করাচিতে প্রত্যাবর্তন সিরিজ জিতলো পাকিস্তান

156

করাচি, ৩ অক্টোবর ২০১৯ (বাসস) : দীর্ঘ ১০ বছর পর করাচিতে প্রত্যাবর্তনের ওয়ানডে সিরিজটি জয় দিয়ে স্মরনীয় করে রাখলো স্বাগতিক পাকিস্তান। তিন ম্যাচের সিরিজে শ্রীলংকাকে ২-০ ব্যবধানে হারালো পাকিস্তান। গতরাতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে পাকিস্তান ৫ উইকেটে হারিয়েছে লংকানদের। প্রথম ওয়ানডে বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হলেও, দ্বিতীয়টি ৬৭ রানে জিতে পাকিস্তান।
সিরিজ হার এড়ানোর ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় শ্রীলংকা। ভালো শুরু না হলেও, দ্বিতীয় উইকেটে দলকে বড় জুটি এনে দেন ওপেনার দানুস্কা গুনাতিলকা ও অধিনায়ক লাহিরু থিরিমান্নে। ১০৬ বলে ৮৮ রান যোগ করেন তারা। ৩৬ রান করে থামেন থিরিমান্নে। এরপর অ্যাঞ্জেলো পেরেরাকে নিয়ে আবারো বড় জুটির চেষ্টা করেন গুনাতিলকা। জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরির পরই ১৩ রান করা পেরেনা আউট হলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান তারা।
সতীর্থদের নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় উইকেটে বড় জুটি গড়ার পর চতুর্থ উইকেটেও দলকে সুন্দর একটি জুটি এনে দেন গুনাতিলকা। সাথে তার সঙ্গী ছিলেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা উইকেটরক্ষক মিনোদ ভানুকা। আগের দু’টি জুটির চেয়ে এবার রান তোলায় মারমুখী ছিলেন গুনাতিলকা ও ভানুকা। দু’জনের ৭১ বলে ৭৪ রানের কল্যাণে শ্রীলংকার স্কোর ২শ পেরিয়ে বড় সংগ্রহের পথ হাটতে থাকে। এরমাঝেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন গুনাতিলকা। আড়াই বছর পর সেঞ্চুরির দেখা পেলেন তিনি। সেঞ্চুরির পর দলের রানের চাকা ঘুড়াচ্ছিলো গুনাতিলকার ব্যাটিং দৃঢ়তায়। তবে অন্যপ্রান্তে ৩৯ বলে ৩৬ রান করে আউট হন ভানুকা।
দলীয় ২২৫ রানে ভানুকা আউট হবার পর ১৮ রানের ব্যবধানে আরও ২ উইকেট হারায় শ্রীলংকা। ফলে রান তোলায় ভাটা পড়ে তাদের। এসময় শেহান জয়সুরিয়া ৩ ও গুনাতিলকা ১৩৩ রান করে আউট হন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলার পথে ১৩৪ বল মোকাবেলা করে ১৬টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি। পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমিরের শিকার হন গুনাতিলকা।
তাদের বিদায়ের পরও শ্রীলংকাকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন দাসুন শানাকা। টি-২০ মেজাজে ব্যাটিং করেছেন তিনি। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় মাত্র ২৪ বলে ৪৩ রান করেন শানাকা। ফলে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৯৭ রানের সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা। পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির ৫০ রানে ৩ উইকেট নেন।
২৯৮ রানের লক্ষ্য স্পর্শ করতে পারলেই সিরিজ জিতে নিবে পাকিস্তান। এমন সমীকরনে উড়ন্ত সূচনাই করেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার ফখর জামান ও আবিদ আলি। ১১৭ বলে ১২৩ রান যোগ করেন তারা। এরমধ্যে আবিদের সংগ্রহ ছিলো ৬৬ বলে ৭৪ রান। তার ইনিংসে ১০টি বাউন্ডারি ছিলো। আবিদকে ফিরিয়ে শ্রীলংকাকে প্রথম সাফল্য এনে দেন হাসারাঙ্গা ডি সিলভা।
আবিদের বিদায়ের পর বাবর আজমকে নিয়ে দলের স্কোর বড় করতে থাকেন ফখর। কিছুক্ষণ বাদে হাফ-সেঞ্চুরিও তুলে নেন তিনি। তবে দলীয় ১৮৯ রানের মধ্যে ফিরতে হয় দু’জনকেই। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান বাবার ২৬ বলে ৩১ ও ফখর ৭৬ রান করে আউট হন। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৮ রান যোগ করেন বাবর ও ফখর।
এরপর উইকেটে গিয়ে সাবলীলভাবে খেলতে পারেননি অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। ৩৩ বলে ২৩ রানে থামেন তিনি। তবে পাকিস্তানের জয়ের পথকে মসৃন করেছেন হারিস সোহেল ও ইফতিখার আহমেদ। সোহেল ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৬ রানে থামলেও ওয়াহাব রিয়াজকে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান ইফতিখার। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২২ বলে অপরাজিত ২৮ রান করেন ইফতিখার। রিয়াজের সংগ্রহ ছিলো ১ রান। শ্রীলংকার নুয়ান প্রদীপ ২টি উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন পাকিস্তানের আবিদ। সিরিজ সেরা হন পাকিস্তানের বাবর।
ওয়ানডে সিরিজ শেষে এবার তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলবে পাকিস্তান-শ্রীলংকা। যা শুরু হবে ৫ অক্টোবর থেকে। সবগুলো ম্যাচই হবে লাহোরে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
শ্রীলংকা : ২৯৭/৯, ৫০ ওভার (গুনাতিলকা ১৩৩, শানাকা ৪৩, আমির ৩/৫০)।
পাকিস্তান : ২৯৯/৫, ৪৮.২ ওভার (ফখর ৭৬, আবিদ ৭৪, প্রদীপ ২/৫৩)।
ফল : পাকিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : আবিদ আলি (পাকিস্তান)।
সিরিজ সেরা : বাবর আজম (পাকিস্তান)।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতলো পাকিস্তান।