বাসস ইউনিসেফ ফিচার-৩ : দেশে জনপ্রিয় জরুরি সেবার নাম ‘৯৯৯’

145

বাসস ইউনিসেফ ফিচার-৩
সমস্যা-৯৯৯
দেশে জনপ্রিয় জরুরি সেবার নাম ‘৯৯৯’
ঢাকা, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : প্রায় প্রতিদিন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন মিরপুর-২ এলাকার বাসিন্দা নাজমা বেগম (ছদ্মনাম)। স্বামী আনোয়ার খান রাতে বাসায় ফেরার কিছুক্ষণ পর থেকেই মারধর শুরু করেন। এভাবেই চলছিল। হঠাৎ এক দিন নাজমাকে মারধরের মাঝখানে দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। আনোয়ার দরজা খুলেই দেখেন পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। নারী নির্যাতনের জন্য গ্রেফতার করা হয় আনোয়ারকে।
কিন্তু পুলিশেকে খবর দিল তা কেউই বুঝতে পারছিল না। এমনকি নাজমাও অবাক। পরে জানা যায়, প্রতিবেশী কলেজ পড়–য়া এক মেয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে নাজমার নির্যাতনের কথা জানালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেন আনোয়ারকে। তবে মেয়েটির অনুরোধে কারো কাছেই তার নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বয়ারমারি পর এলাকার এক মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরী মাঠে গিয়েছিল ধান কাটতে। সেখানেই আমজাদ আলী নামে এক নরপশু ঘাস কেটে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে কিশোরীকে। সেখান থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় কিশোরীকে উদ্ধার করে তারই এক প্রতিবেশী। সাথে সাথে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশকে খুলে বলে সব ঘটনা। ফোন পাওয়ার মাত্র এক ঘন্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযুক্ত আমজাদ আলীকে। পরে ওই দিন রাতেই থানায় ধর্ষণ মামলা করে কিশোরীর ভাই।
গোদাগাড়ী থানা পুলিশ জানায়, ওই কিশোরী সেদিন মাঠে ঘাস কাটার জন্য যায়। পরে ঘাস কেটে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সেখানে তাকে ধর্ষণ করে আমজাদ আলী। এ সময় কিশোরী চিৎকার করলে আশপাশের স্থানীয়রা এগিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকেই আমাদের একজন ফোন করলে আমাদের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং অভিযুক্ত আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।
গোদাগাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলতাফ হোসেন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলে। কিন্তু মীমাংসা করতে রাজি হয়নি কিশোরীর পরিবার। পরে বিষয়টি জানান নির্যাতিত কিশোরীর এক স্বজন। এরপর পুলিশ সদর দপ্তরের আইসিটি ডেস্ক থেকে বিষয়টি গোদাগাড়ী থানায় অবহিত করা হয়। খবর পেয়েই ওই কিশোরীর বাড়িতে যায় পুলিশ। তারা কিশোরীর সঙ্গে কথা বলে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে আমজাদ আলীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রাতেই থানায় মামলা করেন ওই কিশোরীর ভাই।
২০১৫ সালের অক্টোবরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ প্রথম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর কাঠামো তৈরির কাজ শুরু করে। ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে জনগণকে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য জরুরি সেবা প্রদানে ২০১৬ সালের ১ অক্টোবর থেকে গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত এই সার্ভিসটির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এরপর ১২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় সেবাটি। মুঠোফোনে ব্যালেন্স না থাকলেও ৯৯৯-এ ডায়াল করে পুলিশ সদর দফতরের আইসিটি ডেস্কে কথা বলে নিজের সমস্যার কথা জানাতে পারেন যে কেউ।
বাসস ইউনিসেফ ফিচার/শসু/স্বব/আহো/০৯১০/-এসএইচ