গ্রাম আদালত দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও সহাবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে : পার্বত্য সচিব

155

ঢাকা,২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের ২য় পর্যায়ের কাজ শুরু করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ,ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং ইউএনডিপি’র সহযোগিতায় আজ বুধবার পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে পর্যটন কর্পোরেশনের কনফারেন্স রুমে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাউল। এসময় তিনি বলেন, ‘সরকার জনগণের দোরগোড়ায় সকল প্রকার সেবা পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। গ্রাম আদালত এমনই একটি সেবা যা দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও সহাবস্থান প্রতিষ্ঠা করে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে সক্ষম হবে।’
সচিব বলেন, এই প্রকল্প পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় প্রশাসনকে আঞ্চলিক ন্যায়বিচারের প্রয়োজনীয়তায় সাড়া প্রদানের ক্ষেত্রে শক্তিশালী করে তুলবে।
বাংলাদেশে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিংক ও ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের সুবিধা-বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যায় বিচারের সুযোগ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এ অঞ্চল থেকে গ্রাম আদালতের কাজ শুরু করা হচ্ছে।
প্রথম পর্যায়ের (২০০৬-২০১৫) সফল বাস্তবায়নের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ১হাজার ৮০টি ইউনিয়নে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউএনডিপি এবং বাংলাদেশ সরকারের ত্রি-পক্ষীয় অংশীদারিত্বে এ প্রল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা হয়েছিল ।
এর উদ্দেশ্য ছিল দেশের সাধারণ দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আইনিসেবা পাওয়ার সুযোগ বৃদ্ধি করা।
বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৪৫ লাখ ইউরোর বর্ধিত আর্থিক সহায়তায় প্রল্পটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্প্রসারিত হতে চলেছে। যাতে করে স্থানীয় প্রশাসন আঞ্চলিক ন্যায়বিচারের প্রয়োজনীয়তাকে আমলে নেয় এবং সুবিধা বঞ্চিত জনগণের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করে।
এর মাধ্যমে স্থানীয় সাধারণ মানুষ ,বিশেষত নারী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন সম্ভব হবে। বর্ধিত এই ৪৫ লাখ ইউরো আর্থিক সহায়তার ফলে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ২ প্রকল্পে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এ পর্যন্ত আর্থিক অংশীদারিত্বের পরিমাণ দাঁড়াল ২কোটি ৮৩ লাখ ইউরো ।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পার্বত্য চট্টগ্রামের সুবিধা বঞ্চিত প্রন্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্পমূল্যে ও দ্রুততম সময়ে ন্যায় বিচারের সুযোগ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গ্রাম আদালতের গুরুত্ব তুলে ধরেন্।
তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন সবসময়েই বাংলাদেশের সামাজিক ন্যায়বিচার’কে শক্তিশালী করে তুলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, যাতে করে সুবিধা বঞ্চিত মানুষ ,বিশেষত দরিদ্র মহিলারা যাতে ন্যায়বিচার পেতে পারে এবং তাদের বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পর্যায়ে আইনিসেবা পায় সেজন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাজ করছে।
সুদীপ্ত মুখার্জি বলেন, ‘কাউকে পিছনে না রেখে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সকলের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আর সে-কারে সবার জন্য ন্যায়বিচারের সুযোগ সৃষ্টি করা জরুরী।
গ্রাম আদালত বাংলাদেশের ১,০৮০টি ইউনিয়নে কাজ করছে। এখন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে দরিদ্র এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে ন্যায়বিচারের সুযোগ সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।