিলকা। ২৬ বলে ৪৩ রান তুলেন তিনি। অপরপ্রান্তে চুপচাপ ছিলেন ১০ বলে ১০ রান করা ফার্নান্দো।
শেষ পর্যন্ত দশম ওভারের চতুর্থ বলে বিচ্ছিন্ন হন গুনাতিলকা ও ফার্নান্দো। পাকিস্তানের ডান-হাতি স্পিনার শাদাব খানের বলে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন গুনাতিলকা। টি-২০ ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৩৮ বলের ইনিংসে ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৭ রানে থামেন গুনাতিলকা।
শুরু থেকেই রক্ষণাত্মক থাকা ফার্নান্দো বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলে ৩৩ রানে আউট হন। ৩৪ বল মোকাবেলা করে ৩টি চার মারেন ফার্নান্দো। তার বিদায়ে লংকানদের স্কোর দাঁড়ায় ১২০ রানে ২ উইকেট।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর শ্রীলংকাকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন ভানুকা রাজাপাকশে ও অধিনায়ক দাসুন শানাকা। মারমুখী মেজাজে ব্যাট করে দলকে বড় সংগ্রহের পথ দেখান রাজাপাকশে। ২২ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩২ রান করে হাসনাইনের প্রথম শিকার হন রাজাপাকশে।
এরপর ১৮তম ওভারে আবারো আক্রমণে আসেন হাসনাইন। ঐ ওভারের প্রথম দু’বলেই উইকেট তুলে নেন হাসনাইন। ফলে ১৬তম ওভারের শেষ, ১৮তম ওভারের প্রথম দুই বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন হাসনাইন। তার পরের দু’টি শিকার ছিলেন শানাকা ও শেহান জয়সুরিয়া। শানাকা ১০ বলে ২টি ছক্কায় ১৭ রান করেন। ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৫ রানের সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা। পাকিস্তানের হাসনাইন ৪ ওভারে ৩৭ রানে হ্যাটট্রিকসহ ৩ উইকেট নেন।
১৬৬ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে পাকিস্তান। ২২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে তারা। করাচিতে প্রথম ওয়ানডেতে ১১৫ রান করা বাবর আজম এবার থামেন ১৩তে। বাবরের সাথে ওপেনার হিসেবে শুরু করা আহমেদ শেহজাদও শুরুতেই ফিরেন, করেন ৪ রান। তিন নম্বরে নেমে মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই আউট হন উমর আকমল। বাবর-আকমল উভয়েই শিকার হন ডান-হাতি পেসার নুয়ান প্রদীপের।
পঞ্চম ওভারে ৩ উইকেট পতনের পর পাকিস্তানের হাল ধরেন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ ও ইফতিখার আহমেদ। চতুর্থ উইকেটে ৪৬ রানে জুটি গড়ে দলকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন তারা। কিন্তু দলীয় ৭৬ রানের মধ্যে সরফরাজ-ইফতিখার থামলে আবারো ব্যাকফুটে পড়ে যায় পাকিস্তান। ইফতিখার ২৫ ও সরফরাজ ২৪ রান করেন।
তাদের আউটের পর তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন-আপ। ২৫ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ১০১ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন-আপকে গুটিয়ে দিতে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন প্রদীপ-উদানা-ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। প্রদীপ-উদানা ৩টি করে, হাসারাঙ্গা ২টি উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন শ্রীলংকার গুনাতিলকা।
আগামীকাল একই ভেন্যুতে হবে সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০।