দক্ষিণ কোরিয়ার গতি নিয়ে চিন্তিত জার্মানী

344

ঢাকা, ২৬ জুন, ২০১৮ (বাসস) : বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কাল দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হচ্ছে জার্মানী। আগের দুই ম্যাচে এশিয়ান পরাশক্তি দক্ষিণ কোরিয়া একটিতেও জিততে না পারলেও নিজেদের গতিময় ফুটবল দিয়ে প্রতিপক্ষকে মোটেই ছেড়ে কথা বলেনি। আর সেই বিষয়টি নিয়েই জোয়াকিম লো’য়ের শিষ্যরা চিন্তিত। বিশেষ করে কোরিয়ার টটেনহ্যাম হটস্পারের তারকা উইঙ্গার সন হেয়াং-মিনের ফর্ম নিয়ে আলাদা করে ভাবতেই হচ্ছে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।
প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়ে পয়েন্ট হারানো জার্মানী দ্বিতীয় ম্যাচে সুইডেনের বিপক্ষে দারুনভাবে ঘুড়ে দাঁড়ায়। প্রথমার্ধে এক গোলে পিছিয়ে থেকেও টনি ক্রুসের শেষ মুহূর্তের ফ্রি-কিকে ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জার্মানরা। নাহলে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কায় পড়তো লো বাহিনী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ক্রুস জার্মানদের পূর্ণ তিন পয়েন্ট উপহার দিয়েছেন।
কাজানে অনুষ্ঠিত এফ-গ্রুপের শেষ ম্যাচটি দুই দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম দুই ম্যাচে পরাজিত হওয়া সত্বেও জার্মানীকে দুইয়ের অধিক গোলের ব্যবধানে হারাতে পারলে দক্ষিণ কোরিয়ার সামনেও পরের রাউন্ডে যাবার সুযোগ থাকবে। তবে সেক্ষেত্রে অপর ম্যাচে সুইডিশদের হারাতে হবে মেক্সিকোকে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে পরাজয় নিয়ে অবশ্য কোনভাবেই ভাবছে না জার্মানরা। তবে জার্মান দুই ফরোয়ার্ড মার্কো রেয়াস ও টিমো ওয়ার্নার ভালভাবেই বুঝতে পারছেন এশিয়ান প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে ম্যাচটা যে মোটেই সহজ হবেনা। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে রেয়াস বলেছেন, ‘তাদের খেলায় অনেক গতি আছে, বিশেষ করে আক্রমনভাগে। কোরিয়ান দলে এত বৈচিত্রময় খেলোয়াড় আছে যারা যেকোন সময় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।’
ওয়ার্নার বলেছেন, ‘তাদের দলে অনেক দ্রুতগতির খেলোয়াগ আছে। সুইডিশ খেলোয়াড়রা দীর্ঘদেহী ও বেশ শক্তিশালী। অন্যদিকে কোরিয়ানরা লম্বায় খাটো হলেও তাদের গতির সাথে সবসময় পেরে উঠা মুশকিল। তাদের দলে বিশ্বের অন্যতম সেরা উইঙ্গার সন রয়েছে। তার দিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।’
আগের ম্যাচে মাত্র ১১ মিনিটের মাথায় দুটি হলুদ কার্ড পেয়ে মাঠ ত্যাগ করা জেরম বোয়াটেংকে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে পাচ্ছেনা লো। এর অর্থ হচ্ছে অন্তত একটি পরিবর্তন তো মূল একাদশে আসছেই। গলার ইনজুরি কাটিয়ে বায়ান মিউনিখের ডিফেন্ডার ম্যাটস হামেলসের মূল দলে ফেরার সম্ভাবনাই বেশী। ক্লাব সতীর্থ নিকলাস সুলের সাথে রক্ষনভাগে তাকে দেখা যেতে পারে। আর সে কারনে দল থেকে বাদ পড়তে পারেন এন্টোনিও রুডিগার।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য দু:শ্চিন্তা বয়ে এসেছে মিডফিল্ডার কি সুং-ইউয়েংয়ের বাম পায়ের কাফ ইনজুরি। এই ইনজুরির কারনে আগামী দুই সপ্তাহ তাকে মাঠের বাইরে কাটাতে হবে বলে কোরিয়ান ফুটবল এসোসিয়েশন নিশ্চিত করেছে।
কালকের ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জার্মানী যদি হেরেই যায় তবে তৃতীয় চ্যাম্পিয়ন হিসেবে গ্রুপ পর্ব থেকে তাদের বিদায় ঘটবে। আর এজন্য কোরিয়াকে নিজেদের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে। গোল করার ক্ষেত্রে তাদের মূল ভরসা সনের উপর পুরো দল তাকিয়ে আছে। অন্যদিকে দলের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের ফর্মহীনতা এখন পর্যন্ত জার্মানদের পিছিয়ে পড়ার মূল কারন। একমাত্র রেয়াসই এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। আগের দুই ম্যাচেই নিজেদের যোগ্যতার প্রমান রেখেছেন এই তারকা ফরোয়ার্ড।
এশিয়ান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এর আগে বিশ্বকাপের পাঁচটি ম্যাচেই জয়ী হয়েছে জার্মানী। এই ম্যাচগুলোতে তারা সব মিলিয়ে দিয়েছে ১৯ গোল। সুইডেনের বিপক্ষে প্রথম গোল হজম করে পরে দুই গোল দিয়ে জয় নিশ্চিত করেছিল জার্মানী। এর আগে ১৯৯৮ সালে একবার মেক্সিকোর বিপক্ষে পিছিয়ে গিয়ে জয়ী হয়েছিল ইউরোপীয়ান পরাশক্তিরা।