বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (১ম কিস্তি) : সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ

238

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (১ম কিস্তি)
প্রধানমন্ত্রী-সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা
সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
নিউইয়র্ক, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা (ইউএইচসি) নিশ্চিত করতে সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, এটা বৈশ্বিক ও প্রাথমিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সুফল বয়ে আনবে।
তিনি বলেন, ‘সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার সুফল বৈশ্বিক এবং এর জন্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’ তিনি স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ট্রাস্টিশীপ কাউন্সিলের প্ল্যানারি কাউন্সিলে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার মতো একটি সাধারণ লক্ষ্যের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সমন্বয় আমাদের উন্নয়নের মূল। তিনি বলেন, সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষে আমাদের একযোগে কাজ করে যেতে হবে।
উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আর্থসামাজিক অগ্রযাত্রায় সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অপরিহার্য।
তিনি বলেন, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়টি ক্রমান্বয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে। এটি এমনকি অর্থনৈতিক ভাবে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকেও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কোন ধরণের অর্থনৈতিক ক্লেশ ছাড়াই সহায়তা করছে।
নানা রকম প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও বাংলাদেশ সরকার সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিশ্চিতকরণে উদ্ভাবনী প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সরকার নিরাপত্তা, সবার জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবা, নিরাপদ স্বাস্থ্য সেবা ও সুলভ মূল্যে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ প্রপ্তিসহ স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।
তিনি বলেন, ‘ আমরা ২০৩০ সাল নাগাদ অসংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধ ও চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে অকালমৃত্যু তিন ভাগের এক ভাগ কমিয়ে আনা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়ন ও কল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় এলে স্থানীয় স্বাস্থ্য সেবায় ব্যাপক গুরুত্ব প্রদান করে। ‘তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবার গুরুতর অবস্থার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা ১৯৯৮ সালে ‘কমিউনিটি হেল্থ ক্লিনিক’ গড়ে তুলি।
তিনি বলেন, এসব ক্লিনিক সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মডেল, যেখানে সরকারের পক্ষ থেকে দক্ষ কর্মী, ওষুধ ও যন্ত্রপাতি দেয়া হয় এবং স্থানীয় লোকেরা এসব ক্লিনিকের জন্য জমি দেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে সরকারের ১৪ হাজার ৮৯০টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৭৪৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু হয়েছে, যেখানে আনুমানিক ৬ লাখ লোককে দৈনিক সেবা দেয়া হয়ে থাকে।’
শেখ হাসিনা বলেন, এসব ক্লিনিক জনসংখ্যার শতকরা ৮০ ভাগ লোককে সেবা দিতে পারে এবং লোকদের আবাসস্থল থেকে ৩০ মিনিটের হাঁটার দূরত্বে এগুলো অবস্থিত।
তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রতিটি ক্লিনিক থেকে গড়ে আনুমানিক ৪০ জন রোগী সেবা গ্রহণ করে এবং এদের মধ্যে ৯০ শতাংশ নারী ও শিশু।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কার্যকর স্বাস্থ্য পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ফলে মাতৃমৃত্যু হার ১৭২, শিশু মৃত্যুহার ২৪ এবং ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যু ৩১ এ কমে এসেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে পূর্ণ টিকা কভারেজ এখন ৮২ দশমিক ৩ শতাংশ, গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৮ বছরের অধিক এবং প্রতি নারীতে জন্মের হার ২ দশমিক ১ এ নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা যক্ষ্মা ও কুষ্ঠ রোগ নির্মূলে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ইতোমধ্যে দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনায় স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভিশন ২০২১ এবং ২০৪১ এ স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে। আমাদের ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী আমরা সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা আরো সম্প্রসারণ এবং এক বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ বছরের অধিক বয়সী ব্যক্তিদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা দেয়ার পরিকল্পনা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ সভার (ইউএনজিএ) ৭৪তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ৮ দিনের সরকারি সফরে রোববার বিকেলে এখানে পৌঁছান।
বাসস/এসএইচ/অনু-জেজেড-জেহক/মমআ/-আরজি/১০১০/এমএজেড