ঢাকা, ২৭ জুন, ২০১৮ (বাসস) : প্রথম ম্যাচেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানীকে ১-০ গোলে পরাজিত করে অসাধারণ ভাবে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করা মেক্সিকোর সামনে এখন গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবার সুযোগ। আজ গ্রুপের শেষ ম্যাচে সুইডেনকে হারাতে পারলেই শীর্ষ দল হিসেবে শতভাগ জয় নিয়ে নক আউট পর্বে যাবে মেক্সিকো। আর এর মাধ্যমে কোচ হুয়ান কার্লোস ওসোরিও কিছুটা হলেও সমর্থকদের সমর্থন পাবেন বলে আশা করেন দলের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক গুইলারমো ওচোয়া।
২০১৫ সাল থেকে মেক্সিকো জাতীয় দলের দায়িত্বে আছেন ওসোরিও। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে মেক্সিকোর পারফরমেন্সে ধারাবাহিকতার অভাবে ওসোরিওকে প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। কিন্তু তারপরেও তার ওপরই বিশ্বকাপে আস্থা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। ২০১৬ সালে কোপা আমেরিকায় চিলির কাছে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত হবার ম্যাচটি এখনও মেক্সিকোর কাছে তিক্ত স্মৃতি হয়ে আছে। তবে গত বছর গোল্ড কাপের সেমিফাইনালে জ্যামাইকার কাছে ১-০ গোলের পরাজয় কেউই মেনে নিতে পারেনি।
তবে রাশিয়া এসে প্রথম ম্যাচেই জার্মানরদের পরাজিত করার সুখস্মৃতিতে সব কিছুকে পিছনে ফেলে ওসোরিওই হয়ে উঠেছেন এখন মেক্সিকোর নায়ক। দ্বিতীয় ম্যাচেও দক্ষিণ কোরিয়াকে ২-১ গোলে হারানোর পরে শেষ ১৬’তে যাওয়া এখন তাদেও জন্য সময়ের ব্যপার।
বেস ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে গোলরক্ষক ওচোয়া বলেছেন, ‘একজন কোচকে সমর্থকরা মেনে নিবে এটাই স্বাভাবিক। ওসোরিও দারুণ নিবেদিত একজন মানুষ। সবসময়ই সে শিখতে চায়। ফুটবল ও মেক্সিকান খেলোয়াড়দের জন্যই সে বেঁচে থাকে।’
প্রথম দুই ম্যাচে জয়ের কারনে এফ-গ্রুপের শীর্ষেই রয়েছে মেক্সিকো। কিন্তু আজকের ম্যাচে পরাজয়ে তাদের সামনেও বিদায়ের শঙ্কা রয়েছে। ওচোয়া বলেন, সুইডেনের বিপক্ষে জার্মানীর শেষ মুহূর্তের গোলটি সম্পর্কে আমরা যখন জেনেছি তখন আমরা বিমানবন্দরে ছিলাম। সত্যি কথা বলতে কি কোন ধরনের পরিসংখ্যান বা অঙ্কের মধ্যে আমরা যেতে চাচ্ছিনা। অন্য দলগুলো যাই করুক না কেন সুইডেনের বিপক্ষে আমরা জয়ের জন্যই মাঠে নামবো।
জার্মানীর সাথে সমান গোল ব্যবধান ও তিন পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তৃতীয় স্থানে রয়েছে সুইডেন। আর সে কারনেই এই গ্রুপের তিনটি দলেরই এখনো পরের রাউন্ডে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। দলের তারকা মিডফিল্ডার সেবাস্টিয়ান লারসন বলেছেন, আমরা জানি জয়ের মাধ্যমে পরের রাউন্ড নিশ্চিত হবে। জার্মানীর থেকে আমরা যদি বেশী ব্যবধানে জিততে পারি তবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই আমরা নক আউট পর্বে উঠবো। আমি একথা বলছি না যে আমরা তাদের থেকে ভাল। কিন্তু নিজেদের ওপর আমার বিশ্বাস আছে। ইতোমধ্যেই আমরা প্রমান করেছি বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষেও আমরা খেলতে পারি।
রাশিয়ায় মেক্সিকোর হয়ে এ পর্যন্ত পিএসভি তারকা হারভিং লোহানো ও ওয়েস্ট হ্যামের জেভিয়ার হার্নান্দেজই আলো ছড়িয়েছেন। কিন্তু অধিনায়ক আন্দ্রেস গুয়ারডাডো মেক্সিকানদের মধ্যমাঠে এখনো মূল শক্তি।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত মেক্সিকো টানা তিনটি ম্যাচে জয়ী হতে পারেনি। এবার তা করে দেখাতে পারলে কনকাকাফের দল হিসেবে প্রথম এই কৃতিত্ব অর্জন করবে। ১৯৯০ সালের পরে প্রথম গ্রুপ পর্বের কোন ম্যাচে পরাজয়ের মুখ দেখেছে সুইডেন। জার্মানদের বিপক্ষে যে ব্যবধানে তারা হেরেছিল ঠিক একই ব্যবধানে কোস্টা রিকার বিপক্ষেও ৯০-র বিশ্বকাপে পরাজিত হয়েছিল।