রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কমছে

166

ঢাকা, ৫ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচা বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম ধীরে-ধীরে কমছে। তবে, পেঁয়াজের দাম কমতির এই প্রবনতায় সাধারণ মানুষ স্বস্তি পাচ্ছে না।
কারণ, তাদের বিবেচনায় পেঁয়াজের মূল্য একমাস আগের তুলনায় এখনো অনেক বেশি।
এদিকে পাইকারি ও খুচরা, উভয় বাজারেই গত কয়েকদিন যাবত পেঁয়াজের মূল্য পড়তির দিকে হলেও ক্রেতাদের বিবেচনায় এর দাম এখনো অনেক বেশি। তারা মনে করেন, পেঁয়াজের মূল্য এখনো পর্যন্ত সহনীয় পর্যায়ে আসেনি।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেয়াঁজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে এবং খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ৯০ টাকা মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। গত সেপেটম্বরের প্রথম সপ্তাহের তুলনায় খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৪৫ টাকা।
রাজধানীর মিরপুর ১নং সেকশনের হযরত শাহ আলী কাঁচাবাজারের খুচরা ব্যবসায়ী সানাউল্লাহ জানান, এক সপ্তাহ আগেও পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের বিক্রয় মূল্য ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। আর খুচরা বাজারে সে-সময় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ১শ’ থেকে ১শ’ ১০ টাকা দরে।
পেঁয়াজের বাজার মূল্য আগের দামে ফিরে যাওয়া প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, পেঁয়াজের মূল্য আবার কমার সুযোগ নেই। এই মুহূর্তে কৃষক পর্যায়ের নিজস্ব ব্যবস্থায় এবং ব্যবসায়ীদের কাছে পেয়াঁজের কোন মজুদ নেই।
এদিকে, রাজধানীতে পেঁয়াজ কেনাবেচার সবচেয়ে বড় মার্কেট কারওয়ান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মসির উদ্দিন বলেন, ‘মাত্র কয়েক জন মজুদদার পেয়াঁজের বাজার নিয়ন্ত্রন করছেন’। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে। তারা আর্থিকভাবে লাভবান হতে বেআইনভিাবে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কাঁচা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে স্বল্প পরিমান পেয়াঁজ সরবরাহ করছেন।
মিরপুর-১ নম্বরের হযরত শাহ আলী হাইস্কুল মার্কেটের ‘শ্রী রাম ভান্ডারের’ মালিক ও পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী ভরত কুমার শাহ বলেন, এর আগে তিনি প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১২শ’ কেজি পেয়াঁজ বিক্রি করলেও এখন তা কমে ৫শ’ থেকে ৬শ’ কেজিতে দাঁড়িয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগের উপ-পরিচালক সৈয়দ মোস্তাক হাসান বলেন, ‘কাঁচাবাজারে পেঁয়াজের খুচরা মূল্য কমাতে জেলা প্রশাসন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়াতে কাজ করছে। এজন্য তারা পেয়াঁজ মজুদদারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সহযোগিতা চাইলে আমাদের অফিসাররা জেলা প্রশাসনকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছেন।’
অপরদিকে বাসস’র চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গত কয়েকদিনে বন্দরনগরীর খাতুনগঞ্জ ও চাকতাই পাইকারি বাজারে বিপুল পরিমান পেঁয়াজ ঢুকেছে।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বাসস প্রতিনিধিকে বলেন, ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর’১৯ পর্যন্ত বিদেশ থেকে ১০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।
একেকটি ট্রাকে ১৫ টন করে পেয়াজ বহনকরে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি ট্রাক খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে ঢুকছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
দেশে প্রতিবছর পেঁয়াজের চাহিদা হচ্ছে ২৬ লাখ মেট্রিক টন। এরমধ্যে ২৫ লাখ মেট্রিক টন দেশেই উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে উৎপাদিত পেঁয়াজ ঘরে তোলা পর্যন্ত সময়ে ৩০ শতাংশ নষ্ট হয় বলে প্রায় ১১ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।