দুর্নীতির সাথে আপোষ করা সম্ভব নয় : তথ্যমন্ত্রী

551

চট্টগ্রাম, ৫ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে বিএনপির আবদার রাখতে গিয়ে রাষ্ট্রের পক্ষে দুর্নীতির সাথে আপোষ করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আবদার হচ্ছে রাষ্ট্র যেন দুর্নীতির সাথে আপোষ করে। কিন্তু এটি করা তো সম্ভবপর নয়। খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি একেবারেই আদালতের এখতিয়ার।’
চট্টগ্রাম নগরীর ফিনলে স্কয়ারে সিনেপ্লেক্স ‘সিলভার স্ক্রিন’ আয়োজিত বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প এবং বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির মামলায় কেউ জামিন চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের কাজ হচ্ছে জামিনের বিরোধীতা করা। জামিনের যদি বিরোধীতা করা না হয় তাহলে সেখানে তো দুর্নীতির সাথে রাষ্ট্রের আপোষ করা হয়। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে, দুর্নীতির দায়ে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি যখন জামিন চাইবেন, তখন তার বিরোধীতা করা। এটা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বা দুদকের আইনজীবীর দায়িত্ব।’
কবি ও প্রাবন্ধিক আবুল মোমেনের সভাপতিত্বে ও কামরুল হাসান বাদলের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ সম্পাদক রুশো মাহমুদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ওয়াসিকা আয়েশা খাঁন এমপি, দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. ম রমিজ উদ্দিন, আরটিভি’র সিইও সৈয়দ আশিক রহমান, চলচ্চিত্রও নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী ও দৈনিক প্রথম আলো চট্টগ্রাম অফিসের বার্তা সম্পাদক কবি ওমর কায়সার।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধীতা করলেও আদালত নানা বিবেচনায় যে কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারে। সেটি হচ্ছে আদালতের এখতিয়ার। এখন বিএনপির নেতারা একেক সময় একেক কথা বলেন। তারা আসলে কী চায়? তারা খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে, কারাগারে থাকা নিয়ে রাজনীতি করতে চান নাকি খালেদা জিয়াকে সত্যিকার অর্থে আইনী প্রক্রিয়ায় মুক্ত করতে চান।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা একবার বলে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের নেত্রীকে মুক্ত করা হবে, কোন করুণা তারা চায় না। আবার বলে রাষ্ট্রপক্ষ যেন বিরোধীতা না করে। আবার বলে আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজা প্রাপ্ত একজন আসামি। এতিমের জন্য, এতিমখানা নির্মাণের জন্য যে টাকা এসেছিল। এতিমখানা নির্মাণ না করে তিনি সেই টাকা নিজের ব্যাংক হিসাবে সরিয়ে ফেলেছেন। সমস্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে, দলিল দস্তাবেজ, সওয়াল-জওয়াবের মাধ্যমে তার শাস্তি হয়েছে।
এর আগে তথ্যমন্ত্রী ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প এবং বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।
ওই অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বোম্বেতে একটি স্ক্রিপ্টের জন্য লাখ লাখ টাকা দেয়া হয়। সেখানে বাংলাদেশে একটি চলচ্চিত্র বানানোর জন্য ৬০ লাখ টাকা অনুদান অনেক কম হয়ে যায়। এমনকি পশ্চিমবাংলাতেও অনেক টাকা নেয়। আমরা এখন ৫ কোটি টাকা করে দিই, এটা ১০ কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, দেশের যেসব সিনেমা হলগুলো বন্ধ হয়ে গেছে সেসব হলগুলো যদি কেউ আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ চালু করতে চায় তাহলে তারা যেন দীর্ঘমেয়াদী ও সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ পায় সেজন্য আমি ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সাথে আলোচনা করেছি। এ বিষয়ে একটি সমাধানে পৌঁছাতে পারবো বলে আশা করছি।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় নতুন সিনেমা হল খোলার উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারিভাবে দেশের প্রতিটি জেলায় ৩০০ আসন সম্বলিত তথ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে আমরা ২৫ থেকে ৩০টি জেলায় একটি করে তথ্যকেন্দ্র করবো। চট্টগ্রামের মতো বড় জেলায় জমি পেলে দুটি তথ্যকেন্দ্র করা যায়।