বরিশালে দুূর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে বাদ্যকররা ব্যস্ত সময় পার করছেন

277

॥ শুভব্রত দত্ত ॥
বরিশাল, ২ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : আসন্ন শারদীয় দুূর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে জেলার ১০টি উপজেলাসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঢাক-ঢোল প্রস্তুতকারী কারিগররা (বাদ্যকর সম্প্রদায়) বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর বাজার রোড এলাকায় তবলা বিতান, সুর তরঙ্গ ও স্বর্গ ছোয়া বাদ্য বিতানসহ প্রায় প্রতিটি বাদ্যযন্ত্র তৈরির দোকানে ঢাক-ঢোল তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। দম ফেলার ফুরসত নেই কারীগরদের। কাঠের খুটখাট শব্দে মুখর দোকানগুলো। ঢাক-ঢোলের জন্য খোল তৈরি, রং করা, চামড়া লাগানো এবং মেরামতে ব্যস্ত বেশিরভাগ কারিগর।
ঢাক-ঢোল প্রস্তুতকারী কারিগরদের একাধিক সূত্র জানায়, মাত্র তিন দিন পরেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ দুূর্গোৎসব। আর শারদীয় দুূর্গোৎসব-এর প্রধান আকর্ষণই হচ্ছে ঢাক-ঢোল, বিভিন্ন দুূর্গা মন্দির থেকে অর্ডার নেয়া ঢাক-ঢোল সঠিক সময়ে সরবরাহ করার জন্য ঢাক তৈরির কারিগর ও বাদ্যকর শ্রমিকদের এখন দিনরাত কাজ করতে হচ্ছে। যুগ যুগ ধরে ঢাক তৈরি ও পূজোর সময় ঢাক বাজিয়ে হাজারো বাদ্যকর তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। বিশেষ করে দুর্গাপূজা এলেই ঢাক-ঢোলের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই ঢাক তৈরির জন্য বাদ্যকর সম্প্রদায় ও শ্রমিকেরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের ঢাক তৈরির কারিগর মানিক মালাকর জানায়, বংশ পরস্পরায় দীর্ঘ ৩০ বছর পর্যন্ত এ পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। তার জন্মস্থান ঢাকার অদূরে মানিকগঞ্জ জেলায়। চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া এলাকা থেকে এ কাজ শিখেছেন তিনি। তার শ্বশুর জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরে দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করেছেন। সে হিসেবে বিগত ২০ বছর ধরে আগৈলঝাড়ায় স্থায়ী দোকান দিয়ে এ কাজ করে যাচ্ছেন ঢাক তৈরির কারিগর মানিক মালাকর নিজে।
কারিগর মানিক মালাকর আরো জানান, আসন্ন শারদীয় দুূর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই নতুন ঢাক তৈরি ও মেরামতের জন্য বেশ কিছু অর্ডার এসেছে তার কাছে। একটি মাঝারি সাইজের ঢাক তৈরি করতে সাড়ে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। আর সেটি বিক্রি করছেন সাড়ে ৯ থেকে ১২ হাজার টাকায়। হিন্দু অধ্যুষিত আগৈলঝাড়া উপজেলায় বার মাস এ কাজ করে যাচ্ছেন মানিক।
এ বিষয়ে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি নারায়ন চন্দ্র দে নারু জানান, ঢাক-ঢোলের আওয়াজে জমে উঠতে শুরু করেছে পূজামন্ডপগুলো। আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের কারণে এখন আর ঢোলের তেমন কদর না থাকলেও শারদীয় দুূর্গোৎসবে এখনও ঢাক-ঢোলের কদর রয়েছে। পূজার আরতিতে ঢোলের বিকল্প কিছু নেই।